জলে শান্তি: সকাল সাতটা। মাইথন থেকে ছাড়া জল জমছে দুর্গাপুর ব্যারাজে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।
শিল্পশহরে স্বস্তি ফিরিয়ে মেরামত হয়ে গেল দুর্গাপুর ব্যারাজের বেঁকে যাওয়া ১ নম্বর লকগেট। রবিবার সকালে ইস্পাতের প্লেট জুড়ে ঝালাই করার কাজ শেষ হয় ওই লকগেটে। এর পরেই বাকি গেটগুলি বন্ধ করে দেওয়ায় জল জমতে শুরু করে ব্যারাজে। বিকেলে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যারাজ পরিদর্শন শেষে জানান, আজ, সোমবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। দ্রুত ব্যারাজের সম্পূর্ণ সংস্কার করা হবে বলেও তাঁর আশ্বাস।
শুক্রবার সকালে ব্যারাজের ১ নম্বর গেটটি বেঁকে যাওয়ায় হু হু করে জল বেরোতে থাকে। রাত পর্যন্ত কখনও ক্রেন এনে, কখনও বালির বস্তা ফেলে জল বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যান সেচ দফতরের কর্মীরা। শেষে সারা রাত আরও কয়েকটি গেট খুলে ব্যারাজের সব জল বের করে দিয়ে শনিবার সকাল থেকে নতুন করে মেরামতির কাজ শুরু হয়। দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্ট থেকে আধ ইঞ্চি পুরু ইস্পাতের প্লেট এনে ৩৫ জন কর্মী গেটের সঙ্গে সেগুলি ঝালাই দিয়ে জোড়ার কাজ শুরু করেন। প্রাথমিক ভাবে সেচ দফতর সূত্রে জানানো হয়েছিল, শনিবার সন্ধ্যায় কাজ শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু, তা হয়নি। কাজ শেষ হতে হতে রবিবার সকাল ৬টা হয়ে যায়। কর্মীরা জানিয়েছেন, রাতে মাঝে কিছুক্ষণ বিদ্যুতের লো ভোল্টেজে সমস্যা দেখা দেয়। মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা রাতে ফের ব্যারাজে যান। তাঁর হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে।
তদারকি: সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
গেট সারাইয়ের কাজ শেষ হতেই ব্যারাজের সব লকগেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্যারাজে জল জমতে শুরু করে। বিকেল পর্যন্ত ব্যারাজের সামনের অংশ জলে ভরে গিয়েছে। তবে, ফিডার ক্যানালে জল না ঢুকলে দুর্গাপুর শহরে পানীয় জলের সমস্যা মিটবে না। যদিও এ দিন সন্ধ্যায় মন্ত্রী দাবি করেন, ইতিমধ্যেই ফিডার ক্যানাল থেকে ডিএসপি, ডিপিএল জল পেতে শুরু করেছে। ডিএসপি-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক চিন্ময় সমাজদার অবশ্য বলেন, ‘‘সোমবারের আগে জল পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সব ঠিকঠাক চললে মঙ্গলবার সকাল থেকে টাউনশিপে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি। আপাতত ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহের ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে।’’ একই কথা জানানো হয়েছে দুর্গাপুর পুরসভার তরফেও। দুর্গাপুরে এ দিনও পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট ছিল। ২০ লিটারের জলের জার বিকিয়েছে ৮০-১০০ টাকায়। বাধ্য হয়ে লোকে তাই কিনেছেন। পুরসভার ট্যাঙ্কারের সামনে ছিল লম্বা লাইন।
সেচমন্ত্রী এ দিন ব্যারাজ পরিদর্শনের পরে সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে তিনি বলেন, ‘‘জলাধার থেকে ছাড়া জল আসতে শুরু করেছে। জলস্তর বেড়ে যাবে। আশা করা যায়, সোমবার সকালে ফ্লোটিং গেটটি লাগিয়ে ফেলা হবে। তার পরে সময় মতো ক্ষতিগ্রস্ত গেট সারিয়ে তোলা হবে।’’ তিনি আরও জানান, কী ভাবে গেটটি বেঁকে গেল, তা তদন্ত করে দেখতে দফতরের সচিব ও চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে দিয়ে দু’জনের কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে তাঁরা রিপোর্ট দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy