Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনা সংক্রমণ মোকাবিলার সঠিক পথ কি আসলে হারিয়ে গিয়েছে

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর নিরিখে প্রথম থেকে দ্বিতীয় সারিতে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। এখন প্রথম সারিতে।

যত বেশি উপসর্গহীন রোগী শনাক্ত হবেন, তত রোগ কম ছড়াবে। ছবি: পিটিআই।

যত বেশি উপসর্গহীন রোগী শনাক্ত হবেন, তত রোগ কম ছড়াবে। ছবি: পিটিআই।

দেবদূত ঘোষঠাকুর
শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ১১:৩০
Share: Save:

এ কি এক উল্টোপথে চলা?!

দেশের অন্য রাজ্য থেকে আমরা পিছিয়ে ছিলাম প্রথম থেকে। তাতেও সংক্রমণের গ্রাফ উপরের দিকে উঠছিল। একটাই সান্ত্বনা ছিল— দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে পশ্চিমবঙ্গের আগে অন্তত ছ’সাতটা রাজ্য ছিল। আমরা ভাবছিলাম, যাক আমরা তো মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু হয়ে যাইনি!

কিন্তু সেই সন্তুষ্টির জায়গাটা আর থাকল কোথায়? করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়ানোর নিরিখে প্রথম থেকে দ্বিতীয় সারিতে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। এখন প্রথম সারিতে। সামনে শুধু দিল্লি। চিকিৎসক, জীবাণু বিশেষজ্ঞেরা জানিয়ে দিয়েছেন, এ ভাবে চললে দেওয়ালির আশপাশে এই রাজ্য দিল্লিকেও ছুঁয়ে ফেলবে।

এমতাবস্থায় দরকার ছিল দৈনিক করোনা পরীক্ষার হার অনেকটা বাড়ানো। উচিত ছিল এলাকায় এলাকায় শিবির বসিয়ে উপসর্গহীন করোনা রোগীদের পরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করা। নইলে ওই সব রোগীরা রোগ ছড়াতেই থাকবেন। এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘কোনও একটা সংক্রমণ যখন বাড়ে, তখন রোগী চিহ্নিতকরণের হার বাড়াতে হয়। সব রোগীকে চিহ্নিত করা না গেলে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ টেনে গোষ্ঠী সংক্রমণের কথা স্বীকার করেছেন। এই সময়েই করোনা পরীক্ষার হার বহুগুণে বাড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু পুজোর মুখে দৈনিক পরীক্ষার হার হঠাৎ করে অনেকটাই কমে গিয়েছিল। রোগ সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র তাই প্রকাশ্যে আসছে না।’’

আরও পড়ুন: দৈনিক সুস্থতার হার সর্বোচ্চ, দেশে সক্রিয় করোনা রোগী কমে ৬ লক্ষ​

অক্টোবর মাসের প্রথম ৩ সপ্তাহের মধ্যে দেশে করোনা রোগীর দৈনিক সংক্রমণের হার ৯৫ হাজার থেকে ৫৫ হাজারে নেমে এসেছে। দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও হাজারের গন্ডি থেকে অনেকটা নেমে গিয়েছে। কিন্তু সেই একই সময়কালে পশ্চিমবঙ্গে দৈনিক সংক্রমণের হার সাড়ে ৩ হাজার থেকে বেড়ে ৪ হাজারের গন্ডি ছাড়িয়েছে (যদিও ১ সপ্তাহ পর মঙ্গলবার দৈনিক নতুন সংক্রমণ ৪ হাজারের নীচে নেমেছে)। মৃত্যুর হার গড়ে ৫৫ থেকে বেড়ে ৬৫ হয়েছে। কলকাতায় দৈনিক সংক্রমণ এক সময় ৭০০-তে নেমে গিয়েছিল। তা ফের ৯০০-র কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। পাশাপাশি, অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দৈনিক রোগী শনাক্তকরণের হার কমেছে।

আরও পড়ুন: এক সপ্তাহ পর রাজ্যে নতুন আক্রান্ত ৪ হাজারের নীচে, বাড়ছে সুস্থতার হারও

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা প্রথম থেকেই বলে আসছেন, অন্য সংক্রামক রোগের মতো করোনাভাইরাসকে হারাতে দু’টি বিষয়ের উপর জোর দিতে হবে। এক, রোগ সংক্রমণের সঠিক তথ্য প্রকাশ করা এবং দ্বিতীয়ত, আক্রান্তদের অধিকাংশকে খুঁজে বার করা। তার জন্য দরকার দেহরসের (রক্ত কিংবা লালারস) পরীক্ষা শুরু করা। তাতে কোথায় কোথায় কে বা কারা উপসর্গহীন কোভিড-১৯ শরীরে নিয়ে বসে আছেন, তাঁদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে। ভাইরোলজিস্টদের অনেকেই বলছেন, বেশি সংখ্যায় পরীক্ষা হলে উপসর্গহীন করোনা রোগীদের শনাক্ত করা যাবে। না হলে ওই সব রোগী আরও অনেককে সংক্রমিত করবেন। কারণ, উপসর্গহীন রোগীরাই ‘সুপার স্প্রেডার’। তাঁরা এক সঙ্গে অনেককে সংক্রমিত করেন। তাই যত বেশি উপসর্গহীন রোগী শনাক্ত হবেন, তত রোগ কম ছড়াবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy