প্রতীকী ছবি।
ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা বর্ধিত হারে বেতন হাতে পেয়েছেন। কিন্তু সেই ‘পে স্লিপ’ বা বেতন-চিরকুটে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতার কোনও উল্লেখ নেই। ফলে কর্মী শিবিরে উৎকণ্ঠা ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বেতন-চিরকুটে ডিএ-র উল্লেখ না-থাকায় ভবিষ্যতে তা আদৌ মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে অনেকেই। কারণ, অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বাধীন বেতন কমিশন তাদের সুপারিশে বলেছে, ডিএ নির্ধারণের অধিকার রাজ্য সরকারের। কেন্দ্রের ধারা মেনেই ডিএ দিতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই রাজ্যের। বিরোধী কর্মী সংগঠনগুলির অভিযোগ, এর ফলে কমবেশি ২১% ডিএ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
একাধিক কর্মী সংগঠনের দাবি, পঞ্চম বেতন কমিশনের ক্ষেত্রেও ‘নোশনাল’ বা ধরে নেওয়া হয়েছিল, ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সুপারিশ রূপায়িত হচ্ছে। ২০০৮ সালের ১ এপ্রিল থেকে ডিএ দেওয়া শুরু হয়। সেই সময় মোট চার কিস্তিতে ১২% ডিএ যোগ করে বেতনের টাকা এক বছরের মধ্যে তিন কিস্তিতে মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল তদানীন্তন বাম সরকার। ২০০৯ সালের ১ এপ্রিল এক কিস্তি যোগ করে ১৬% ডিএ দেওয়া হয়েছিল। ধরে নেওয়া হচ্ছে, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশও কার্যকর হল ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে। কিন্তু বর্ধিত বেতন এল ডিএ ছাড়াই।
কর্মচারীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণের পরে পে স্লিপে ব্যান্ড পে, গ্রেড পে, ডিএ এবং এইচআরএ-র উল্লেখ ছিল। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের পরে নতুন পে স্লিপে ব্যান্ড পে, এইচআরএ, মেডিক্যাল অ্যালাওয়েন্সের মতো কিছু বিষয়ের উল্লেখ থাকলেও ডিএ সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।
সরকারি ভাবে ডিএ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইছে না। তবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের দাবি, বেতন কমিশনের সুপারিশ রূপায়ণের অর্থ, ১২৫% ডিএ মিশে যাওয়া। অর্থাৎ রাজ্য সরকার যে-হেতু ১২৫% ডিএ দিয়ে বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত করেছে, তাই এটা ডিএ-শূন্য এবং সেই জন্যই পে স্লিপে তার উল্লেখ নেই। কর্মচারীরা এ বার গড়ে ১৪.৫% বাড়তি বেতন হাতে পাবেন। পদ ও অভিজ্ঞতা অনুযায়ী তা কিছুটা কমবেশি হতে পারে। ওই সংগঠনের এক নেতা বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে সরকার ডিএ দিলে তখন পে স্লিপে তার প্রতিফলন ঘটবে।’’ কিন্তু রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল (স্যাট) বকেয়া ডিএ মেটাতে বলা সত্ত্বেও তা নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি নয় ওই সংগঠন।
কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্টস এমপ্লয়িজ়ের আহ্বায়ক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেতন বেড়েছে সন্দেহ নেই। কিন্তু স্যাটের রায় মেনে সরকার বকেয়া ডিএ দিলে বেতনের পরিমাণ আরও বাড়ত। এটা তো সরকারের দয়া নয়, প্রত্যেক কর্মীর অধিকার।’’
রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহের কথায়, ‘‘আমরা সরকারকে বলেছি, যাতে ডিএ-র বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হোক। অন্যথায় আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটতে বাধ্য হব।’’ সরকারি কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের অভিযোগ, সরকারি কর্মচারীদের মর্যাদাহানি করা হচ্ছে ইচ্ছাকৃত ভাবে। ভূভারতের কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি। ‘‘ডিএ কর্মচারীদের অধিকার। সরকার সেই বিষয়ে উদাসীন থাকতে পারে না,’’ বলেন দেবাশিসবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy