ফাইল চিত্র।
সরকার ঘোষিত প্যাকেজ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে এলাকার মানুষের হাতে। কাজ মসৃণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে খোলা হয়েছে অফিস বা ‘ম্যানেজমেন্ট উইং’। শুরু হয়েছে এলাকায় বসবাসকারী মানুষের জমির রেকর্ড সংশোধনের জন্য শিবিরও। মহম্মদবাজারে প্রস্তাবিত কয়লা খনি গড়ার জন্য কার্যত আটঘাট বেঁধে নামছে প্রশাসন। আরও পরিকল্পনা রয়েছে।
তবে এর মধ্যেই কোথাও তাল কাটল বৃহস্পতিবার। এ দিন আদিবাসী সমাজের মোড়লদের ডাকে প্রস্তাবিত ডেউচা-পাঁচামি খনি এলাকার মধ্যে থাকা হরিণশিঙা মাঠে সরকার ঘোষিত ত্রাণ ও পুর্নবাসন প্যাকেজ নিয়ে প্রথম আলোচনা সভা ছিল। সেখানে দাবি ওঠে, তাঁরা কয়লা শিল্পাঞ্চল চান না। প্রশাসন অবশ্য ‘ধীরে চলো’ নীতি নিয়েছে। ধৈর্য ধরে আলোচনাতেই জোর দিচ্ছেন বীরভূম জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এ দিন প্রকাশ্যে কেউ মুখ না-খুললেও একান্তে তাঁদের ব্যাখ্যা, অত্যন্ত ভাল পুনর্বাসন প্যাকেজ সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত হয়েছে। সেটা নিয়ে কারও প্রশ্ন থাকতেই পারে। কিন্তু পুরোটাই আলোচনা সাপেক্ষ। আর প্রশাসন পর্যন্ত তো বিষয়টি আসেইনি। যা হয়েছে, স্থানীয় স্তরে হয়েছে।
তবে হুট করে খনিতে ‘না’ বলার পিছনে কোনও সমীকরণ কাজ করছে কি না, কোনও পক্ষের ইন্ধন আছে কি না, তা-ও ভিতরে ভিতরে খোঁজ নিচ্ছে প্রশাসন। কারণ, খনি গড়ায় সায় নেই বললেও এ দিন জমি সংক্রান্ত রেকর্ড ঠিক করার জন্য প্রশাসনের বিশেষ শিবিরে রীতিমতো লাইন পড়েছিল স্থানীয়দের। শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও মনে করছেন এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্য বাইরে থেকে ইন্ধন রয়েছে। জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘খনির প্যাকেজ ঘোষণার আগে থেকে আদিবাসী সমাজের মাথাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয়েছে। আজ বিচ্ছিন্ন ভাবে কেউ কিছু বলেছেন কি না জানি না। বলে থাকলে আলোচনার পথেই সেটা সমাধান হবে।’’ সদ্য শাসক দলে যোগ দেওয়া বীরভূম আদিবাসী গাঁওতা নেতা সুনীল সরেনও মনে করছেন, ‘‘এখনই না বলাটা একেবারেই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত। প্যাকেজ নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে এলাকার মানুষের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন আছে।’’
প্রসঙ্গত মহম্মদবাজারের পাঁচটি পঞ্চায়েতের ১০টি মৌজায় ১৬টি গ্রামের মাটির নীচেই রয়েছে কয়লার ভাণ্ডার। খনি গড়ার কাজ শুরু হওয়ার কথা হিংলো পঞ্চায়েতের দেওয়ানগঞ্জ, হরিণশিঙা, নিশ্চিন্তপুর মৌজার গ্রামগুলিতে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানাচ্ছেন, প্রস্তাবিত খনি এলাকায় জমির পরিমাণ ৩৪০০ একর। সরকারি ভাবে বলা হয়েছে সরকারি জমি থেকেই কাজ শুরু হবে। সরকারি খাস জমির পরিমাণ ৫৯৬ একর, বিভিন্ন দফতরের হাতে থাকা জমি ৭২.৯২ একর, বনভূমি ৩০৯ একর। তার বাইরেও জমি নিতে হবে বলেই প্যাকেজ। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকার সব স্তরের মতামত সামনে আসা প্রয়োজন। অনেক আলোচনা বাকি। এলাকায় গিয়ে বোঝাতে হবে সকলকে যে, এই খনি প্রকল্প হলে গোটা অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক চেহারাই বদলে যাবে। ফলে কোথাও একটা আপত্তি উঠল মানেই সব শেষ নয়!’’ (শেষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy