—ফাইল চিত্র।
স্বাধীনতার পরে দেশ ‘কল্যাণকামী রাষ্ট্র’ হয়েছে। সেই রাষ্ট্রে যদি কেউ বৈষম্যের শিকার হয়, সংবিধান হাতে নিয়ে আদালত চোখ বুজে বসে থাকতে পারে না। ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে মঙ্গলবার এই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্তের। তিনি বলেন, ‘‘ফ্ল্যাট কেনার জন্য রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ দেওয়া হয় না। ছেলেমেয়েদের স্কুলের বেতন, ওষুধ, খাবারের দাম বাড়লে ডিএ-র টাকা কাজে লাগে।’’
কেন্দ্রের হারে এ রাজ্যের সরকারি কর্মীরা ডিএ পাবেন না কেন, দিল্লি-চেন্নাইয়ে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মীদের সঙ্গে কেন তাঁদের ডিএ-র ফারাক থাকবে, আদালতে এ দিন সেই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার কথা ছিল রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের। বিচারপতি করগুপ্ত ও বিচারপতি শেখর ববি শরাফের ডিভিশন বেঞ্চে এজি জানান, ডিএ কর্মীদের অধিকার বলে মনে করে না রাজ্য সরকার। ডিএ যদি অধিকার না-হয়, তা হলে কেন্দ্রের হারে তা দেওয়া বা না-দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। দিল্লি বা চেন্নাইয়ের প্রসঙ্গেও তাঁর বক্তব্য একই বলে জানান এজি।
তা শুনে বিচারপতি শরাফ বলেন, ‘‘কেন দিল্লি-চেন্নাইয়ের কর্মীরা বেশি ডিএ পাবেন, তার নিশ্চয়ই কোনও ভিত্তি থাকবে। মামলার শুনানির গোড়া থেকে রাজ্যের কাছে তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। আদালত এখনও তার জবাব পায়নি। কোনও যুক্তি ছাড়া কাউকে বেশি এবং কাউকে কম দেওয়া যাবে কী ভাবে?’’ বিচারপতি শরাফের কথা শেষ হতে না-হতেই বিচারপতি করগুপ্ত এজি-র উদ্দেশে বলেন, ‘‘দিল্লি বা চেন্নাইয়ে রুটির দাম বেশি আর কলকাতায় কম, সেই কারণেই কি সেখানে বেশি হারে ডিএ?’’ এজি জানান, রাজ্য সরকারের আর্থিক পরিস্থিতি যেমন থাকে, তার উপরে নির্ভর করেই কর্মীদের ডিএ দেওয়া হয়।
এজি-র বক্তব্য শুনে বিচারপতি করগুপ্ত জানান, একই পদে কর্মরত কোনও কর্মী কেন দিল্লি বা চেন্নাইয়ে বেশি হারে ডিও পাবেন, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা কী, তা জানা দরকার। বিষয়টি কি এই রকম যে, দিল্লিতে কর্মরত কোনও গাড়িচালক ১০টি ভাষা জানেন বলে তিনি বেশি টাকা পাবেন আর এখানে যিনি সরকারি গাড়ি চালান, তিনি ১০টা ভাষা জানেন না বলে বেশি টাকা পাবেন না? দিল্লিতে কি অন্য ভাবে গাড়ি চালাতে হয়?
এজি জানান, সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন মামলার রায়ে কখনও জানিয়েছে, বাড়িভাতা ও পেনশনের হার আলাদা হতে পারে। শীর্ষ আদালতের বিভিন্ন রায়ের প্রতিলিপি পেশ করে তিনি জানান, তাঁর সওয়াল শেষ।
মামলার আবেদনকারীদের আইনজীবী সর্দার আমজাদ আলি, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, তাঁরা এজি-র এ দিনের বক্তব্যের পাল্টা বক্তব্য পেশ করবেন। ডিভিশন বেঞ্চ ১৭ জুলাই পরবর্তী শুনানি ধার্য করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy