Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

পিপিই-মাস্ক-গ্লাভস বিলির দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্যকর্তাও এ বার করোনায় আক্রান্ত

এ দিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত করোনা-বুলেটিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬২। মৃতের সংখ্যা ১০।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩৮
Share: Save:

সরকারি চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীর পরে করোনার শিকার হলেন স্বাস্থ্যকর্তা! রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরে (সিএমসি) কর্মরত অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর অব হেলথ সার্ভিসেসের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলায় তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। করোনা-পজ়িটিভ রোগী হিসেবে সেখানে ভর্তি হয়েছেন হাওড়ার সত্যবালা আইডি হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসারও। লালবাজার সূত্রের খবর, গার্ডেনরিচ থানার এক অফিসারের নামও শুক্রবারের আক্রান্তের তালিকায় রয়েছে।

এ দিন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত করোনা-বুলেটিনে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬২। মৃতের সংখ্যা ১০। তবে স্বস্তির খবরও রয়েছে। সল্টলেকের বেসরকারি কোভিড হাসপাতাল থেকে এ দিন চার জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের মধ্যে শ্রীভূমির বাসিন্দা এক মহিলা এবং কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট, মুচিপাড়া ও বর্ধমানের অন্ডালের এক বাসিন্দা রয়েছেন। বেলেঘাটা আইডি থেকে এক যুবকের ছুটি হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে করতালির মধ্যে দিয়ে আমহার্স্ট স্ট্রিটের বাসিন্দাকে বাড়ি পাঠানো হয়। হাসপাতাল ছাড়ার আগে তিনি বলেন, ‘‘করোনাকে জয় করেছি ঠিকই। কিন্তু করোনার শিকার হব কেন? সকলে সাবধানে থাকুন। রাজ্য সরকার যে-সকল বিধিনিষেধ বলছে, তা মেনে চলুন।’’

এ দিকে, ওই স্বাস্থ্যকর্তা কী ভাবে আক্রান্ত হলেন, তা ভাবিয়ে তুলেছে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের একাংশকে। তাঁদের বক্তব্য, ওই আধিকারিক সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরের যে বিভাগে কর্মরত ছিলেন, সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীদের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনাই বেশি। পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজ়ার-সহ বিভিন্ন সামগ্রী গ্রহণ এবং তা চাহিদা মতো বিলি করার দায়িত্বে ছিলেন ওই আধিকারিক। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘আমাদের কর্মীদের সঙ্গেই তাঁর বেশি মেলামেশা ছিল। উনি আক্রান্ত হওয়ায় উদ্বেগ তো রয়েছে।’’

বঙ্গের খতিয়ান

• ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত ২২
• অ্যাক্টিভ করোনা আক্রান্ত ১৬২
• মৃত্যু ১০
• ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা ৪২১
• মোট নমুনা পরীক্ষা ৪২১২
• সরকারি কোয়রান্টিনে ৩৮৩৯
• গৃহ-পর্যবেক্ষণে ৩৬০৭১
তথ্যসূত্র: রাজ্য সরকার

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত ৯ এপ্রিল থেকে অসুস্থ বোধ করছিলেন বেহালার বাসিন্দা ওই স্বাস্থ্যকর্তা। সোমবার থেকে তিনি শিয়ালদহের অফিসে আসেননি। এসএসকেএমে পরীক্ষার পরে তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। কলকাতা পুলিশের ওসি পদমর্যাদার ওই আধিকারিক এম আর বাঙুর হাসপাতালে রয়েছেন বলে খবর। তাঁর থানা আবার করোনা-চিত্রে কলকাতার স্পর্শকাতর এলাকাগুলির মধ্যে পড়ে।

আরও পড়ুন: হাওড়া-কলকাতার বেশ কয়েকটা অঞ্চল নিয়েই সবচেয়ে বেশি চিন্তা: মমতা

আরও পড়ুন: গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে এগরাই মডেল, আরও বেশি কোয়রান্টিনে জোর মুখ্যমন্ত্রীর

নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে এ দিন ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধ রয়েছেন। তিনি ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত। নববর্ষের সন্ধ্যায় তাঁকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বেসরকারি হাসপাতালের অধিকর্তা-চিকিৎসক অর্ণব গুপ্ত জানান, করোনার অস্তিত্ব মিলেছে জানার পরে তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অধিকর্তার কথায়, ‘‘বৃদ্ধকে প্রথম থেকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল বলে কোনও চিকিৎসককে কোয়রান্টিনে পাঠাতে হয়নি। আইসোলেশন ওয়ার্ডে আরও চার রোগীর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।’’ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা বলছে, কোনও ব্যক্তি আক্রান্তের সঙ্গে এক মিটারের কম দূরত্বে একটানা ১৫ মিনিট যদি থাকেন, তবেই তাঁর নমুনা পরীক্ষা করা হবে। সেই নির্দেশিকা মেনে ১০ জন নার্সকে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। সাত দিনের মাথায় তাঁদের পরীক্ষা করানো হবে।

স্বাস্থ্য দফতরের খবর, একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দু’জনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধার সংস্পর্শে আসায় চিকিৎসক-সহ চার জন স্বাস্থ্যকর্মীকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, নিউ টাউনের ক্যানসার হাসপাতালে বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা এক ব্যক্তির করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁর মৃত্যু হয়। করোনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে কি না, তা নির্ধারণ করবে রাজ্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি।

এ দিকে, নদিয়ার চাপড়ায় করোনা আক্রান্তকে ভুলবশত শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছিল। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার, এক চিকিৎসক, দুই ডেপুটি নার্সিং সুপার, সিস্টার ইনচার্জ-সহ ১৩ জনকে কৃষ্ণনগর কর্মতীর্থে কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। রোগীদের সরিয়ে মেল মেডিসিন বিভাগকে জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 Beleghata ID Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy