মাংস খাওয়ার বায়না করেছিল দুই মেয়ে। মা গিয়েছিলেন বাজারে। মাংস নিয়ে ফিরে এসে দেখলেন, দরজায় তালা-চাবি দেওয়া। হঠাৎই খেয়াল হল চৌকাঠ পেরিয়ে স্রোতের মতো ভেসে আসছে রক্ত। দরজা খুলতেই আঁতকে উঠলেন তিনি। পাশাপাশি দু’টি ঘরে পড়ে দুই কিশোরী মেয়ের রক্তাক্ত দেহ।
রবিবার সন্ধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার দেভোগের বড়বাড়ির এই ঘটনার খবর পেয়েই পৌঁছয় পুলিশ। পুতুল ওরফে সীমা দাস (১৪) এবং পূজা দাসের (১০) নলি কাটা দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। কেন খুন, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন নিহত দুই কিশোরীর বাবা বিপ্লব। এ দিনই রাতে পাশের গ্রাম ডালিম্বচক থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিপ্লব এবং তাঁর স্ত্রী সাগরিকার ঝগড়া লেগেই থাকত। বিপ্লব তেমন কোনও কাজ করেন না। ঠোঙা তৈরি করে সংসার চালান সাগরিকা। নিহত দুই কিশোরীর ঠাকুরদা দোকানে কাজ করেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এ দিনও তমলুকে আয়ার কাজে যান ঠাকুমাও। সন্ধ্যায় মাংস খাওয়ার বায়না করে দুই মেয়ে। সাগরিকার কথায়, ‘‘ব্রজলালচকে যাই মাংস কিনতে। ফিরে দরজা বন্ধ দেখে প্রতিবেশীদের বাড়ি যাই। প্রতিবেশীরা বলে, হয়তো মেয়েরা দরজা বন্ধ করে টিভি দেখছে। ফিরে দেখি, দরজার ফাঁক দিয়ে জলের মতো রক্ত ভেসে আসছে।’’ দরজা খুলতে দেখা যায় অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া পুতুল একটি ঘরে পড়ে। মাথায় এবং গলায় কাটা দাগ। অন্য ঘরে পড়ে পূজা। তারও গলা এবং কানের পাশে একাধিক জায়গায় ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানোর দাগ।
আরও পড়ুন: পরীক্ষায় বসায় অনুমতি মেলেনি, কেরলে আত্মঘাতী বাঙালি ছাত্র
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সব সময় দিদির সঙ্গেই থাকত চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া পূজা। দিন পনেরো আগে মামাবাড়ি থেকে বাড়ি ফেরে দু’জন। বাবা মেয়েদের মামার বাড়ি গিয়েও মারধর করত বলে অভিযোগ। প্রতিবেশী অতনু সাঁপুই বলেন, ‘‘সংসারে অভাব ছিল। তবে দুই মেয়ে পড়াশোনায় খুব ভাল ছিল।’’ স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, সাগরিকা বেরিয়ে যাওয়ার পর উদ্ভ্রান্তের মতো কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে বিপ্লবকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy