দলের নাম-প্রতীক ছাড়া অভিনব প্রচার শুরু করলেন ডেরেক ওব্রায়েন। -ফাইল চিত্র
‘সাফল্য’ প্রচারে আরও একটা নতুন প্রচারাভিযান শুরু করল তৃণমূল। ৯ বছরে কী কী করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার, রাজ্যের ‘উন্নতি’র লেখচিত্র কী রকম, ধাপে ধাপে তার হিসেব নিয়ে সামনে আসা শুরু করলেন দলের অন্যতম মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার তৃণমূল দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। ‘সোজা বাংলায় বলছি’ নামের এই ডিজিটাল প্রচার আগামী কয়েক মাস টানা চলবে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। প্রতি সপ্তাহে সামনে আসবে তিন কিস্তি ভিডিয়ো।
রবিবার অর্থাৎ ২৬ জুলাই থেকেই সূচনা হল ‘সোজা বাংলায় বলছি’র। ১ মিনিটের ভিডিয়োয় ডেরেক ও’ব্রায়েন পরিসংখ্যান তুলে ধরে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রশ্নে অন্যান্য রাজ্যের থেকে পশ্চিমবঙ্গ কতটা এগিয়ে। ‘‘অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার কম। আমি বলছি না, সিএমআইই অর্থাৎ সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি-র রিপোর্ট বলছে।’’ এই বলে শুরু করছেন ডেরেক। তার পরে জানাচ্ছেন, জুন মাসে বেকারত্বের জাতীয় গড় ছিল ১১ শতাংশ। হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, কর্নাটক এবং মধ্যপ্রদেশের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বেকারত্বের হারও একে একে তুলে ধরছেন তিনি। শেষে জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গে বেকারত্বের হার জুন মাসে ছিল ৬.৫ শতাংশ, যা এই ভিডিয়োয় উল্লিখিত অন্য রাজ্যগুলির বেকারত্বের হারের তুলনায় কম।
তৃণমূলের মুখপাত্র ভিডিয়ো ছেড়েছেন ঠিকই, কিন্তু ভিডিয়োয় কোথাও তৃণমূলের প্রতীক নেই, নামও উল্লেখ করা হয়নি। উচ্চারণ করা হয়নি বিজেপির নামও। যে রাজ্যগুলির সঙ্গে বাংলার বেকারত্বের হারের তুলনা টানা হয়েছে, সেই রাজ্যগুলি বিজেপি শাসিত। কিন্তু সে প্রসঙ্গ আলগোছে এড়িয়ে গিয়েছেন রাজ্যসভার তৃণমূল দলনেতা। ভিডিয়োর শেষে শুধু মুচকি হাসি নিয়ে বলেছেন, ‘‘সোজা বাংলায় বলছি, একটু ভেবে দেখুন। সাবধানে থাকুন, ভাল থাকুন।’’
আজ থেকে শুরু হচ্ছে একটি নতুন সিরিজ #সোজাবাংলায়বলছি
— Derek O'Brien | ডেরেক ও'ব্রায়েন (@derekobrienmp) July 26, 2020
প্রতি রবিবার, বুধবার ও শুক্রবার
পর্ব ১: #কোভিড-১৯ এর সময় বেকারত্বের হার
দেখুন
Starting today a #New series #ShojaBanglayBolchi
Every Sunday, Wednesday & Friday
Episode 1: Unemployment rates during #COVID19
Watch pic.twitter.com/RkOKWcRxoX
আরও পড়ুন: ‘বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তান’, নাম করেই মন কি বাত-এ আক্রমণ মোদীর
রাজনৈতিক প্রচারে এই রকম অরাজনৈতিক মোড়ক কেন? তৃণমূল সূত্রের খবর, রাজ্যের অরাজনৈতিক বা সাধারণ ভোটদাতাদের কাছে টানাই এখন নতুন লক্ষ্য তৃণমূলের। মাসখানেক আগে ‘বাংলার যুবশক্তি’ নামে যে নতুন কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতেও অরাজনৈতিক এবং স্বচ্ছ ভাবমূর্তির তরুণ-তরুণীদের কাছে টানার উপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। নতুন প্রজন্মের যাঁরা কোনও দলের সঙ্গেই যুক্ত নন, অথচ সামাজিক কাজ করতে আগ্রহী, তাঁদেরকেই বেশি করে ‘বাংলার যুবশক্তি’ নেটওয়ার্কে সামিল করার চেষ্টা হবে বলে জানিয়েছিলেন অভিষেক নিজেই। ডেরেকের নতুন ডিজিটাল প্রচারাভিযানও অনেকটা সেই ধাঁচেই। যে ভোটদাতাদের কোনও নির্দিষ্ট দলের প্রতি ঝোঁক নেই, নির্বাচনী ইস্যুর ভিত্তিতে যাঁরা ভোটের সময়ে স্থির করেন, কোন দিকে ভোট দেবেন, তাঁদের কথা ভেবেই এই ‘সোজা বাংলায় বলছি’র উদ্যোগ বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের ‘লুটেরা’রাই ভর্তুকিকে লাভ বলছে, রাহুলকে পাল্টা তোপ রেলমন্ত্রীর
লকডাউনের মধ্যেই এই ছোট ছোট ভিডিয়োগুলো শ্যুট করা হয়েছে। দিল্লির ৬১ সাউথ অ্যাভিনিউতে তৃণমূলের যে কার্যালয়, সেখানেই এই ভিডিয়োগুলোর শ্যুটিং হয়েছে বলে খবর। এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে বুধবার, শুক্রবার ও রবিবার সকাল ১১টায় এই সিরিজের একটা করে ভিডিয়ো ডেরেক ও’ব্রায়েন প্রকাশ করতে থাকবেন।
দলের প্রতীক এবং নাম সরিয়ে রেখে হঠাৎ অরাজনৈতিক মোড়কে প্রচার কেন? ফের মুচকি হেসেই জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন ডেরেক। শুধু বলেছেন, ‘‘এই ভিডিয়োগুলো বানিয়ে আমার খুব ভাল লাগছে, কারণ বাংলায় বানাতে পেরেছি।’’ রাজনীতিতে আসার আগে বার তিনেক ইন্ডিয়ান টেলিভিশন অ্যাকাডেমির ‘গেম শো হোস্ট অব দ্য ইয়ার’খেতাব জেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন ইংরেজিতে কোনও অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় যে যথেষ্টই দড়। তবে বাংলায় সে রকম কাজ তিনি খুব একটা করেননি। ডেরেকের কথায়, ‘‘বাংলায় বানাতে হয়েছে বলে অনেক বেশি পরিশ্রম হয়েছে। তিন গুণ খেটেছি। কিন্তু বাংলায় বানাতে পেরেছি বলে একটু বেশি ভাল লাগছে।’’ আগামী বুধবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজের খতিয়ান তুলে ধরা হবে ‘সোজা বাংলায় বলছি’তে। তার পরের কিস্তিতে আসবে আমপান প্রসঙ্গ। খবর তৃণমূল সূত্রের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy