প্রতীকী ছবি।
সরাসরি নির্দেশিকা নয়। তবে অ্যাডভাইজ়রির সাহায্যে বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার খরচে রাশ টানতে পারে স্বাস্থ্য কমিশন। সেই লক্ষ্যে আট দফা অ্যাডভাইজ়রি জারি হয়েছে। স্বাস্থ্য কমিশন সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে খরচের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার লক্ষ্যে আরও দু’টি নির্দেশিকা জারি করা হতে পারে। এই দুই নির্দেশিকার হাত ধরে অন্য রাজ্যের তুলনায় বঙ্গে করোনা চিকিৎসার খরচ পরিকল্পিত উপায়ে নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যাপারে আশাবাদী কমিশন।
মহারাষ্ট্র, দিল্লি, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ-সহ প্রায় সব রাজ্যেই কোভিড পরিস্থিতিতে বেসরকারি হাসপাতালের খরচে লাগাম টেনে নির্দেশিকা জারি করেছে। প্রতিদিনের খরচ বেঁধে দেওয়ার পাশাপাশি তার মধ্যে চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে সম্পর্কিত কী কী বিষয় যুক্ত রয়েছে, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের নির্দেশিকায়। এনএবিএইচ (ন্যাশনাল অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড ফর হসপিটালস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারস) অনুমোদিত হাসপাতাল হলে আইসোলেশন বা সাধারণ শয্যার প্রতিদিনের খরচ, আইসিইউ ভেন্টিলেটর যুক্ত এবং ভেন্টিলেটর ছাড়া হলে কত খরচ হবে, কী ধরনের ল্যাব পরীক্ষার জন্য আলাদা করে টাকা দিতে হবে না— সে সবেরই উল্লেখ রয়েছে ভিন রাজ্যের নির্দেশিকায়।
এ রাজ্যে ঘোষণা হলেও এখনও পর্যন্ত এ ধরনের কোনও নির্দেশিকা জারি হয়নি। সরকার অধিগৃহীত কোভিড হাসপাতালে প্রথম দিন এবং পরবর্তী ১৩ দিন পর্যন্ত করোনা চিকিৎসার খরচে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা আবার সবক’টি বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকের ফি, পিপিই-সহ কোভিড প্রোটেকশন চার্জ, নমুনা পরীক্ষার খরচ বেঁধে দেওয়ার সংক্রান্ত একের পর এক অ্যাডভাইজ়রি জারি করেছে কমিশন। স্বাস্থ্য কমিশন সূত্রে খবর, এরপরও ঘুরপথে রোগীর পরিজনের কাছ থেকে নানা ভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে। সেরকমই একটি ঘটনার কথা কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: জয়েন্ট কৃতীর কাউন্সেলিং বিনা ফি-তে
পশ্চিমবঙ্গ সরকার অধিগৃহীত কোভিড হাসপাতালের খরচ সংক্রান্ত নির্দেশিকা
• আইসিইউ প্রথম দিন ২২২০০ টাকা। অন্য দিন (সর্বোচ্চ ১৩ দিন) ১৪২০০ টাকা
• আইসোলেশন বেড প্রথম দিন ২১৬০০ টাকা। অন্য দিন (সর্বোচ্চ ১৩ দিন) ১৩৬০০ টাকা
• প্যাকেজের সঙ্গে: ভেন্টিলেটর, সি/বি প্যাপ, চিকিৎসকের পরামর্শ বাবদ ফি, ল্যাবপরীক্ষা (কো-মর্বিডিটি রোগীর ক্ষেত্রে খরচে তারতম্য হতে পারে), ওধুধের (কো-মর্বিডিটি থাকলে খরচে তারতম্য) খরচ
• প্যাকেজে যা নেই: করোনা পরীক্ষা, অ্যাম্বুল্যান্স, পিপিই’র খরচ
স্বাস্থ্য কমিশনের অ্যাডভাইজ়রি এ পর্যন্ত:
• নমুনা পরীক্ষার খরচ ২২৫০ টাকার বেশি নয়। বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহে অতিরিক্ত টাকা নয়। যাতায়াতের খরচ হিসাবে প্রতি কিলোমিটারে ১৫ টাকা
• কোভিড প্রোটেকশন চার্জ (পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার-সহ স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সব উপাদানই) দিনে ১০০০ টাকার বেশি নয়
• চিকিৎসকের পরামর্শ বাবদ খরচ সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা
• দামী ব্র্যান্ডের অ্যান্টিবায়োটিক, ওষুধ ব্যবহারের আগে রোগীর পরিজনদের মতামত নিতে হবে। একই ওষুধ কম দামেও পাওয়া যায়। রোগীর পরিজন সেই ওষুধ ব্যবহার করতে চান কি না তা জানতে হবে
স্বাস্থ্য কমিশনের এক সদস্য জানান, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীকে একটি দামী ইঞ্জেকশন দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। হাসপাতাল থেকে ফোন করে দ্রুত ৮০ হাজার টাকা জমা করতে বলা হয়। অভিযোগ হাসপাতালের তরফে বলা হয়, ওই টাকার কোনও রসিদ দেওয়া যাবে না! এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতেই নতুন দু’টি অ্যাডভাইজ়রি জারি হচ্ছে বলে খবর। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালের খরচ কমানোর জন্য কমিশন চিন্তাভাবনা করছে। আমাদের পরিকল্পনা মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গনা-সহ অন্য রাজ্যগুলির নির্দেশিকাকে ছাপিয়ে যাবে বলে আশাবাদী।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy