নিহত বন্ধুপ্রকাশের বাড়িতে ফরেন্সিক দলের সদস্যেরা। নিজস্ব চিত্র
হননের পরে এখন হতাশা!
দু’পায়ের ফাঁকে মাথা গলিয়ে নাগাড়ে বিড়বিড় করেছে যুবক— ‘এটা কী করলাম, ফাঁসি তো হবেই তার চেয়ে কে আছেন গো, একটা দড়ি দিন না নিজেই গলায় দড়ি দিই!’
জিয়াগঞ্জ হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহেরাকে নিয়ে পুলিশকর্মীরা এখন তটস্থ। দিবারাত্র নজরদারির পাশাপাশি তার সঙ্গে মিঠে কথা বলে মন ভাল রাখার চেষ্টারও কসুর নেই পুলিশকর্মীদের। ক্রমাগত চলেছে থানা-বদল। জিয়াগঞ্জ থেকে কখনও বহরমপুর কখনও বা সাগদিঘি তো এই পুলিশের গাড়ি ছুটল লালবাগ। লক-আপ বদলে তার অবসাদগ্রস্ত মন বদলানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘যে থানাতেই পাঠানো হোক না কেন, কখনও গরাদের ফাঁকে মাথা গলিয়ে কখনও বা লক-আপের এক কোনে বসে শুধুই বিড়বিড় করছে সে, ‘কী যে করলাম!’’
হনন-আত্মহননের এই টানাপড়েনে কখনও বা তলব করা হচ্ছে মনোবিদ। থানায় এসে তিনিও দু-দণ্ড মানসিক শক্তি যোগানোর চেষ্টা করছেন সাহাপুর গ্রামের ওই যুবকের। জিয়াগঞ্জ থানার এক পুলিশকর্মী বলছেন, ‘‘আমাদের রাতের ঘুম উড়ে গেছে! নাগাড়ে নজরদারির পাশাপাশি উৎপলকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা রাখতে, রাতভর ঘুমিয়ে না পড়া পর্যন্ত গল্প করে কাটাতে হচ্ছে তার সঙ্গে।’’ এক তদন্তকারী অফিসার বলছেন, ‘‘তার একটাই কথা, ‘ফাঁসি তো হবেই, তার চেয়ে আমাদের একটা দড়ি দিন না, নিজেই গলায় দিই!’’ মুর্শিদাবাদ জেলা হাসপাতালের এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘‘হননের পরে এমন হতাশা অস্বাভাবিক নয়। দাগী অপরাধী তো নয়, তাই এখন হয়ত আফসোস হচ্ছে।’’ জিয়াগঞ্জ থানার এক অফিসার বলছেন, ‘‘কেন এমন কাণ্ড করলি? প্রশ্ন করলে তার জবাব— ‘মাথায় খুন চেপে গিয়েছিল, না হলে ওইটুকু ছেলেকে কেউ কুপিয়ে মারে, বলুন!’’
অন্য অভিযুক্ত সৌভিক বণিককে সাগরদিঘি থানায় রাখা হলেও তার জন্য একটি সিলিং ফ্যান বরাদ্দ করেছে পুলিশ। নজরে রাখা হয়েছে তাকেও। এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘‘অপরাধ করেছে ঠিকই, তবে এরা কেউই দাগী অপরাধী নয়। তাই মানসিক অবসাদ থেকে এরা আত্মহননের চেষ্টা করতে পারে ভেবেই বাড়তি নজরদারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy