Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Cyclone Amphan

নবান্নেও দফতর তছনছ, আহত ২

তথ্য সংস্কৃতির দফতরও তছনছ। ঝড়ের ভয়াবহতা বোঝা যাচ্ছে কাচ ভাঙার আওয়াজে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০৩:১২
Share: Save:

তখনও উপকূলে আছড়ে পড়তে ঘণ্টা দেড়েক বাকি। আবহাওয়া অফিসের বার্তা তেমনই ছিল। বেলা আড়াইটে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তত ক্ষণে চলে এসেছেন নবান্নের একতলায় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। উপগ্রহ চিত্রে আমপান তখন দিঘার দিকে।

ঝড় যখন দিঘায়, নবান্নে তার শনশন আওয়াজ বলে দিচ্ছে কী অপেক্ষা করছে পরের কয়েক ঘণ্টায়। শুরু হল মুখ্যমন্ত্রীর নজরদারি। ফোনে প্রথমেই ধরলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথনকে। প্রবল বাতাসে কাঁপা কাঁপা গলায় জেলাশাসক বললেন, ‘‘ম্যাডাম, এখনই বহু গাছ পড়ে গিয়েছে, বাড়ি ভেঙেছে। সাগরে ঝড়ের তাণ্ডব

শুরু হয়ে গিয়েছে। তিন লাখের বেশি মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে। তাই প্রাণহানি কম হবে বলেই আশা রাখি।’’ মুখ্যমন্ত্রী নজর রাখতে বললেন। এর পর ধরা হল উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তীকে। বসিরহাটে বসে ঝড় সামলাচ্ছিলেন জেলাশাসক। ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও। জেলাশাসক জানান, বাতাস জোরে বইতে শুরু করেছে। নদীর জল অনেকটাই বেড়েছে। ৬০ হাজার মানুষকে সরিয়ে আনা হয়েছে। তখনও আশঙ্কা সবার মনে। নবান্নের প্রশাসনিক মহলে গুঞ্জন, যদি ফণীর মতো অন্য দিকে ঘুরে যায়, তা হলে মঙ্গল।

মুখ্যমন্ত্রী ধরলেন দিঘায় থাকা পরিবহণ ও সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে। তিনি জানালেন, দিঘা রক্ষা পেয়েছে। ভাটা থাকায় জলোচ্ছ্বাস তেমন কিছু হয়নি। তবে নন্দীগ্রাম, হলদিয়া, নয়াচরে পরিস্থিতি ভালো না। একটু আশা দেখা গেল সবার চোখেমুখে। অন্তত দিঘা উপকূল রক্ষা পেয়েছে।

এর পর আবার অপেক্ষা কিছু সময়। সাড়ে তিনটে থেকেই অবস্থা বিচলিত হওয়ার মতো। তারপরই শুরু হয়ে গেল চারদিক থেকে তছনছ হয়ে যাওয়ার খবর। জেলা থেকে পর পর খবর আসছে গাছ পড়েছে, বাড়ি ভাঙছে, বাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে একের পর এক গ্রামে। চাষের জমিও নষ্ট। বিষন্ন মুখ্যমন্ত্রীর আক্ষেপ, সব শেষ করে দিয়ে গেল। বছরে তিন-চার বার যদি এমন দুর্যোগ হতে থাকে তাহলে কীভাবে চলবে সব। মুখ্যসচিবকে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করতে নির্দেশ দেন তিনি। তাড়াহুড়ো করে উদ্ধার

কাজে নামতেও বারণ করেন তিনি। নবান্নে তখন পর পর জেলা থেকে বিপর্যয়ের খবর। মুখ্যমন্ত্রীও টানা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ঝড়ের খতিয়ান নিচ্ছেন। নবান্ন জুড়ে তখন ঝড়ের মাথা,

চোখ, লেজ নিয়ে বিস্তর চর্চা চলছে। কোথায়, কতটা ধাক্কা, তা নিয়ে আলোচনা চলছে কর্তাদের। এর পর সাড়ে ৭টা নাগাদ পর পর ধাক্কা নবান্নে। প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় যে ঘরে বসতেন তা ভেঙে গিয়েছে।

তথ্য সংস্কৃতির দফতরও তছনছ। ঝড়ের ভয়াবহতা বোঝা যাচ্ছে কাচ ভাঙার আওয়াজে। দুজন আহত হন নবান্নে। পুলিশের একটি চৌকিও ভেঙে পড়েছে। কে জানে নবান্নের চোদ্দ তলায় কি হলো। মুখ্যমন্ত্রী ওখানেই বসেন। তিনি নিয়ন্ত্রণ কক্ষে থাকলেও সকলের চিন্তা তা নিয়েই। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, মানুষগুলোকে রক্ষা করুন ভগবান।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Cyclone Nabanna Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy