Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Dilip Ghosh

দিলীপ দুর্গে ভাঙন

ভাঙনের সূত্রপাত খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে একটি প্রস্তাবিত প্রকল্পে শ্রমিক নিয়োগে উত্তেজনা ঘিরে। ওই ঘটনায় সংঘর্ষে জড়ায় ভারতীয় জনতা মজদুর ট্রেড ইউনিয়ন কমিটি বা বিজেএমটিইউসি ও আইএনটিটিইউসি।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:৫৮
Share: Save:

বিপদে পাশে থাকেননি দলের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। দলের কাজ করতে গিয়েছে মিলেছে অসম্মান। রাজ্য সভাপতিকে জানিয়েও সুরাহা হয়নি। এমনই অভিযোগ তুলে বিজেপি ছাড়লেন বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা। যোগ দিলেন তৃণমূলে। বুধবার রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাসতালুকে ভাঙন ধরাল শাসক দল। বিধায়ক প্রদীপ সরকারের হাত ধরে এ দিন যাঁরা তৃণমূল ভবনে গিয়ে দলে যোগ দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন— ভারতীয় জনতা মজদুর ট্রেড ইউনিয়ন কমিটির জেলা সভাপতি শৈলেন্দর সিংহ, বিজেপি সংখ্যালঘু মোর্চার জেলা সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ গুহ, বিজেপির খড়্গপুর শহরের উত্তর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক তথা পর্যবেক্ষক সজল রায়, বিজেপির শহর দক্ষিণ মণ্ডলের যুব মোর্চার সভাপতি মদন মুরলিয়ার। এ ছাড়াও আরও কয়েকজন মেজো, ছোট নেতারা রয়েছেন। সঙ্গে নেতাদের অনুগামীরা। দলত্যাগীদের দাবি, সংখ্যাটা ২৬।

দলত্যাগীদের মূল ক্ষোভ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ও জেলা সভাপতি শমিত দাসের বিরুদ্ধে। রাজদীপ বলেন, “বিজেপির যা আদর্শ তা এখানের কোনও নেতা মানেনা। এখানে স্বজনপোষণ, বিশৃঙ্খলা চলছে। কাজের কোনও সুযোগ নেই। দিলীপদাকে বলেও সুরাহা পাইনি। দমবন্ধ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতেই বিজেপি ছাড়ছি।” একই অভিযোগ তুলেছেন শহরে বিজেপির পুরনো নেতা সজল রায়ও। ভাঙনের সূত্রপাত খড়্গপুরের বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে একটি প্রস্তাবিত প্রকল্পে শ্রমিক নিয়োগে উত্তেজনা ঘিরে। ওই ঘটনায় সংঘর্ষে জড়ায় ভারতীয় জনতা মজদুর ট্রেড ইউনিয়ন কমিটি বা বিজেএমটিইউসি ও আইএনটিটিইউসি। অভিযোগ, এরপর জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব বিজেএমটিইউসি নেতৃত্বের পাশে দাঁড়ননি। বিজেএমটিইউসি-র জেলা সভাপতি তথা দলত্যাগী শৈলেন্দর বলেন, “ওই সংঘর্ষে আমাদের ১২ জন জখম ও ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। কিন্তু শমিতদা থেকে দিলীপদাকে জানালেও ওঁরা পাশে দাঁড়াননি। এই অসম্মান নিয়ে কী সংগঠন করা যায়?’’

অভিযোগ তো গুরুতর? দিলীপের জবাব, “কেউ কোথাও গিয়ে গোলমাল করে, টাকা তোলে তার দায় তো দল নেবে না। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ হাঁটলে দল তাঁর পাশে দাঁড়াবে না।’’ প্রতিক্রিয়া জানতে দিলীপ-ঘনিষ্ঠ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাসকে ফোন করা হলেও তা বেজে গিয়েছে। জবাব মেলেনি এসএমএসেরও।

জেলার মধ্যে রেলশহর খড়্গপুরে বরাবর বিজেপির প্রভাব রয়েছে। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দিলীপের জয়ে গেরুয়া ঝড় শুরু হয়েছিল রেলশহরে। এর পরে ফের এই রেলশহরে ভর করেই মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়ে সাংসদ হন দিলীপ। শুধুমাত্র খড়্গপুর শহরে ৫০হাজার ভোটে ‘লিড’ পায় বিজেপি। কিন্তু মাস দশেক আগে বিধানসভা উপনির্বাচনে দেখা যায়, ৫০ হাজারের লিড অতিক্রম করে প্রায় ২১ হাজার লিড পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার। সেই প্রদীপকে এ দিনের দলবদলে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে। তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর প্রদীপ বলেন, “আসলে খড়্গপুরে দিলীপ ঘোষ তো একটিও কাজ করেননি। এমনকি বিজেপি নেতা-কর্মীরা বিপদে পড়লেও পাশে দাঁড়াচ্ছে না। তাই হতাশা থেকেই বিজেপি নেতারা দলত্যাগ করেছেন।”

দলে যে ভাঙন ধরছে না অবশ্য এখনও মানতে নারাজ দিলীপ। তিনি বলছেন, ‘‘কোনও নেতা তৃণমূলে যায়নি, যাবেও না। কিছু লোক আছে যারা দলে এসেছিল তাদের মিথ্যা মামলা, ভয় দেখিয়ে, প্রলোভন দিয়ে তৃণমূল ও প্রশান্ত কিশোর ভাঙাচ্ছে। তাদের মধ্যে দু’একজন যদি যায় তাদের আমরা বোঝাব। আমরাও বুথে বুথে চারশো লোককে খড়্গপুরে দলে নিয়েছি।’’ সম্প্রতি জেলা পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। তবে তালিকায় ছিল না খড়্গপুর শহর সভাপতির নাম। বিজেপি প্রশ্ন তুলেছিল, তবে কি দ্বন্দ্ব এড়াতে ফাঁকা রাখা হয়েছিল নাম! দিন কয়েকের মধ্যেই এল প্রত্যাঘাত।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP Dilip Ghosh Kharagpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy