প্রতীকী ছবি।
রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় দাদা ও শাসক দলের নেতাদের আঙুল ফুলে কী ভাবে কলাগাছ হয়েছে, তার তথ্য চেয়ে জনতার কাছে আবেদন করেছিল বিরোধী দল সিপিএম। সেই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছিল ‘পাহারায় পাবলিক’। নিজেদের দলীয় সূত্রে এবং জনতার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ বার ‘পাহারায় পাবলিক’-এর প্রথম ভাগ সামনে আনল সিপিএম। সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করেই এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে প্রচার চালাতে চায় তারা। ‘পাহারায় পাবলিক’-এর প্রথম দফার তথ্য আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করে বুধবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের হুঁশিয়ারি, ‘‘অভিযুক্তদের নাম-সহ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করা হয়েছে। এ বার পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক। নইলে জনরোষ আছড়ে পড়লে কী হতে পারে, শ্রীলঙ্কায় তার উদাহরণ দেখাই গিয়েছে!’’
সিপিএমকে অবশ্য পাল্টা আক্রমণের পথে গিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, ‘‘এজেসি বোস রোডের দু’ধারে যে অট্টালিকা রয়েছে, জেলায় জেলায় যে পার্টি অফিস রয়েছে, সিপিএম আগে সেগুলির হিসেব দিক। জ্যোতি বসুর আমলে কাদের জমি দেওয়া হয়েছে, কারা সম্পত্তি বানিয়েছে, সে সব নথি নষ্ট করে এখন বড় বড় কথা বলছে!’’
দুর্নীতি, তোলাবাজির অভিযোগ নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচইয়ের মধ্যেই সিপিএম ‘পাহারায় পাবলিক’ কর্মসূচি ঘোষণা করে নির্দিষ্ট একটি গুগল ফর্ম পূরণ করে এই সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল মানুষের কাছে। গত দু’মাসে হাজারের বেশি অভিযোগ এসেছে বলে তাদের দাবি। সেলিম এ দিন ব্যাখ্যা দিয়েছেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে যাঁদের সম্পত্তির বহর নিয়ে অভিযোগ এসেছে, রাজনীতির চেনা পথের বাইরে তাঁদের আয়ের অন্য কোনও রাস্তা আছে কি না, দলীয় উদ্যোগে তা যথাসম্ভব খোঁজখবর করেই তালিকা প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে। তাঁরা রাজনৈতিক প্রচার চালাচ্ছেন, ‘হুইসল ব্লোয়ার’ হিসেবে মানুষকে সর্তক করার চেষ্টা করছেন। এখান থেকে তথ্য নিয়ে কেউ চাইলে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ-দুর্নীতির মতো আইনি লড়াই লড়তে পারেন। সেলিমের মন্তব্য, ‘‘রামায়ণে রামের পাদুকা রেখে রাজ্য শাসনের মতো মুখ্যমন্ত্রীর চটি জোড়া সামনে রেখে দেদার লুট চলছে একেবারে পঞ্চায়েত পর্যন্ত! ইতিমধ্যেই হাজারের বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে আমাদের কাছে। সেগুলি যাচাই করার পরে আমরা আপাতত প্রথম পর্যায়ে রাজ্যে লুটের কিছু নমুনা প্রকাশ করছি।’’
কিন্তু এই কর্মসূচির জন্য তাঁদের বিরুদ্ধেও তো কেউ মামলা করতে পারেন? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্য, ‘‘যখন ভাইপো’র বিরুদ্ধে ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ড্স’-এর লুটের কথা আমরা বলেছিলাম, তার পরে আমার কাছেও মামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে মোটা মোটা ফাইল পাঠানো হয়েছিল। আমি সে সব ফেলে দিয়েছি। যাদের মান নেই, তাদের মানহানির কী আছে?’’ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বেআইনি সম্পত্তি বানানো, সরকারি প্রকল্পের টাকা গায়েব করা, তোলা আদায়-সহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তদের নাম ঠিকানা-সহ নমুনা প্রকাশ করা হয়েছে ‘পাহারায় পাবলিক’-এর প্রথম পর্যায়ে। ভীতির পরিবেশ কাটিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলনই যে বড় হাতিয়ার, সে কথা ফের বলেছেন সেলিম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy