Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

উন্নয়নে ধস নেমেছে পাহাড়ে

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ৫৩৮টি জায়গায় কাজ করার প্রস্তাব ছিল। তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত বছরে ১ লক্ষ ৯ হাজার পরিবার এই প্রকল্পে কাজ পেয়েছিল। এ বার জিটিএ-র মাধ্যমে ৩১১টি গ্রামে পাকা রাস্তা তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। রাস্তা নির্মাণের কাজে সব মিলিয়ে ৬২১ কোটি টাকা ঢালত কেন্দ্র।

বিক্ষোভে উত্তাল পাহাড়। থমকে জনজীবন। ছবি:পিটিআই।

বিক্ষোভে উত্তাল পাহাড়। থমকে জনজীবন। ছবি:পিটিআই।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০৩:২২
Share: Save:

শনিবার ধস নেমেছে রোহিনীর রাস্তায়। বর্ষায় পাহাড়ের যেখানে-সেখানে নামতে পারে এমন আচমকা ধস। অন্যান্য বার বর্ষা নামার আগে তাই পাহাড় বাঁধার কাজ হয়। এ বার কিছুই হয়নি। বন্‌ধে পাহাড় অচল। বন্ধ সমস্ত কাজকর্ম। ফলে পাহাড়ে শুধু মেঘ নয়, সিঁদুরে মেঘ দেখছে প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ।

অথচ কারও কিছু করার নেই। টানা একত্রিশ দিন বন্‌ধের জেরে পাহাড়ে থমকে যাবতীয় উন্নয়ন। ১০০ দিনের কাজ, রাস্তা তৈরি, বার্ধক্য ভাতা, ধস রোখা কাজ— স্তব্ধ সবই। মোর্চার আগুনে-আন্দোলনে ৯ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তি পুড়ে খাক। জিটিএ-র তহবিলে পড়ে রয়েছে অন্তত ১০০ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের পাঠানো টাকাও হাতে নিয়ে বসে অচল প্রশাসন। জিটিএ-র সব অফিসও বন্ধ।

আরও পড়ুন: আক্রমণের নিশানায় পুলিশ, তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীতে স্বাগত মোর্চার

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ৫৩৮টি জায়গায় কাজ করার প্রস্তাব ছিল। তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। গত বছরে ১ লক্ষ ৯ হাজার পরিবার এই প্রকল্পে কাজ পেয়েছিল। এ বার জিটিএ-র মাধ্যমে ৩১১টি গ্রামে পাকা রাস্তা তৈরির কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। রাস্তা নির্মাণের কাজে সব মিলিয়ে ৬২১ কোটি টাকা ঢালত কেন্দ্র। পাহাড়ে ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, পরিবার সহায়তা ভাতা পান। অনেকেরই শেষ সম্বল এই ভাতাটুকু। অথচ তা বিলি করা যায়নি। এক কর্তার কথায়, ‘‘প্রতি মাসে এক ঝাঁক বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আসতেন ভাতার তাগিদে। জানি না কী ভাবে চলছে।’’ বন্ধ জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পূর্ত, বন, বিদ্যুৎ, পুর দফতরের কাজও।

দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্তের আক্ষেপ, ‘‘বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস, বিডিও অফিসেও আগুন দেওয়া হয়েছে। পুড়ে গিয়েছে উপভোক্তাদের যাবতীয় তথ্য। এখন তাঁরা কী ভাবে সরকারি সাহায্য পাবেন?’’ জিটিএ-র এক কর্তা জানান, পাহাড় বাঁধা না হওয়ায় এ বার ধস সামাল দেওয়াও কঠিন হবে।

সরকারি সূত্রের খবর, বিশেষ অডিট টিম এখনও পাহাড়ে রয়েছে। জিটিএ এলাকায় অন্তত ১০-১২টি প্রকল্পে গরমিল ধরা পড়েছে। কিন্তু বিশদে চুরি ধরতে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে পরিদর্শনের প্রয়োজন রয়েছে। বন্‌ধের জেরে সে সব হচ্ছে না। তবে একই ঠিকাদারকে কাজ দেওয়া, ই-টেন্ডারে কারচুপি, বাড়তি দামে বরাতের মতো অভিযোগ স্পষ্ট।

পাহাড়ের প্রায় ২০ হাজার কর্মচারীর বেতন এখন বন্ধ। শিলিগুড়ি থেকে রসদও সে ভাবে পৌঁছচ্ছে না। ফলে ক্রমেই তীব্র হচ্ছে খাদ্য-সঙ্কট। কর্তারা জানাচ্ছেন, মোর্চা শান্তির পথে এসে বন্‌ধ তুললে তবেই পরিস্থিতি পাল্টাবে। না হলে মোর্চা নেতাদের সঙ্গে পাহাড়বাসীকেও যেতে হবে অনশনের পথে।

অন্য বিষয়গুলি:

GJM Gorkha Janmukti Morcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE