নারী ও শিশুকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী
লোকসভা ভোটের প্রচারের সময়ে বিজেপির তরফে বারবার অভিযোগ করা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ নারী ও শিশু পাচারে শীর্ষে রয়েছে। এ বারে রাজ্য থেকে যে দু’জনকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নেওয়া হল, তাঁদের মধ্যে দেবশ্রী চৌধুরীকে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব। রায়গঞ্জের সাংসদ সেই দায়িত্ব নিয়েই বলেন, “নারী পাচারে প্রথম স্থানে রয়েছে এই রাজ্য। সেই সঙ্গে শিশু পাচারও হয়। তাই নারী ও শিশু পাচার রোধে রাজ্যে কাজ করা হবে।” জলপাইগুড়ির শিশু পাচার কাণ্ডে এর মধ্যেই বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরী জেলে রয়েছেন। সেই প্রসঙ্গে দেবশ্রী বলেন, “জলপাইগুড়ির হোম কাণ্ড নিয়ে আমরা নতুন করে ভাবব। কারণ, জুহি এক জন উচ্চশিক্ষিত মহিলা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে তদারকি করতে গিয়ে তাঁর নাম জড়িয়ে যায়। এ ছাড়া তাঁর নামে অভিযোগ ছিল না। পুরো বিষয়টি নিয়ে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখব।”
এ বারের লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১৮টি আসন পেয়েছে বিজেপি। তার মধ্যে উত্তরবঙ্গ থেকে সাতটি। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় এবং রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। সে দিন দফতর বণ্টন হয়নি। শুক্রবার কেন্দ্রীয় সরকার সূত্রে জানানো হয়, দেবশ্রীকে নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
দেবশ্রীর দফতর প্রাপ্তির কথা জানার পরে অনেকেই বলছেন, “আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি জুড়ে যে চা-বলয় রয়েছে, সেখান থেকে প্রায়ই নারী ও শিশু পাচারের অভিযোগ আসে। মালদহ, রায়গঞ্জের মতো জেলাগুলি থেকেও বহুবার নারী পাচারের অভিযোগ উঠেছে।” তাই এখানে যে বিজেপি জোর দেবে, সেটা স্বাভাবিক— বলছেন তাঁরা। দেবশ্রী নিজেও বলেন, ‘‘নারী পাচারে রাজ্য প্রথম স্থানে রয়েছে। সেই পাচার আটকাতেই আমরা কাজ করব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে আক্রান্ত মহিলাদের সুরক্ষা দিতেই প্রধানমন্ত্রী আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব।’’
জুহি চৌধুরীর বিষয়ে দেবশ্রীর সঙ্গে সহমত জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি সম্পাদক বাপি গোস্বামী। তিনি বলেন, ‘‘মিথ্যে মামলায় বিজেপিকে ফাঁসানোর যে প্রবণতা তৃণমূলের রয়েছে, শিশুপাচার কাণ্ডেও সেটাই হয়েছে। আদালতে তা প্রমাণ হবে।’’
দেবশ্রী এবং বাপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। মালদহের মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী চৈতালী ঘোষ সরকার বলেন, ‘‘রাজ্যে মহিলাদের জন্য অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে।’’ জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যদি সত্যি শিশু পাচার রুখতে পদক্ষেপ নিতে চায়, রাজ্য সব সময়েই সহযোগিতা করবে। কিন্তু আশা করব উনি (দেবশ্রী) নিজের ঘর থেকেই কাজ শুরু করবেন। জলপাইগুড়ির শিশু পাচারে অভিযুক্ত বিজেপি নেতানেত্রীদের দল থেকে তাড়িয়ে দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy