সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। — ফাইল চিত্র।
বুকে ব্যথা। মঙ্গলবার সিবিআই আদালতে হাজিরাই দিতে পারলেন না নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডির হাতে ধৃত ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। জেল থেকে জানানো হয়েছিল, ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে হাজির করানো হবে তাঁকে। আদালত জানিয়ে দেয়, সিবিআই যে হেতু তাঁকে হেফাজতে চাইছে, তাই সশরীরে আদালতে হাজির করাতে হবে তাঁকে। আগামী ২৮ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার সুজয়কৃষ্ণকে আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। অন্য দিকে, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে হেফাজতে পেয়েছে সিবিআই।
‘কালীঘাটের কাকু’কে আদালতে হাজির করানোর জন্য আবেদন করেছিল সিবিআই। তদন্তের স্বার্থে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চেয়েছিল তারা। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সুজয়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। এখন জেলে রয়েছেন তিনি। তাঁকে হেফাজতে চেয়েছে সিবিআই। যদিও মঙ্গলবার সুজয়কৃষ্ণ আদালতে হাজির হতে না-পারায় তাঁকে হেফাজতে পায়নি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
মঙ্গলবার শুনানির শুরুতে বিচারক জানতে চান, সুজয়কৃষ্ণ, সন্তু এবং শান্তনুকে আদালতে হাজির করানো হয়েছে কি না। তখন জানা যায়, বুকে ব্যথার জন্য সশরীরে হাজিরা দিতে পারেননি সুজয়কৃষ্ণ।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৩০ মে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। গ্রেফতারির পর দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। মাঝে হাসপাতালে হৃদ্যন্ত্রের অস্ত্রোপচারও হয়েছিল তাঁর। তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ নিয়েও টানাপড়েন হয়। এর পর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি আচমকাই জোকা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তার পর ফের এসএসকেএমে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে। এ বার তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চাইছে সিবিআই।
মঙ্গলবার সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয় সন্তুকে। সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। মঙ্গলবার তারা আদালতে দাবি করেছে, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বড় ভূমিকা রয়েছে তাঁর। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ এবং ‘কালীঘাটের কাকু’র হয়ে টাকা তুলেছেন তিনি। গত কয়েক দিন বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্তুর নাম উঠে এসেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। সেই কারণে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সন্তুর আইনজীবী সেলিম রহমান সওয়াল করে বলেন, ‘‘সিবিআই এর আগেও প্রায় ১০ বার সন্তুকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তখন গ্রেফতার না করে এখন তাঁকে গ্রেফতার কেন করল?’’ সিবিআই পাল্টা দাবি করেছে, সাক্ষীদের প্রভাবিত করছেন সন্তু। তদন্তকারীদের আবেদন মেনে সন্তুকে সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
অন্য দিকে, সিবিআই দাবি করেছে, শান্তনু চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা তুলেছেন। তাঁর আইনজীবীর পাল্টা প্রশ্ন, দু’বছরের বেশি সময় ধরে তদন্ত করছে সিবিআই। এত দিন পর কেন শান্তনুকে গ্রেফতার করতে চাইছে? তিনি পার্থের মতো প্রভাবশালীও নন। মঙ্গলবারই ইডি মামলায় হাই কোর্টে জামিন পেয়েছেন তিনি। তার পর সিবিআই কেন হেফাজতে চাইছে? তা হলে কি এটা কোনও ‘কৌশল’? জবাবে সিবিআই জানিয়েছে, কিছু ডিজিটাল প্রমাণ এবং বয়ান থেকে সুজয়কৃষ্ণ এবং শান্তনুর নাম উঠে এসেছে। তাই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন। সেই আবেদন মেনে আদালত শান্তনুকেও চার দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে পাঠিয়েছে। ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত সন্তু এবং শান্তনু সিবিআই হেফাজতে থাকবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy