ছবি: পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের ভিডিয়ো বৈঠক হল শনিবার সকালে। সেই বৈঠকের সূত্র ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বিকেলে নবান্নে বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, করোনা মোকাবিলায় আগামী দু’সপ্তাহ খুবই জরুরি। লকডাউন চালিয়ে যেতে হবে। তাই এ রাজ্যেও ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন চলবে। করোনা সংক্রমণ নিয়ে আপাতত কোনও শিথিলতা দেখানো হবে না। আমি আগেই বলেছিলাম, কেন্দ্র যা ভাববে, আমরা সহযোগিতা করব।’’ স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১০ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো পড়ুয়াদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করবে।’’
অতিরিক্ত দু’সপ্তাহের লকডাউনে পুলিশের জন্য নীতি বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ কড়াকড়ি করবে, কিন্তু বাড়াবাড়ি করবে না। লকডাউনও হবে, আবার তার মানবিক মুখও থাকবে। বাড়িতে আগুন লেগেছে। জল দিয়ে আগে আগুন নেভাতে হবে। এর মধ্যেও জীবন ও জীবিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা বাঁচিয়ে আমাদের চলতে হবে।’’
বাংলা নববর্ষের সময়ে টানা লকডাউন মেনে নিতে যে মানসিক সমস্যা হতে পারে এবং নাগরিকদের একাংশ যে নিয়মকানুন মানছেন না, সে সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মুখ্যমন্ত্রী। সে কারণেই তিনি বলেন, ‘‘আমি প্রতি বার নববর্ষের আগের রাতে মা কালী দর্শন করি। এ বার তা হবে না। আমাকেও মানতে হচ্ছে। আপনারাও নববর্ষ, হালখাতা বাড়িতে থেকে পালন করুন। প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন আগামী দু’সপ্তাহ খুবই জরুরি। নিশ্চয় তিনি কোনও নির্দিষ্ট খবর পেয়েছেন। তাই দয়া করে বাড়িতে থাকুন। বেরোবেন না।’’ উৎসবের নামে জমায়েত করলে পুলিশ ড্রোন ব্যবহার করে নজরদারি করবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে নবান্ন থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, যাঁরা লকডাউন বিধি ভঙ্গ করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবে পুলিশ। সাব ইনস্পেক্টর বা তার ঊর্ধ্বতন পদমর্যাদার অফিসার এই ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
বন্ধ
• স্কুল, কলেজ-সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (১০ জুন পর্যন্ত)
• বিমান চলাচল
• বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোনো
• যে কোনও জমায়েত
• প্রকাশ্যে নববর্ষ, হালখাতার অনুষ্ঠান
ছাড়*
• মুদিখানা, ওষুধ ও ডাক্তারখানা
• বাজার (ঘিঞ্জি এলাকার বাজার ছড়িয়ে দেওয়া হবে)
• বোরো ধান কাটা (বেশি লোক নিয়োগ নয়)
• চা বাগান ( দৈনিক সর্বাধিক ২৫ শতাংশ শ্রমিক নিয়োগ)
• ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (যদি শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা থাকে)
• বড় বিপণির নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভাগ (সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা)
• বেকারি, আটাকল, তেলকল, পানীয় জলের প্ল্যান্ট, মাছ চাষ
• অনলাইন কেনাকাটা ও হোম ডেলিভারি
* পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক
মমতা এ দিন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, এখন কোনও রকম জমায়েত করা যাবে না। বড় ঘিঞ্জি বাজারগুলি প্রয়োজন হলে ছড়িয়ে ভাগ করে দেবে পুলিশ। সেই কারণে সরকার চাষিদের কাছে গিয়ে ধান কিনবে। রাজ্যে ৩৫০টি ধান ক্রয়কেন্দ্র থাকলেও চাষিদের আপাতত আসতে হবে না। কয়েক দিনের মধ্যে সরকার ধান কেনার জন্য ‘অন্নদাত্রী’ নামে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন চালু করে দেবে। সেখানে ধান কেনার বিষয়ে বিস্তারিত জানানো থাকবে।
জীবন-জীবিকা চালু রাখার স্বার্থে বেশ কিছু ছাড়ের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেন, বোরো ধান কাটার সময় আসছে। কম শ্রমিক দিয়ে, দূরত্ব বজায় রেখে ধান কাটার কাজ করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমিও মাঠে ধান কাটতে যেতাম। ধান কাটার সময়ে বেশি লোক লাগে না। দূরে দূরে থেকেই ধান কাটা যায়।’’ এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে আইসিডিএস এবং মিড ডে মিলের চাল-ডালও আরও এক দফা বাড়ি পৌঁছে দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ছাড়া, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ৫০টির মতো গাড়ি সরকারের হাতে থাকবে। কোথাও জরুরি কিছু পৌঁছে দিতে তা ব্যবহার করা হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy