ওষুধের অর্ডার নেওয়া হচ্ছে পিপিই স্যুট পরে।—ছবি এএফপি।
এনআরএসে সিসিইউ-কাণ্ডের এগারো দিন পরে সেই ঘটনার সূত্রে আক্রান্ত হলেন এক নার্স। একই দিনে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ যোগে সদ্য মা-হওয়া এক জন-সহ আরও তিন জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। পাশাপাশি, গার্ডেনরিচ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক করোনা পজ়িটিভ সাফাইকর্মীর সংস্পর্শে আসায় চার জন চিকিৎসক-সহ ২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হবে।
এ দিন নবান্নে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, রাজ্যে আরও ২৪ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু একই সঙ্গে ন’জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামতের ভিত্তিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা সাত থেকে বেড়ে হয়েছে ১০। বুধবার রাজ্যে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল ১৩২। নতুন করে ২৪ জন করোনা-আক্রান্ত হলেও তিন জনের মৃত্যু এবং ন’জন ছুটি পাওয়ায় সেই সংখ্যা হল ১৪৪।
গত পাঁচ এপ্রিল এনআরএসের সিসিইউয়ে চিকিৎসাধীন এক যুবকের মৃত্যুর পরে তাঁর দেহে করোনা ধরা পড়ার কথা জানা গিয়েছিল। এর পরে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ প্রায় ৮০ জনকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে অনেকের নমুনা পরীক্ষাও করানো হয়। কিন্তু তখনই কিছু ধরা না-পড়লেও গত বৃহস্পতিবার থেকে জ্বরে ভুগছিলেন সেই সিসিইউয়ে কর্মরত এক নার্স। সোমবার তাঁর লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এ দিন জানা যায়, তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ। পাশাপাশি, আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন তিলজলার বাসিন্দা ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধা, কাশীপুর রোডের বাসিন্দা ৬৬ বছরের আর এক বৃদ্ধ এবং এনআরএসের স্ত্রীরোগ বিভাগে চিকিৎসাধীন এন্টালির এক মহিলার করোনা-রিপোর্টও পজ়িটিভ আসে। এই তিন জনের মধ্যে রিপোর্ট আসার আগেই তিলজলার বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। কাশীপুরের বাসিন্দা এবং প্রসূতি ও তাঁর সদ্যোজাত সন্তানকে বাঙুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: লোক মেলেনি, নিজেরাই নিজেদের লালারস সংগ্রহ করে ট্রপিক্যালে গেলেন কোয়রান্টিনে থাকা পিজিটিরা
স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, নার্স ও প্রসূতির ঘটনায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ৮৮ জনের একটি তালিকা তৈরি হয়েছিল। এঁদের মধ্যে ১১ জন চিকিৎসক-সহ ১৯ জনকে কোয়রান্টিনে পাঠাতে বলা হয়েছে। প্রসূতি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় লেবার রুমের সঙ্গে প্রসবের আগে যেখানে মাকে রাখা হয় সেই ওয়ার্ড এবং প্রসবের পরে যে ওয়ার্ডে সদ্যোজাত ছিলেন, দু’টি ওয়ার্ডই জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে যে প্রসূতির দেহে করোনা ধরা পড়েছিল, তাঁর সদ্যোজাতের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
গার্ডেনরিচের ঘটনা প্রসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, আক্রান্ত মহিলা হাসপাতালের সাফাইকর্মী। জ্বর নিয়ে ক’দিন আগে তিনি মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন। এখন করোনা ধরা পড়ায় মোট ২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করাতে হবে। এ দিন নদিয়া জেলায় এক করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে।
আরও পড়ুন: ভয় কিসের? বেলগাছিয়া বস্তিতে করোনা-যুদ্ধে বলছেন ওঁরা
এনআরএসের আক্রান্ত নার্স আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখান থেকে এ দিন ছাড়া পেয়েছেন শরৎ বসু রোডের বেসরকারি হাসপাতালের আক্রান্ত চিকিৎসক এবং মধ্যমগ্রামের কাউন্সিলর।
ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে মেডিসিন বিভাগের এক পিজিটি’র দেহে বুধবার করোনা ধরা পড়েছিল। মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়নি।’’
বুধবার রাজ্যের চারটি জেলাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে বলেছে কেন্দ্র। এ প্রসঙ্গে মুখ্যসচিবের ব্যাখ্যা, ‘‘স্বাস্থ্য রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত। কোভিড জাতীয় বিপর্যয়, তাই কেন্দ্র পদক্ষেপ করছে। এ নিয়ে কেন্দ্র বা রাজ্যের বিরোধ নেই। কেন্দ্র রেড, অরেঞ্জ বা গ্রিন— যে ভাবেই ভাগ করুক, সংক্রমণের এলাকা যাতে না-বাড়ে, তার জন্য রাজ্য কঠোর ভাবে কাজ করছে। এ নিয়ে বিতর্কের কারণ নেই।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy