Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

গুরুত্ব বাড়ছে সেফ হোমের

সম্প্রতি রাজ্যের ‘সেফ হোম’ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২০ ০৪:৫৬
Share: Save:

রাজ্যে বেড়েই চলেছে করোনা সংক্রমণ। কিন্তু, সরকারি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যা সীমিত। সব রোগীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন না থাকলেও অনেকে ভর্তি হওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলির উপর চাপ কমাতে মৃদু উপসর্গযুক্ত বা উপসর্গহীন রোগীদের জন্য সরকার তৈরি রেখেছে ‘সেফ হোম’।

সম্প্রতি রাজ্যের ‘সেফ হোম’ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবাও। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও সেফ হোমের উপরে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছেন। যাঁরা সেফ হোমে যাচ্ছেন, তাঁদের জন্য সরকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেমন, সেখানে অক্সিজেনের ব্যবস্থা‌ ও বিশেষ চিকিৎসক দল থাকবে।‌ প্রতিটি সেফ হোমকে একটি কোভিড হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। কোনও রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে দ্রুত সেখানে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত রাখা হচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্স।

বেশি সংক্রমিত জেলাগুলিতে সেফ হোমের গুরুত্ব আরও বেশি। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যার নিরিখে কলকাতার পরে যে জেলা নিয়ে রাজ্য সরকারের সবচেয়ে মাথাব্যথা, সেই উত্তর ২৪ পরগনায় সেফ হোম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শুক্রবার ভিডিয়ো কনফারেন্সে বিধানসভার মুখ্য সচেতক তথা পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ ও বেশ কিছু পুরসভার চেয়ারম্যানের বৈঠক হয়। মুখ্য সচেতক বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই জেলায় ১৬টি সেফ হোম চালু করা গিয়েছে। প্রতিটি জায়গায় অক্সিজেন, অক্সিমিটার, ভ্রাম্যমান এক্স-রে থাকছে। তবে ব্যারাকপুরে সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে একটি বড় কোভিড হাসপাতাল করার পরিকল্পনাও আছে।’’ এক জন নোডাল অফিসার সেফ হোম ও হাসপাতালের মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্বে আছেন। বনগাঁ ও হাবড়া ১ ব্লকের সেফ হোমের জন্য তিনটি করে ও রাজারহাটে দু’টি এবং অন্যগুলিতে একটি করে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স বরাদ্দ করা হয়েছে।

সেফ হোমগুলি নিয়ে বিরাট কোনও অভিযোগের কথা এখনও সামনে আসেনি। তবে বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু অব্যবস্থার খবর পাওয়া যাচ্ছে। দিন কয়েক আগেই জলপাইগুড়ির রানিনগরে সেফ হোমে খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। রায়গঞ্জের বোগ্রাম এলাকায় ক্রেতা সুরক্ষা ভবনে ৫৮ জনকে রাখার সেফ হোম রয়েছে। অভিযোগ, সেখানে পানীয় জল সরবরাহে সমস্যা, খাবার সময়মতো মেলে না, বাসি খাবার দেওয়া হয় এবং শৌচাগারও অপরিষ্কার। এই নিয়ে ক্ষুব্ধ রোগীরা সম্প্রতি পথ অবরোধও করেন। মালদহের সাতটি সেফ হোমের একাংশেও খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। মালদহ পলিটেকনিক কলেজে পুরসভার সেফ হোমে মাঝে মধ্যেই লোডশেডিং চলে।

পশ্চিম মেদিনীপুরে চারটি সেফ হোম চালুর কথা ছিল। এখনও পর্যন্ত চালু হয়েছে শুধু ডেবরায়। ২৪ জুলাই তা চালুর হতেই প্রায় ৪০টি শয্যা ভরে গিয়েছে। তবে অপরিচ্ছন্ন চত্বর, ছারপোকার কামড়ে ক্ষুব্ধ রোগীরা। খড়্গপুর থেকে যাওয়া এক করোনা আক্রান্ত তরুণীর কথায়, “খাবারের মান প্রথম দু’দিনের তুলনায় ভাল হয়েছে। কিন্তু একমাত্র শৌচাগার খুবই অপরিচ্ছন্ন। নানা পোকামাকড় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর চিকিৎসক চার দিনে মাত্র এক দিন এসেছিলেন।’’ ডেবরার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আরিফ হাসানের বক্তব্য, “ভবন পুরনো হওয়ায় যতই ঘষা-মাজা করা হোক, কিছু সমস্যা থাকবেই।” এই জেলার দাসপুরেই সংক্রমিতের সংখ্যা তিনশোর কাছাকাছি। আর খড়্গপুর শহর একাই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। অথচ জুলাই মাসে ঘাটাল ও খড়্গপুরে সেফ হোম চালুর কথা থাকলেও তা হয়নি।

বর্ধমান শহরে নির্মীয়মাণ কৃষি ভবনে গড়ে তোলা সেফ হোমে দেড়শো জনের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে। আপাতত সেখানে ভর্তি আছেন ৪৩ জন। প্রথম দিন সেখানকার খাবার নিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠেছিল। তার পর থেকে অবশ্য পরিষেবা নিয়ে তেমন কোনও অভিযোগ নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Safe Home
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy