প্রতীকী ছবি।
উত্তর থেকে দক্ষিণ—যে সব জেলায় লাফিয়ে বেড়েছিল করোনা-আক্রান্ত, এখন সেখানে সুস্থতার হার বাড়ছে। তবে বহু ক্ষেত্রেই ভিন্ রাজ্য ফেরতদের কোয়রান্টিন শেষেও লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লির মতো সংক্রমণ-প্রবণ রাজ্য থেকে ফেরার পরেও নির্দিষ্ট সময়ে নেওয়া হয়নি নমুনা। কোয়রান্টিন পর্ব কাটিয়ে বাড়ি ফেরার পরে পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে, এমন দৃষ্টান্তও রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর-সহ নানা জেলায়। বহু ক্ষেত্রে আবার রিপোর্ট অমীমাংসিত।
মালদহ মেডিক্যালে দিনে ৭০০-৮০০ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। যদিও দক্ষিণ দিনাজপুরের নমুনা যাচ্ছে মালদহ ও শিলিগুড়িতে। একটি মাত্র ট্রুন্যাট মেশিন চালু থাকায় কোচবিহার লালারস পরীক্ষায় অনেকটাই পিছিয়ে। তবে আলিপুরদুয়ারে তিনটি হাসপাতালে ৬টি ট্রুন্যাট মেশিনে চলছে পরীক্ষা। জলপাইগুড়িতে করোনা পরীক্ষা আগের থেকে কমেছে। উত্তরবঙ্গ জুড়ে রয়েছে একাধিক করোনা হাসপাতাল। জেলায় জেলায় হয়েছে ‘সেফ হোম’ও। দার্জিলিঙের মাটিগাড়া ও কাওয়াখালির দুই কোভিড হাসপাতালে পরিকাঠামোয় খামতির অভিযোগ আছে।
যে সব জেলায় পরিযায়ীরা স্রোতের মতো ফিরেছেন, সেখানে নিয়ম মেনে সকলের করোনা পরীক্ষা হয়নি বলেই অভিযোগ। যেমন মুর্শিদাবাদে প্রায় দু’লক্ষ পরিযায়ী ফিরলেও সরকারি হিসেবে মাত্র ১৪,৫০১ জনের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ফেরা প্রায় ৭১ হাজার পরিযায়ীর মধ্যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ২৫,৩৯২ জনের, অর্থাৎ ৩৫ শতাংশের। চিকিৎসক তথা বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের মতে, “বাইরে থেকে আসা সকলেরই লালারসের নমুনা পরীক্ষা করানো দরকার। অথচ তা হচ্ছে না। রিপোর্ট পেতেও দেরি হচ্ছে। ফলে রোগ ছড়াচ্ছে।” মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস অবশ্য বলছেন, ‘‘কাদের করোনা পরীক্ষা হবে সে বিষয়ে আইসিএমআরের নির্দেশিকা রয়েছে। তা মেনেই করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। ফলে কম পরীক্ষা হওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।’’ স্বাস্থ্য দফতরের ব্যাখ্যা, ঘরমুখী পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা কমায় স্বাভাবিকভাবেই নমুনা সংগ্রহ কমেছে। পশ্চিম বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার আবার জানালেন, ‘র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট’-এর গাইডলাইন আসেনি।
নদিয়া ও বীরভূমে দিনে গড়ে ৬০০-৬৫০ নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে। নদিয়ায় মেডিক্যাল টেকনোলজিল্ট ও টেকনিশিয়ানের অভাবে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সব নমুনা যাচ্ছে এসএসকেএম-এ। রিপোর্ট আসতে দিন সাতেক লাগছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে খড়্গপুর-সহ নানা জায়গাতেও রিপোর্ট দেরিতে আসছে বা অমীমাংসিত থাকছে। ঠিকমতো নমুনা সংগ্রহ করতে না পারায় রিপোর্ট অমীমাংসিত থাকছে বলে অভিযোগ। ফলে, নষ্ট হচ্ছে কিট। কারণ ফের নমুনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, ‘‘কিছু সমস্যা ছিল। এখন তা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে।’’
দক্ষিণবঙ্গেও করোনা হাসপাতাল নিয়ে রয়েছে অভিযোগ। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের কোভিড হাসপাতালে করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা হয় না। আক্রান্তকে বারাসত কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়। আর জেলার কোনও মহকুমাতেই করোনা আক্রান্তের চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। ঝাড়গ্রামে আবার সুপার স্পেশালিটির যে ‘নাইট শেল্টার’ ভবনে করোনা হাসপাতাল হচ্ছে, সেখানে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা, লিফট, র্যাম্প নেই। সঙ্কটজনক রোগীদের স্ট্রেচারে খাড়াই সিঁড়িতে নিয়ে যাওয়া কী ভাবে সম্ভব, প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকদেরই একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy