ফাইল চিত্র।
রাজ্যের সদ্য-নির্বাচিত দুই মন্ত্রী সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়ে আছেন। তাঁদের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তাদের কাজে বাধা সৃষ্টির অভিযোগ এনেছে সিবিআই। এই আবহে আজ, বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখোমুখি হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ রাজ্যের ও দেশের রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলেছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর মুখোমুখি হওয়া বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
এ দিন নবান্ন সভাঘর থেকে ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং স্বাস্থ্যসচিব। কোভিড পর্যালোচনা ওই বৈঠকের বিষয়বস্তু হলেও রাজনৈতিক ভাবে উত্তপ্ত এমন আবহে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুধুমাত্র কোভিড ব্যবস্থাপনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি আরও কোনও বার্তা দেবেন, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ-সহ দশটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের এড়িয়ে সরাসরি প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠক ডেকে গত ১৩ মে চিঠি পাঠিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। জানানো হয়েছিল, প্রশাসনিক কর্তাদের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী সরাসরি কথা বলবেন বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীদের বাদ দিয়ে এ ভাবে বৈঠক ডাকা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল। এ রাজ্যের প্রশাসনও বিষয়টিকে ভাল ভাবে নেয়নি। তার পরে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়ে দেয়, বৈঠকে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রীরাও। তাই আজকের
বৈঠকে জেলাশাসকেরা থাকবেন কি না, স্পষ্ট হয়নি।
কোভিড নিয়ন্ত্রণে সরাসরি লকডাউন না-করা হলেও কার্যত তেমনই ব্যবস্থা করেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা অনেকেই জানাচ্ছেন, সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে, তাতে কোভিড-বিধি পালনে কঠোর হতেই হবে। সেই সূত্রেই সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এমন পরিস্থিতিতে খুব প্রয়োজন না-হলে কাউকে গ্রেফতার করার ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে বলেছে আদালত। অভিযোগ, সেই নির্দেশ কার্যত অগ্রাহ্য করেই দুই মন্ত্রী এবং এক জন বিধায়ককে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, প্রবীণ মন্ত্রী বা বিধায়কেরা কোথাও পালিয়ে যাচ্ছেন না, অথবা তদন্তে অসহযোগিতা করবেন, এমনও বলছেন না। তার পরেও বাড়তে থাকা কোভিড সংক্রমণের মধ্যে তাঁদের গ্রেফতার করা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের অনুমান, প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে এই সব ঘটনাপ্রবাহের একটা প্রতিফলন থাকলেও থাকতে পারে।
প্রশাসনের অন্দরের খবর, কোভিড ব্যবস্থাপনার পরিকাঠামোর দিক থেকে যথাসম্ভব প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য। কিন্তু অক্সিজেন এবং প্রতিষেধকের জোগান নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, অতি দ্রুত যত বেশি সম্ভব মানুষকে প্রতিষেধকের আওতায় আনা না-গেলে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ ঠেকানো সম্ভব নয়। বস্তুত, অনেক দিন আগে থেকেই প্রতিষেধকের জোগান নিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী বারবার চিঠি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। বিদেশ থেকে প্রতিষেধক এনে ঘাটতি মেটানো ছাড়াও প্রতিষেধক তৈরি করার জন্য রাজ্যের তরফে জমি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে কোভিড মোকাবিলার প্রশ্নে কেন্দ্রকে বারবার সহযোগিতার বার্তাই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যে প্রতিষেধকের জোগান এখনও পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছয়নি। ফলে এই দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ফের টিকার জোগান নিয়ে সরব হতে পারেন বলে প্রশাসনের অন্দরের ধারণা।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ এবং উত্তর-পূর্বের আটটি রাজ্যের সঙ্গে বুধবার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। তার পরে কেন্দ্রের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা, মৃত্যুহার এবং সংক্রমণের হারের ক্ষেত্রে এই সব ক’টি রাজ্যেই ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলায় সংক্রমণের লেখচিত্র বাড়ছে। কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং নদিয়া জেলাকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ-ও বলা হয়েছে, ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের টিকাকরণের হার পশ্চিমবঙ্গে ২৫%। এ ক্ষেত্রে জাতীয় গড় ৩২%।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy