Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

লকডাউনে সক্রিয় সাইবার অপরাধীরা, অ্যাপে এ বার দিশা

প্রায় প্রতি দিনই কেউ না কেউ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। রেস্তরাঁতে খাবার অর্ডার দিতে গিয়েও ভুয়ো ওয়েবসাইটের ফাঁদে পড়ছেন ক্রেতারা।

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।

সোমনাথ মন্ডল
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ০৫:৪৪
Share: Save:

একে করোনাভাইরাসের আতঙ্ক, তার উপরে লকডাউনে পুলিশের কড়াকড়ি। জোড়া ফাঁপড়ে পড়ে অনলাইনে কেনাকাটাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন হাওড়ার বাসিন্দা সত্যব্রত পাল (নাম পরিবর্তিত)। পেটিএম-এর মাধ্যমে পাওনা মিটিয়ে দিতেন তিনি।

গত মঙ্গলবার হঠাৎ সত্যব্রতবাবুর কাছে ফোন, “আপনার কেওয়াইসি জমা করা নেই। লকডাউনের জন্য বাড়িতে গিয়ে ভেরিফিকেশন করতে পারছি না। অ্যাপ-এর নাম বলছি। অ্যাপে ঢুকে তথ্য জমা করে দিতে পারবেন।” মিষ্টভাষী ওই যুবকের কথার ফাঁদে পড়ে অ্যাপ ডাউনলোড করতে না করতেই ডেবিড আর ক্রেডিট কার্ড থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে গায়েব তাঁর ৭৭ হাজার টাকা!

সত্যব্রতবাবুর মতো অনেকেই এই লকডাউনের সময়ে অনলাইনে কেনাকাটায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। মুদিখানার জিনিস থেকে মদ, বিদ্যুতের বিল থেকে রেস্তরাঁর খাবার— অনলাইনেই লেনদেন কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। বাইরে বেরনোর সুযোগ যে হেতু কম, তাই যাঁরা অনলাইনে কেনাকাটা করতেন না, তাঁরাও এখন পেটিএম, ফোন পে, গুগল পে-এর মতো অ্যাপনির্ভর কেনাকাটা করছেন। আবার অনেকে অনলাইন ব্যাঙ্কিংও করছেন।

আরও পড়ুন: আতঙ্ক কাটাতে করোনা লড়াইয়ে ভরসা গবেষকেরা

অন্য দিকে ‘ঝোপ বুঝে কোপ’ মারতে ফাঁদ পেতে তৈরি সাইবার অপরাধীরা। নানা ধরনের নতুন পন্থায় পকেট কাটছে তারা। যে অ্যাপটির লিঙ্ক পাঠানো হয়েছিল, সেটি গুগল প্লে স্টোর থেকে নামিয়ে ছিলেন সত্যব্রতবাবু। তাঁর মতোই সল্টলেক বৈশাখীর বাসিন্দা রাজা ভট্টাচার্য (নাম পরিবর্তিত)। ছেলের ‘এডুকেশন লোন’-এর জন্য অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সব সময়েই রেখে দেন রাজা। ঠিক একই ভাবে ফোনটি এসেছিল তাঁর ছেলের কাছে। বলা হয়েছিল, লোন-এর জন্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা পাওয়া যাবে। এ ভাবেই কথা বলতে বলতে, হাজার দেড়েক টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল প্রতারকেরা।

শুধু এই দু’টি ঘটনাই নয়। প্রায় প্রতি দিনই কেউ না কেউ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। রেস্তরাঁতে খাবার অর্ডার দিতে গিয়েও ভুয়ো ওয়েবসাইটের ফাঁদে পড়ছেন ক্রেতারা। এমনকি মদের দোকানের ছবি-ফোন নম্বর দিয়ে ফেসবুকে নকল পোস্টও করা হচ্ছে। এ ভাবেই টাকা গায়েব হচ্ছে, নানা নানা ভাবে। ক্রেতা যখন সব বুঝছেন, তখন অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে। জমানো টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে অ্যাকাউন্ট থেকে।

আরও পড়ুন: পড়শিদের মানবিকতায় আপ্লুত ‘বন্দি’ কাশ্মীরিরা

কিন্তু তার আগেই কী ভাবে প্রতারণা ঠেকানো সম্ভব? প্রতারিত হলে, সঙ্গে সঙ্গে কী করা উচিত? আইনেই বা কী বিধান আছে? তা অনেকই জানেন না। এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে বাংলায় চালু হল অ্যাপ। এমন নানা প্রশ্নের উত্তর মিলবে ওই অ্যাপে। কী ভাবে সাইবার অপরাধীদের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব, তার উপায়ও বাতলে দেওয়া হয়েছে সেখানে।

সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় সাইবার অপরাধ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা করেন। মাথায় চিন্তা এসেছিল যদি মানুষকে আগে থেকেই সচেতন করা যায়, তা হলে কেমন হয়? সেই চিন্তা থেকেই এই ‘অ্যাপ’-এর তৈরি। ‘গুগল প্লে স্টোর’-এ গিয়ে লিখতে হবে ‘‘সাইবার ল’জ ইন বেঙ্গলি’’। অ্যাপ ডাউনলোড হয়ে যাবে। অ্যাপ খুললেই লেখা উঠবে ‘বাংলায় সাইবার আইন’। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য পেয়ে যাবেন হাতের মুঠোয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Cyber Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy