পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় সিপিএমের মিছিল। —ফাইল চিত্র।
গ্রামের ভোটের আলপথ ধরে আলো খোঁজার চেষ্টায় সিপিএম। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর সিপিএমের দ্বিতীয় রাজ্য কমিটির বৈঠকে পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করল সিপিএম। আলিমুদ্দিন স্ট্রিট সূত্রে খবর, সেই পর্যালোচনায় দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভোট বৃদ্ধির হারকে ইতিবাচক হিসাবে দেখতে চাইছে রাজ্য কমিটি। মালদহ বাদ দিয়ে উত্তরবঙ্গের ফল নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন মুজফ্ফর আহমেদ ভবন। তবে সিপিএম নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, সাগরগিঘিতে জোটের জয় বা ধূপগুড়িতে বাম প্রার্থীর জামানত জব্দ হওয়া—এই দুইয়ের কোনওটাই মডেল নয়। তা হলে মডেল কী? সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, পঞ্চায়েত ভোটে শাসকের ‘বাধা’ উপেক্ষা করে যেখানে যেখানে ৩০ শতাংশ বা তার বেশি ভোটে পৌঁছনো গিয়েছে, সেটাই সংগঠনের কাছে মডেল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মালদহ, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনার বেশ কিছু ব্লকে আমাদের একক ভাবে অনেকটা ভোট বেড়েছে। এটাই ইতিবাচক দিক।’’ সিপিএম নেতৃত্বের আরও বক্তব্য, পশ্চিমাঞ্চল তথা জঙ্গলমহলে ভোট যে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল, সেটাও আগের থেকে বেড়েছে। অর্থাৎ, উত্তরবঙ্গ বাদ দিয়ে রাজ্যের সব এলাকায় ভোটবৃদ্ধিকে পঞ্চায়েতের নির্যাস হিসাবে দেখতে চাইছেন মহম্মদ সেলিমরা।
সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থীর জয় বাংলার রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। সংখ্যালঘু ভোটের বাক্সবদলে রীতিমতো ভোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। যদিও সিপিএমের সমর্থনে জেতা কংগ্রেসের বাইরন বিশ্বাস তিন মাস কাটতে না-কাটতেই তৃণমূলে শামিল হওয়ায় সেই আলোচনা স্তিমিত হয়ে যায়। আবার, গত সপ্তাহে ধূপগুড়ির ফলপ্রকাশের পর দেখা যায় সেখানে সিপিএম কার্যত স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমাদের কর্মীরা একটা জয়েই হইহই শুরু করে দেয়, আবার একটা হারেই মুষড়ে পড়ে। এর কোনওটাই সঠিক নয়।’’
সিপিএম সূত্রে খবর, রাজ্য কমিটির বৈঠকে জেলাগুলি থেকে যে রিপোর্ট এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, নদিয়ার তেহট্ট, নাকাশিপাড়া, পলাশিপাড়া, মুর্শিদাবাদের ডোমকল, রানিনগর, জলঙ্গি, ভগবানগোলা, লালগোলার মতো ব্লকে বাম ভোট ৩০ শতাংশ পার করে গিয়েছে। হুগলির পাণ্ডুয়া, বলাগড়েও একই ছবি। মালদহেও কয়েকটি ব্লকে সিপিএমের ভোট আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে বলে জেলা নেতৃত্ব রিপোর্ট জমা দিয়েছেন রাজ্য কমিটির বৈঠকে। মুর্শিদাবাদের যে ব্লকগুলিতে সিপিএমের একক ভোট ৩০ শতাংশ বা তার কাছাকাছি জায়গায় গিয়েছে, তার মধ্যে লালগোলা বাদ দিয়ে বাকি সবই মুর্শিদাবাদ লোকসভার মধ্যে পড়ে। ফলে, লোকসভার কথা ভেবেও অঙ্ক কষা শুরু করেছে সিপিএম। তবে অনেক নেতা এ-ও আশঙ্কা করছেন, লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, তৃণমূল-বিজেপি মেরুকরণ আরও তীব্র হবে। তা কতটা সামাল দেওয়া যাবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy