Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

আতঙ্ক নয়, বিধি মেনে সতর্ক থাকতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

মুখ্যমন্ত্রী এ দিনও বিধি মেনে দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন।

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী।—ছবি পিটিআই।

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৮
Share: Save:

লকডাউন শেষ হলেই করোনার প্রাদুর্ভাব শেষ হয়ে যাবে, এমন ভাবার কারণ নেই বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার করোনা-পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে তিনি জানান, নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সম্পূর্ণ নতুন রোগ। ফলে রাতারাতি তা চলে যাবে বলে মনে করা উচিত হবে না। তাই আতঙ্কিত না হয়ে বরং বিধি মেনে, সতর্ক থাকা প্রয়োজন। এই বিষয়ের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়ার পরিসংখ্যানের উল্লেখ করেছেন।

রাজ্য সরকারের ব্যাখ্যা, এক সময় ম্যালেরিয়া বহু মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। উপযুক্ত ওষুধ-চিকিৎসায় এখন সেই রোগ অনেক নিয়ন্ত্রণে। আবার ডেঙ্গিও প্রতি বছর তার চরিত্র বদলেছে। ফলে নতুন চরিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিমার্জন করতে হয়েছে। তাতে ডেঙ্গিতে মৃত্যুর হার ৫০-এর মধ্যেই ধরে রাখা গিয়েছে গত কয়েক বছর ধরে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘সকলে পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত দিনে দিনে আক্রান্ত বাড়ে। তাতে চিন্তার কারণ নেই। চিন্তা একটাই, রোগটা নতুন। নতুন করে পথ খুঁজতে হচ্ছে, কী ভাবে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। রোগ-জীবাণু এলে এক দিনে তা শেষ হবে ভাবার কারণ নেই। এটা চলবে ধরে নিতেই হচ্ছে। কারণ, রোগের একটা ইতিহাস রয়েছে। ১৪ দিনের লকডাউনের পরে শেষ হবে, তা ভাবার কারণ নেই। তবে এই রোগে অনেকে ভাল হচ্ছেন। ওষুধ কাজে দিচ্ছে। এটা ভাল দিক। আমাদের এখানে ওষুধের সমস্যা নেই।’’

এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৬১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায় ‘‘তাঁদের মধ্যে ৫৫ জন মাত্র সাতটি পরিবার থেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। তিন জনের মৃত্যু হলেও ১৩ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন।’’ বেলেঘাটা আইডি-তে থাকা রোগীদের মধ্যে ১২ জনের শারীরিক অবস্থার উন্নতির লক্ষণ দেখা গিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের জনসংখ্যা বিপুল। একাধিক রাজ্য এবং দেশের সীমানা রয়েছে এ রাজ্যের সঙ্গে। বিদেশ থেকে কয়েক লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। সরকার লক্ষ করেছে, সাতটি এলাকা থেকে সব চেয়ে বেশি করোনা-আক্রান্তের তথ্য মিলেছে। কালিম্পং-এ এক পরিবারের ১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। কমান্ড হাসপাতালে আক্রান্ত চিকিৎসকের পরিবারের পাঁচ জন, তেহট্টে পাঁচ জন, এগরায় বিয়েবাড়ির বিদেশি যোগে ১২ জন, হাওড়ায় ৮ জন, কলকাতায় ১২ জন এবং হলদিয়ায় দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন। অবশ্য এক জনের মৃত্যুর পরে কালিম্পং-এর পরিবারের ১০ জনের মধ্যে চার জনের নমুনা পরীক্ষার ফল ‘নেগেটিভ’ এসেছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘মোট করোনা-আক্রান্তের ৯৯ শতাংশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক যোগ রয়েছে।’’

মুখ্যমন্ত্রী এ দিনও বিধি মেনে দূরত্ব বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জোগান স্বাভাবিক থাকায় একসঙ্গে যাতে সকলে ভিড় না জমান, তার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। যাঁরা হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, কিডনি, উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগে ভুগছেন, তাঁদের সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। চলতি পরিস্থিতিতে এমন রোগীদের চিকিৎসার দরকার হলে কলকাতায় বাঙুর হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘এই ধরনের রোগীর চিকিৎসার জন্য যাঁরা কলকাতায় আসছেন, তাঁরা বাঙুরে ভর্তি হন। মেডিক্যাল কলেজ, এনআরএস বা এসএসকেএম হাসপাতালে যাবেন না। কারণ, এই ধরনের রোগীদের উপযুক্ত পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বাঙুরে।’’ রাজ্য সরকার আবেদন জানিয়েছে, প্রত্যেককে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হবে। আর পাড়ায় কোনও করোনা-আক্রান্তের খবর জানা গেলে সেই রোগীর সঙ্গে যেন অমানবিক আচরণ করা না হয়।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy