প্রতীকী ছবি।
প্রায় চল্লিশ ফুট উঁচু গাছের ডালে এখনও ঝুলছে টিনের টুকরো। সে দিকে দেখিয়ে মানিক মণ্ডল বললেন, ‘‘কেমন ঝড় হয়েছে বুঝতে পারছেন তো! দেখুন, কেমন আছি।’’
সোমবার হাসনাবাদের খড়মপুর গ্রাম হয়ে যাওয়ার সময়ে বসিরহাট-ন্যাজাট রাস্তার পাশে দেখা হল মানিকের সঙ্গে। ঘরের চাল উড়েছিল। পরিবার নিয়ে ঘর সারাচ্ছিলেন। একরাশ বিরক্তি নিয়ে বললেন, ‘‘ত্রাণের নামে বলিহারি। একখানা প্লাস্টিক ছাড়া আর কিছু জোটেনি।’’
মানিক জানান, একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল আয়লার সময়ে। একটা মাত্র পলিথিন আর খাদ্য সুরক্ষার কার্ড পেয়েছিলেন সে বার। বুলবুল, ফণীর পরেও বরাদ্দ একখানা পলিথিন। মানিক বলে চলেন, ‘‘বারো জনের সংসার। তিনটে ঘর। কী ভাবে যে আমরা বেঁচে আছি, আমরাই জানি।’’
হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত চিঁড়ে, গুড়, চাল-ডাল, শিশুখাদ্য— সবই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।’’ জলে ভেসে যাওয়া এলাকার লোকজন, যাঁরা সে সব পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রবিন সর্দার বলেন, ‘‘উনুন ধরানোর শুকনো কাঠ কোথায় মিলবে, সেটা কি সরকারি বাবুরা ভেবে দেখেছেন!’’
একটু এগোতেই দেখা গেল, রাস্তার দু’পাশে মাটিতে মিশে গিয়েছে মেছোভেড়ির আলাঘর। মিষ্টি জলের পুকুরে নোনা জল ঢুকে শ’য়ে শ’য়ে মাছ মরেছে।
ন্যাজাট বাজারে বাজার এলাকাটুকু ছাড়া সর্বত্র জলমগ্ন। খাদিপাড়ায় দেখা গেল খাবার না-পেয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন বাসিন্দারা। স্বপ্না মল্লিক, গৌরী মণ্ডল, মিনা পালেরা বলেন, ‘‘ইটভাটার কাটা খাল দিয়ে প্রতি বার জল ঢোকে গ্রামে। তবু বেআইনি ভাটা বন্ধ হয় না।’’
গ্রামের মানুষ আরও জানালেন, ফ্লাড শেল্টারে সবুজ সাথীর সাইকেল রাখা। সেখানে আশ্রয় নিতে না পেরেও ক্ষোভ আছে। সমস্যা আছে শৌচাগার নিয়েও। মিনা সর্দার, রূপা মাহাতোরা বলেন, ‘‘চার দিকে জলে ভরা। শৌচালয় নিয়ে আমাদের মেয়েদের সমস্যা দেখার মতো কেউই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy