ধৃতদের আদালতে হাজির করাতে থানা থেকে বার করার মুহূর্তের ছবি। —নিজস্ব চিত্র।
রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রথমে বরযাত্রীর বাসে এবং পরে একটি লরিতে লুটপাটের ঘটনায় দুই ‘মাস্টারমাইন্ড’কে গ্রেফতার করল পুলিশ। লুটের ঘটনার তদন্তে আন্তঃরাজ্য চক্রের যোগ ছিল বলে আগেই জানান তদন্তকারীরা। এ বার সেই চক্রের দুই মাথাকে তেলঙ্গানা থেকে গ্রেফতার করল বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিষ্ণুপুর পুলিশ তেলঙ্গানায় হানা দেয়। সেখানেই গোপন আস্তানা থেকে দুই অভিযুক্তকে ধরে পুলিশ। সোমবার ট্রানজিট রিমান্ডে দুই ধৃতকে বিষ্ণুপুর নিয়ে আসে তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই ধৃতের নাম আইসুর মল্লিক ওরফে অ্যাডাম এবং জহুর মণ্ডল ওরফে জলিল। জঙ্গলের রাস্তায় লুটের ঘটনার পর থেকেই দু’জন রাজ্য ছেড়ে পালান। গা-ঢাকা দেন সুদূর তেলঙ্গানায়। খবর পেয়ে সেখানেই পৌঁছে যায় বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় দুই অভিযুক্তের আস্তানায় অভিযান চালায় তারা। সেখান থেকেই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
কী ভাবে ধৃতদের খোঁজ পেল পুলিশ? গত ৩০ নভেম্বর রাতে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থানার ঢেঙাশোল জঙ্গলের রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে বরযাত্রীবোঝাই একটি বাস এবং একটি ট্রাক আটকায় জনা কয়েক দুষ্কৃতী। আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে দু’টি গাড়িতেই লুটপাট চালানো হয়। বরযাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ছাড়াও বেশ কিছু অলঙ্কার নিয়ে চম্পট দেয় তারা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, পাঁচ জনের দুষ্কৃতীদল এই লুটপাট চালিয়েছিল। লুটপাট চালানোর পর জঙ্গলের মধ্যেই গা-ঢাকা দেয় দুষ্কৃতীরা। তবে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েও তাদের খোঁজ পায় না।
ঘটনাস্থলের আশপাশের মোবাইল টাওয়ার লোকেশান খতিয়ে দেখা শুরু করেন তদন্তকারীরা। কাজে লাগানো হয় স্থানীয় সূত্রকে। সেই সূত্র ধরে আগেই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকা সন্দেহে তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাদেক আলি খান ওরফে পিচি, মজিবুর খান ও সামসুদ্দিন মণ্ডলকে জেরা করে আইসুর এবং জলিলের কথা জানা যায়। দু’জনেই গড়বেতা থানার ছোট আঙারিয়া গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই গ্রামছাড়া। বিভিন্ন প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে তদন্তকারীরা জানতে পারেন দুই ‘মাস্টারমাইন্ড’ তেলঙ্গানায় গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে। গত ৮ জানুয়ারি তেলঙ্গানার রঙ্গারেড্ডি জেলার কোকাপেট এলাকায় হানা দিয়ে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ। সোমবার রাতে অভিযুক্তদের নিয়ে বিষ্ণুপুর ফেরেন তারা।
বাঁকুড়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকসুদ হাসান বলেন, ‘‘দুই অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে আদালতে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে খোয়া যাওয়া সামগ্রী উদ্ধার করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি এই চক্রে আর কেউ যুক্ত রয়েছেন কি না, সে বিষয়েও তথ্য মিলবে বলে আশা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy