(বাঁ দিকে) সাদা জামা পরিহিত অভিজিৎ মণ্ডল। সিপিএম কাউন্সিলর নন্দিতা রায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
এক পুলিশ আধিকারিকের ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের পাশে দাঁড়ালেন কলকাতার একমাত্র সিপিএম কাউন্সিলর নন্দিতা রায়। যা নিয়ে সিপিএমের মধ্যে রবিবার রাতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। পরিস্থিতি আঁচ করে রাজ্য সিপিএমের এক প্রথম সারির নেতা অন্য এক নেতার মাধ্যমে নন্দিতার কাছে বার্তা পাঠান। সূত্রের খবর, তার পর ওই মন্তব্য মুছে দিয়েছেন মহানগরের একমাত্র সিপিএম কাউন্সিলর।
বিশ্বক মুখোপাধ্যায় নামের এক পুলিশ আধিকারিক তাঁর ফেসবুক পোস্টের ডিপি কালো করে দিয়েছেন। তার পর তিনি ফেসবুকে ইংরেজিতে লেখেন, ‘পুলিশের গ্রেফাতারি যে ভুল এবং তাঁর প্রতি সংহতি জানাতে অন্তত আজকের জন্য ডিপি কালো করুন।’ সেই পোস্টে ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর নন্দিতা লেখেন, ‘শকিং! দ্য ওয়ে অভিজিৎদা হ্যাজ় বিন ভিক্টিমাইজ়ড…শেম।’ যার গোদা বাংলা অনুবাদ করলে হয়, যে কায়দায় অভিজিৎদা এর শিকার হয়েছেন, তা লজ্জার। নন্দিতার ওই মন্তব্যের প্রতি উত্তরে পোস্ট কর্তা বিশ্বক লেখেন, ‘একদম দিদি, আমরা ওর পাশে আছি। আশা করি আপনাদের মতো কয়েক জন ভাল মানুষ নিশ্চয়ই ওর পাশে থাকবেন।’ এর পরে নন্দিতা আবার লেখেন, ‘নিশ্চয়ই। আসলে মানুষ অন্যায়কে অন্যায় বলতে ভুলে গিয়েছেন, নিজেরা হাজারো অন্যায় করলেও।’
সেই স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে সিপিএমের অন্দরে। দলের মধ্যে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে সমগ্র বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করতে হয় রাজ্য সিপিএমকে। আলিমুদ্দিনের এক প্রথম সারির নেতা ফোন করেন পূর্ব যাদবপুরের এক সিপিএম নেতাকে। তাঁকে বলা হয়, নন্দিতা যেন দ্রুত মন্তব্য মুছে দেন ফেসবুকের ওই পোস্ট থেকে। পার্টির নির্দেশে শেষ পর্যন্ত নন্দিতাকে মন্তব্য মুছতে হয়েছে।
এ নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে নন্দিতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আমি অত ইংরাজি বুঝি না। সেই কারণে ওই মন্তব্য করে ফেলেছিলাম।” তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি তা হলে ইংরাজিতে লিখতে গেলেন কেন? জবাবে তিনি বলেন, “ওটাই ভুল হয়েছে।” আপনি কি দলের চাপে মন্তব্য মুছে দিয়েছেন? কলকাতার একামাত্র সিপিএম কাউন্সিলরের উত্তর, “সেটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। এ নিয়ে কিছু বলব না।”
প্রত্যাশিত ভাবেই এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। কলকাতার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “নন্দিতাদিকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে চিনি। উনি খুবই সহজ-সরল মানুষ। একসময়ে আমরা একই বরোতে সতীর্থ কাউন্সিলর ছিলাম। দোষটা নন্দিতাদির নয়। আসলে প্রাথমিক থেকে ইংরেজিটা তুলে দিয়ে সর্বনাশটা করেছিল বামফ্রন্ট সরকার।”
গোড়া থেকেই টালা থানার ওসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি সিপিএমের তরফেও দাবি করা হয়েছিল টালা থানার ওসিকে তদন্তের আওতায় আনা হোক। শনিবার আরজি করের চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় টালা থানার ওসি অভিজিৎকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। দুর্নীতি মামলার পাশাপাশি এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকেও। পুলিশের কেউ কেউ যখন অভিজিতের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তখন সিপিএম নেত্রী তাতে তাল মেলানোয় স্বাভাবিক ভাবেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy