আমপানের তাণ্ডবে ধসে গিয়েছে বাড়ি। সেই ধ্বংসস্তূপ হাতড়ে কিছু বাঁচানোর চেষ্টায় ব্যস্ত এক গ্রামবাসী। মেদিনীপুরে। ছবি: এএফপি।
আমপান (প্রকৃত উচ্চারণ উম পুন)-এর তাণ্ডবে ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে। তার মধ্যে কলকাতাতেই মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে আমপান পরবর্তী রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আহ্বান জানালেন তিনি। একের পর এক জেলা থেকে বিপর্যয়ের খবর শুনে বুধবার রাতে নবান্নে বসে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আর্জি জানান মমতা। দক্ষিণবঙ্গে ত্রাণ ও পুনর্গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। তাঁর সেই আর্জিতে সাড়া দিয়ে এ দিন টুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানান, গোটা দেশ পশ্চিমবঙ্গের পাশে আছে।
মোদী আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে আমপান যে ভাবে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে, সেই দৃশ্য দেখেছি। এই সঙ্কটময় মুহূর্তে গোটা দেশ পশ্চিমবঙ্গের পাশে আছে। রাজ্যের মানুষের শুভ কামনা করছি।” তিনি আরও জানান, এই চ্যালেঞ্জিং মুহূর্তে সব রকম ভাবে সহযোগিতা করা হবে বাংলাকে। পরে আরও একটি টুইট করে মোদী বলেন, “জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে কাজ করছে। শীর্ষ আধিকারিকরা গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতা করতে চেষ্টার কোনও কসুর করা হবে না।”
অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বাংলাকে সব রকম সহযোগিতার বার্তা দিয়েছেন। তিনি টুইট করে বলেন, “আমরা আমপানের বিষয়টি ভাল ভাবে নজর রাখছি। ঝড়ের তাণ্ডবে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা নিয়ে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলেছি। প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।”
Have been seeing visuals from West Bengal on the devastation caused by Cyclone Amphan. In this challenging hour, the entire nation stands in solidarity with West Bengal. Praying for the well-being of the people of the state. Efforts are on to ensure normalcy.
— Narendra Modi (@narendramodi) May 21, 2020
আমপানের ভয়াবহতা কাটিয়ে দ্রুত স্বাভাবিকতার দিকে ফেরার জন্য সক্রিয় হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। বৃহস্পতিবার টুইটারে তিনি জানিয়েছেন যে, মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবায় যাতে স্বাভাবিকতা ফেরে, তা নিশ্চিত করতে তিনি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
আমপানের প্রভাবে ঠিক কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রিপোর্টের অপেক্ষা করছেন বলেও এ দিন জানিয়েছেন রাজ্যপাল। প্রধানমন্ত্রীর দফতর যাতে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ করতে পারে, তার জন্যই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর রিপোর্টের অপেক্ষা করছেন— ঈষৎ ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে এ রকমই লিখেছেন ধনখড়।
আমপানের প্রভাবে ‘বিপুল ক্ষয়ক্ষতি’ হয়েছে বলে জানিয়ে রাজ্যপাল আরও লিখেছেন যে, বিভিন্ন সংস্থা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করায় আরও অনেক বড় ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে।
করোনার হানা এখনও সামলে উঠতে পারেনি বাংলা। তার উপর আমপান-এর তাণ্ডবে কার্যত বিধ্বস্ত রাজ্য। বুধবার ‘অতি মারাত্মক’ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে বাংলায় আছড়ে পড়ে আমপান। ঝড়ের তাণ্ডবে তছনছ হয়ে যায় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি-সহ দক্ষিবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা। আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ কিলোমিটার গতি ছিল আমপানের। কোথাও আবার এর গতি উঠেছিল ১৮৫ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: কালভৈরব! সুন্দরবন-সহ দুই ২৪ পরগনা তছনছ-লন্ডভন্ড
আরও পড়ুন: আমপানের তাণ্ডবে কোন জায়গার কী হাল, দেখে নিন ছবিতে
We are closely monitoring the cyclone Amphan and are in continuous touch with concerned authorities.
— Amit Shah (@AmitShah) May 21, 2020
I have also spoken to CM Odisha, Shri Naveen Patnaik ji & CM West Bengal, Mamata Banerjee ji over situation arising due to the cyclone and assured all possible help from centre.
আমপান যে ভাবে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে বাংলার বুকে, তা নিয়ে বুধবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সব হিসেব উল্টে গিয়েছে। কারও ভবিষ্যদ্বাণী মিলল না। পুরোটা বাংলার উপর দিয়ে গেল। করোনার জন্য অর্থনীতির অবস্থা শেষ। তার পর এই দুর্যোগ। কোনও রোজগার নেই। পুনর্গঠন করতে অনেক টাকা লাগবে।’’ এর পরই তিনি বাংলার এই পরিস্থিতির জন্য দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আর্জি জানান। সঙ্গে কেন্দ্রের কাছেও সহযোগিতা চান। বিপর্যয়ের বিবরণ দিয়ে আরও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এলাকার পর এলাকা ধ্বংস। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রশাসন ৫ লক্ষ মানুষকে সরাতে পেরেছে। ১৭৩৭ সালে এমন ভয়ঙ্কর ঝড় হয়েছিল। ওয়ার রুমে বসে আছি আমি। নবান্নে আমার অফিস কাঁপছে। একটা কঠিন পরিস্থিতির যুদ্ধকালীন মোকাবিলা করলাম।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy