ছবি সংগৃহীত।
এ বার করোনায় আক্রান্ত কলকাতার সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসক। করোনা-বিড়ম্বনায় চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়রান্টিনে যাওয়ার যে ধারা হাওড়া জেলা হাসপাতাল, এনআরএস, আরজিকর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে দেখা গিয়েছিল, তাতে নাম জুড়ল চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেরও। আক্রান্তের সংস্পর্শে আসায় সেখানকার ১৫ জন চিকিৎসক, ৩২ জন নার্সিং স্টাফ ও দু’জন স্বাস্থ্যকর্মীকে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে বলে খবর।
বুধবার নবান্নে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ জানান, নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৭ জন। পাঁচ জনের ছুটি হওয়ায় রাজ্যে এখন করোনা অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ১২০ থেকে বেড়ে ১৩২। মৃতের সংখ্যা ৭। বেশ কয়েকটি মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামত জানানোর কথা। সেই রিপোর্ট পেলে মৃতের সংখ্যা জানানো হবে। বুধবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে সব পাড়ায় এ সব বাড়ছে, সেখানকার মানুষকে অনুরোধ করব, বাড়ি থেকে বেরোবেন না। দরকারে সেই সব জায়গায় পুলিশকে বলব, খাবার পৌঁছে দেবে। বাড়িতে হোম-আইসোলেশনে থাকুন। আজ রোগ আপনার হলে পরিবারের সবার হবে। এই ভাবে সংখ্যাটা বাড়ছে। পরিবার থেকে প্রায় ৮০-৯০ জন হয়ে গিয়েছে। দেখবেন, সামাজিক বা সমষ্টিগত ভাবে যেন না বাড়ে। বাড়লে এলাকায় এলাকায় সর্বনাশ হয়ে যাবে।’’
চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে (সিএনএমসি) মেডিসিনের যে জুনিয়র চিকিৎসক (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি বা পিজিটি) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁর সহকর্মীরা জানান, গত ১ এপ্রিল ফিভার ক্লিনিকে ওই পিজিটি’র ডিউটি ছিল। সেই সময় করোনা সন্দেহভাজন এক রোগীকে দেখেছিলেন তিনি। পরবর্তীক্ষেত্রে তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিও করা হয়েছিল। কিন্তু নমুনা পরীক্ষা করানোর আগেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়। এই ঘটনার দিন দশেক পরে জ্বর আসে আক্রান্ত চিকিৎসকের। তাঁর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে করোনা পজ়িটিভ মিলেছে।
বঙ্গে করোনা
• মৃত্যু ৭
• নতুন করে পজ়িটিভ ১৭
• রাজ্যে অ্যাক্টিভ পজ়িটিভ ১৩২
• বুধবার মুক্ত ৫ জন
• মোট সুস্থ রোগী ৪২
• নমুনা পরীক্ষা ৩৪৭০
কিট বিলি
• পিপিই ৩,২৫,০০০
• এন৯৫ মাস্ক ২,১৭,০০০
• সাধারণ মাস্ক ১৫,৪০,০০০
• স্যানিটাইজ়ার ৬৬,০০০
• গ্লাভস ৬,৭৫,০০০
• থার্মাল গান ৫০০০
কোয়রান্টিন
• সরকারি কোয়রান্টিন ৫৮২
• সেখানে রয়েছেন ৪১৫৭
• ছাড়া পেয়েছেন ৭৭২৯
• গৃহ-পর্যবেক্ষণে ৫৬,৭৮৩
• ছাড়া পেয়েছেন ১৯,০০০
তথ্য সূত্র: রাজ্য সরকার
পিজিটি’র সংস্পর্শে আসায় বিভাগীয় প্রধান, নার্সিং স্টাফ, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ মোট ৫০ জন নজরদারির আওতায় চলে এসেছেন বলে জানান সিএনএমসি’র রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান স্বর্ণকমল সাহা। তিনি জানান, দশ চিকিৎসককে রাজারহাট, তিন জনকে এম আর বাঙুর ও দু’জনকে ন্যাশনালে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ওই ১৫ জন চিকিৎসক ছাড়া আরও দু’জন স্বাস্থ্যকর্মীর নমুনা পরীক্ষা করা হবে। ৩২ জন নার্সকে হাসপাতালে নার্সিং আবাসনে রাখা হয়েছে। দু’জন গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। রোগী পরিষেবা সচল রাখতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি সিএনএমসি’র অধ্যক্ষ অজয় রায়। আরকেসি’র চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক স্বর্ণকমলবাবু বলেন, ‘‘এত জন চিকিৎসক পর্যবেক্ষণে চলে যাওয়ায় সমস্যা হবে। তবে রোগী পরিষেবা যাতে ব্যাহত না হয় সে জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে স্বাস্থ্য ভবন।’’ জুনিয়র চিকিৎসকদের এক অংশের দাবি, কী ভাবে ওই পিজিটি আক্রান্ত হলেন, তা বুঝতে না-পারায় কোয়রান্টিনের দীর্ঘ তালিকা তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নবজাতকের মা-বাবাও করোনা আক্রান্ত
আরও পড়ুন: আরও করোনা পরীক্ষার দাবি, ব্যাখ্যা দিলেন মমতা
নবান্নে এ দিন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে এলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়রান্টিনে রেখে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে আবার কাজে পাঠানো হচ্ছে। এমন কোনও হাসপাতাল নেই যেখানে সমস্যা রয়েছে।’’ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, প্রথমে প্রসূতি এবং পরে এক করোনা-আক্রান্ত প্রৌঢ়ার মৃত্যুর ঘটনায় প্রায় ৪০ জনের করোনা-পরীক্ষা করা হবে। চিনার পার্ক সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতালে করোনা ধরা পড়েছে ৮ স্বাস্থ্যকর্মীর। আইডিতে এ দিন বেলেঘাটার বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত এক আনাজ বিক্রেতাও ভর্তি হন। এ দিন কলকাতা নর্থ ডিভিশনের আওতাধীন এক পুলিশকর্মীর করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। কলকাতা পুলিশ জানায়, ডায়ালিসিসের জন্য ওই এএসআই’কে সম্প্রতি একবালপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই পুলিশের সঙ্গে যে এএসআই গিয়েছিলেন, তাঁকে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ওই নামের কোনও পুলিশকর্মী গত এক মাসে ডায়ালিসিসের জন্য আসেননি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy