Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
IPL 2025 Auction

আইপিএল নিলামে বিক্রি হলেন না ৩৯৫ জন ক্রিকেটার, তালিকায় স্মিথ, উইলিয়ামসন, শাকিব, পৃথ্বীরা

আইপিএল নিলামে নাম ছিল ৫৭৭ জন ক্রিকেটারের। তাঁদের মধ্যে দল পেয়েছেন ১৮২ জন। বাকি ৩৯৫ জনকে দেখা যাবে না আগামী আইপিএলে। তাঁদের বেশ কয়েক জন প্রথম সারির ক্রিকেটার হিসাবে পরিচিত।

Picture of IPL Auction

আইপিএল নিলামের একটি মুহূর্তে সঞ্চালিকা মল্লিকা সাগর। ছবি: আইপিএল।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৯
Share: Save:

আইপিএলের নিলাম শেষ। আগামী বছরের আইপিএলে ২২৮ জন ক্রিকেটারকে দেখা যাবে ১০টি দলের জার্সিতে। কোন দল কাদের কিনল, কোন ক্রিকেটার কত দাম পেল, তা নিয়ে আলোচনা চলছে ক্রিকেট মহলে। আবার প্রদীপের এই আলোর নিচেই রয়েছে অন্ধকার। দীর্ঘ দিন আইপিএল খেলা দেশ-বিদেশের বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার এ বার দলই পাননি। তাঁদের মধ্যে কয়েক জন আবার বিশ্বমানের ক্রিকেটার হিসাবে পরিচিত।

কেন দল পেলেন না প্রথমসারির কিছু ক্রিকেটার? তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য তাঁরা কি হঠাৎ বেমানান হয়ে গেলেন? না হলে কোনও দলই কেন আগ্রহ দেখাল না! সর্বোচ্চ ২৫০ জন ক্রিকেটার থাকতে পারেন আইপিএলের সব দলগুলি মিলিয়ে। অর্থাৎ, ২২ জন কম ক্রিকেটারকে দেখা যাবে এ বার। নিলামে দল না পাওয়া সেরা ২০ জন কারা?

১. ডেভিড ওয়ার্নার

বিশ্বের অন্যতম আগ্রাসী ব্যাটার। আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতা যথেষ্ট। তাঁর নেতৃত্বে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। নেতৃত্ব দিয়েছেন দিল্লি ক্যাপিটালসকে। নিলামে নিজের ন্যূনতম দাম রেখেছিলেন ২ কোটি টাকা। কিন্তু তাঁকে নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি কোনও দল।

২. কেন উইলিয়ামসন

বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার। সব ধরনের ক্রিকেটে স্বচ্ছন্দ। নেতৃত্ব দিতে পারেন। গত তিন বছর উইলিয়ামসন ছিলেন গুজরাত টাইটান্সে। ২০২৩ সালে প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই চোট পেয়েছিলেন। ছিটকে যান প্রতিযোগিতা থেকে। গত বছর ফিট থাকলেও আশিস নেহরারা তাঁকে মাত্র দু’টি ম্যাচে খেলিয়েছিলেন। হায়দরাবাদের প্রাক্তন অধিনায়ক নিজের ন্যূনতম দাম রেখেছিলেন ২ কোটি টাকা। এ বার দলই পাননি।

৩. স্টিভ স্মিথ

উইলিয়ামসনের মতোই বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটার। অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন অধিনায়ক। ২০২১ সাল শেষ বার দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে আইপিএল খেলেছিলেন। গত তিন বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আইপিএল না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাঁর ন্যূনতম দাম ছিল ২ কোটি টাকা। এ বারের নিলামে তাঁকে গুরুত্বই দিল না কোনও দল।

৪. জেমস অ্যান্ডারসন

কিছু দিন আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা জোরে বোলার। সব সময় জাতীয় দলকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। এর আগে কোনও দিন আইপিএল খেলেননি। অবসরের পর প্রথম বার আইপিএল নিলামের জন্য নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়েছিলেন। তিনিই ছিলেন তালিকায় সবচেয়ে প্রবীণ ক্রিকেটার। ন্যূনতম দাম রেখেছিলেন ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু আইপিএলের কোনও দলই আগ্রহ দেখায়নি ৭০৪টি টেস্ট উইকেটের মালিকের প্রতি।

৫. সাকিব আল হাসান

আইপিএলের অন্যতম অভিজ্ঞ বিদেশি অলরাউন্ডার বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক। ২০১১ সালে প্রথম খেলেন কেকেআরের হয়ে। বেশ কয়েক বছর কেকেআর ছাড়াও হায়দরাবাদের হয়েও আইপিএল খেলেছেন। ২০২২ সালেও তাঁকে দলে নিয়েছিল কেকেআর। ব্যক্তিগত কারণে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন। এ বার নিলামে অংশ নিয়েও আর দল পেলেন না শাকিব। তাঁর ন্যূনতম দাম ছিল ১ কোটি টাকা।

৬. জনি বেয়ারস্টো

আইপিএলের সফল ওপেনারদের অন্যতম বেয়ারস্টো। গত পাঁচ বছরে পঞ্জাব কিংস এবং হায়দরাবাদের হয়ে ৫০টি ম্যাচ খেলেছেন। নিজের ন্যূনতম দাম রেখেছিলেন ২ কোটি টাকা। উইকেটরক্ষক হিসাবেও দক্ষ ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার। তিনি এ বার দল পেলেন না।

৭. ড্যারিল মিচেল

নিউ জ়িল্যান্ডের অলরাউন্ডার ভাল দামে দল পাবেন বলে মনে করা হয়েছিল। ২০২২ সালে রাজস্থান রয়্যালস এবং ২০২৪ সালে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে আইপিএল খেলেছেন। আগ্রাসী মিডল অর্ডার ব্যাটার। সঙ্গে মিডিয়াম পেস বল করতে পারেন। ভারতের মাটিতে যথেষ্ট সাফল্য রয়েছে তাঁর। তবু আইপিএলে দল পেলেন না মিচেল। তাঁর নূন্যতম মূল্য ছিল ২ কোটি টাকা।

৮. মুজিব উর রহমান

২০২১ সালে হায়দরাবাদের হয়ে শেষ বার আইপিএল খেলেছিলেন আফগানিস্তানের অফ স্পিনার। তার আগে পঞ্জাবের হয়েও খেলেছেন ২৩ বছরের ক্রিকেটার। আইপিএলে মোট ১৯ ম্যাচে ১৯ উইকেট নেওয়া মুজিবের ন্যূনতম দাম ছিল ২ কোটি টাকা। তিনিও শেষ পর্যন্ত অবিক্রিত থেকে গিয়েছেন।

৯. আলজ়ারি জোসেফ

ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের তরুণ জোরে বোলারেরও আগামী আইপিএলে খেলা হবে না। ২০১৯ সালে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলেছিলেন। অভিষেক ম্যাচেই হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ১২ রান ৬ উইকেট নিয়ে নজর কেড়েছিলেন। তবু পরে দু’বছর আইপিএলে একটিও ম্যাচ খেলেননি জোসেফ। ২০২২ সালে তিনি ছিলেন গুজরাত টাইটান্সে। সে বার দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তিনিও এ বার দল পাননি। ন্যূনতম দাম ছিল ২ কোটি টাকা।

১০. মুস্তাফিজুর রহমান

২০১৬ সাল থেকে আইপিএল খেলছেন বাংলাদেশের পেসার। হায়দরাবাদ, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস, দিল্লি ক্যাপিটালস, চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেছেন। গত আইপিএলে চেন্নাইয়ের হয়ে বেশ ভাল পারফর্ম করেছিলেন। কিন্তু এ বার কোনও দলই ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা পেসারের প্রতি আগ্রহ দেখায়নি। আইপিএলে ৬১টি ম্যাচ খেলে ৫৭টি উইকেট পাওয়া মুস্তাফিজুরের ন্যূনতম মূল্য ছিল ২ কোটি টাকা।

১১. শাই হোপ

সাদা বলের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম আগ্রাসী ব্যাটার। উইকেটরক্ষক হিসাবেও দক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের এই ক্রিকেটার। গত মরসুমে দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে তেমন পারফর্ম করতে পারেননি। ন’টি ম্যাচে ২২ গড়ে করেন ১৮৩ রান। ন্যূনতম মূল্য ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা রেখেও দল পাননি ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার।

১২. মহম্মদ নবি

দল পেলেন না আফগানিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়কও। ২০১৭ থেকে আইপিএল খেলছেন আফগান অলরাউন্ডার। হায়দরাবাদ, মুম্বই ছাড়াও কলকাতা নাইট রাইডার্স দলে ছিলেন। যদিও কেকেআরের হয়ে কোনও ম্যাচ খেলেননি তিনি। ২৪টি ম্যাচ খেলে তাঁর সংগ্রহ ২১৫ রান এবং ১৫টি উইকেট। দক্ষ স্পিনার আগ্রাসী ব্যাটিংও করতে পারেন। ন্যূনতম মূল্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

১৩. সিকন্দর রাজা

সাদা বলের ক্রিকেটে জ়িম্বাবোয়ের অধিনায়ককে বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার হিসাবে বিবেচনা করা হয়। গত দু’মরসুম তিনি ছিলেন পঞ্জাবের। জ়িম্বাবোয়ের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইপিএলে অর্ধশতরান করার নজির রয়েছে তাঁর। যদিও খুব বেশি খেলার সুযোগ পাননি। ন’টি ম্যাচ খেলে ১৮২ রান করেছেন। উইকেট নিয়েছেন ৩টি। ন্যূনতম মূল্য ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। তিনিও অবিক্রিত থেকে গিয়েছেন এ বারের নিলামে।

১৪. ডেওয়াল্ড ব্রেভিস

আগামী আইপিএলে দেখা যাবে না দক্ষিণ আফ্রিকার তরুণ ব্যাটার ব্রেভিসকেও। ২০২২ সালে তাঁকে নিয়েছিল মুম্বই। সে বছর অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে নজর কেড়েছিলেন। আইপিএলে ১০টি ম্যাচ খেলে করেছেন ২৩০ রান। স্ট্রাইক রেট ১৩৩.৭২। গড় ২৩। ন্যূনতম মূল্য ছিল ৭৫ লাখ টাকা। তাঁকেও নেয়নি কোনও দল।

১৫. পৃথ্বী শ

কয়েক বছর আগেও দেশের সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্যাটার হিসাবে চিহ্নিত করা হত পৃথ্বীকে। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে বার বার উঠেছে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ। ক্রিকেটের প্রতি অযত্নের অভিযোগও রয়েছে। কিছু দিন আগে মুম্বইয়ের রঞ্জি দল থেকেও বাদ পড়েছিলেন। এ বার আইপিএলেও দল পেলেন না। আইপিএলে ৭৯টি ম্যাচ খেলে করেছেন ১৮৯৩ রান করেছেন। তবে গত দু’মরসুমে দিল্লির হয়ে ১৬টি ম্যাচে করেছেন ১৯৮ রান। ন্যূনতম মূল্য ছিল ৭৫ লাখ টাকা রেখেও এ বার দল পাননি মুম্বইকর।

১৬. শার্দূল ঠাকুর

গত এক দিনের বিশ্বকাপেও ভারতীয় দলে ছিলেন। তার পর ধীরে ধীরে পিছনের সারিতে চলে গিয়েছেন। গত বছর চেন্নাইয়ের হয়ে ন’টি ম্যাচ খেলে পেয়েছিলেন ৫টি উইকেট। এ বার তাঁর ন্যূনতম দাম ছিল ২ কোটি টাকা। আইপিএলের কোনও দল তাঁকে নিয়ে আগ্রহ দেখায়নি।

১৭. পীযূষ চাওলা

দেশের অন্যতম অভিজ্ঞ স্পিনারকেও দেখা যাবে না আগামী আইপিএলে। গত দু’মরসুম মুম্বইয়ের হয়ে খেলেছেন ৩৫ বছরের ক্রিকেটার। আইপিএলে ১৯২টি ম্যাচ খেলে ১৯২টি উইকেট পেয়েছেন। তাঁর ন্যূনতম মূল্য ছিল ৫০ লাখ টাকা।

১৮. মায়াঙ্ক আগরওয়াল

দেশের অন্যতম সেরা তরুণ ওপেনার হিসাবে বিবেচিত হন মায়াঙ্ক। তাঁর দল না পাওয়া বিস্মিত করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশকে। ২০২২ সালে পঞ্জাব এবং ২০২৩ সালে হায়দরাবাদের হয়ে প্রচুর ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু কোনও বারই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। গত বার তাঁকে চারটি ম্যাচে সুযোগ দেয় হায়দরাবাদ। তাতেও ব্যর্থ হন। এ বার তাঁর ন্যূনতম মূল্য ছিল ১ কোটি টাকা।

১৯. নবদীপ সাইনি

দেশের অন্যতম সেরা তরুণ জোরে বোলারকেও আগামী আইপিএলের বাইরে থাকতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ ভাল ফর্মে রয়েছেন নবদীপ। মনে করা হয়েছিল, নবদীপের জন্য একাধিক দল আগ্রহ দেখাবে। কিন্তু কেউ শেষ পর্যন্ত তাঁকে নেয়নি। ২০২৪ সালেও আইপিএল খেলা হয়নি নবদীপের। তাঁর ন্যূনতম মূল্য ছিল ৭৫ লাখ টাকা।

২০. সরফরাজ খান

তরুণ ব্যাটারদের মধ্যে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দেশের অন্যতম সেরা। ২০২৩ সালে শেষ বার দিল্লির হয়ে আইপিএল খেলেছেন। ২০১৫ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে আইপিএলে অভিষেক। বেশ কিছু ম্যাচে সুযোগ পেলেও টি-টোয়েন্টি লিগে নজর কাড়তে পারেননি কখনও। তাঁর ভাই মহসিন খানকে পঞ্জাব নিলেও সরফরাজ অবিক্রিত থেকে গিয়েছেন। তাঁর ন্যূনতম মূল্য ছিল ৫০ লাখ টাকা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy