অনেক স্কুলেই জন্মেছে এইরকম আগাছা। ফাইল চিত্র।
প্রায় দু’বছর পরে স্কুল খোলার আলো দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সব স্কুলভবন, শ্রেণিকক্ষ, শৌচালয়, স্কুলের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, মিড-ডে মিলের রান্নাঘর ইত্যাদি ঠিকঠাক আছে তো?
এই প্রশ্ন এতই বড় হয়ে উঠছে যে, স্কুলের পরিকাঠামো সম্পর্কে জানতে চাইল স্কুলশিক্ষা দফতর। সম্প্রতি ওই দফতরের কমিশনার একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, স্কুল খোলার আগে প্রতিষ্ঠানের পরিকাঠামোর খুঁটিনাটি জানাতে হবে। সেই সঙ্গে কতটা কী মেরামতি দরকার, তার আনুমানিক খরচ কত হতে পারে, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে। ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্কুলগুলিকে তাদের পরিকাঠামো সংক্রান্ত সবিস্তার তথ্য, মেরামতির প্রয়োজন হলে তার আনুমানিক খরচ জেলা স্কুল পরিদর্শককে জানাতে হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে স্কুলশিক্ষা দফতর।
রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অধিকাংশ স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। একই সঙ্গে তাঁদের একাংশের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুজোর পরে স্কুল খোলার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করার কথা বলেছেন। তবে করোনা পরিস্থিতি এখন অনেক ভাল। তাই পুজোর পরে নয়, বরং এক সপ্তাহের মধ্যে স্কুল খুলে পরীক্ষামূলক ভাবে কয়েকটি শ্রেণি চালু করা হোক। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, “দিল্লি, কর্নাটক-সহ অনেক রাজ্যেই তো স্কুল খুলে গিয়েছে। সব শ্রেণি না-হলেও কয়েকটা শ্রেণির ক্লাস হচ্ছে। আমাদের রাজ্যেও দ্রুত পর্যায়ক্রমে স্কুলগুলি খুলে দেওয়া দরকার। অধিকাংশ অভিভাবকই জানাচ্ছেন, পুজোর আগে অন্তত কয়েকটা দিনের জন্য পরীক্ষামূলক ভাবে স্কুল চালু করা গেলে ভাল হয়।”
তবে স্কুল খুললে ছেলেমেয়েদের ক্লাসে পাঠানোর ব্যাপারেও দ্বিধায় আছেন অনেক অভিভাবক। কয়েকটি স্কুলের অভিভাবকেরা জানাচ্ছেন, স্কুল খুললে তাঁদের নিজের দায়িত্বে ছেলেমেয়েদের ক্লাসে পাঠানোর কথা বলছেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। অভিভাবকদের প্রশ্ন, স্কুল-কর্তৃপক্ষ যদি কোনও দায়িত্ব না-নেন, কোন ভরসায় তাঁরা ছেলেমেয়েদের ক্লাসে পাঠাবেন?
স্কুল খোলার দাবিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি দিয়েছে বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা বলেন, “দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় প্রাথমিক স্তরের অনেক পড়ুয়া মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে পড়েছে। রোজ মিড-ডে মিল না-পেয়ে অনেক গরিব বাচ্চার পুষ্টিও ঠিকমতো হচ্ছে না।” পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, “বাবার স্মার্টফোন নিয়ে যে-সব পড়ুয়া অনলাইন ক্লাস করত, তারা অনেকে এখন আর সেই ক্লাস করতে পারছে না। কারণ, তাদের বাবাদের অফিস খুলে গিয়েছে। ফলে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতির হারও ক্রমশ কমে আসছে।”
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ মনে করছেন, পুজোর আগেই স্কুল খোলার প্রয়োজন আছে। হাওড়ার দুইল্যা পাঁচপাড়া স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত জানান, স্কুল দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষকও মানসিক অবসাদের শিকার হচ্ছেন। “সবাই তো অনলাইন ক্লাস করে না। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেক ছাত্রছাত্রীর নাম ভুলে গিয়েছেন। প্রায় দু’বছরে অনেক খুদে পড়ুয়ার চেহারাও তো পাল্টে গিয়েছে,” বলেন ওই শিক্ষিকা। তিনি জানাচ্ছেন, অনলাইন ক্লাস নিয়মিত না-হওয়ায় অনেক শিক্ষকও স্কুলের পাঠ্যক্রম প্রায় ভুলতে বসেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy