Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Gangasagar Mela

ই-স্নানাগারে গঙ্গাসাগরের জল ঢেলেই বাড়ির পথে পুণ্যার্থীরা

প্রশাসন সূত্রের খবর, পুণ্যার্থীরা যাতে করোনার সংক্রমণ এড়িয়ে গঙ্গাসাগরের জল দিয়ে স্নান করার সুযোগ পান, সেই লক্ষ্যেই গড়া হয়েছে এই ধরনের ‘ই-স্নানাগার’।

আয়োজন: (বাঁ দিকে) গঙ্গাসাগর থেকে আনা মাটির কলসি ভরা জল দিয়েই (ডান দিকে) বঙ্গবাসী ময়দানে হয়েছে ‘ই-স্নান’-এর ব্যবস্থা। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র

আয়োজন: (বাঁ দিকে) গঙ্গাসাগর থেকে আনা মাটির কলসি ভরা জল দিয়েই (ডান দিকে) বঙ্গবাসী ময়দানে হয়েছে ‘ই-স্নান’-এর ব্যবস্থা। সোমবার। —নিজস্ব চিত্র

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২৫
Share: Save:

পাইপলাইনের মাধ্যমে আসছে পরিশোধিত গঙ্গাজল। আর সেই জলেই মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে গঙ্গাসাগরের ‘পবিত্র’ জল। ই-স্নানাগারে ওই জলই ঝরে পড়ছে পুণ্যার্থীদের মাথায়।

গঙ্গাসাগর মেলায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসা পুণ্যার্থীদের জন্য উট্রাম ঘাট সংলগ্ন বঙ্গবাসী ময়দানে তৈরি হওয়া অস্থায়ী স্নানাগারে গঙ্গাস্নানের এমনই অভিনব ব্যবস্থা করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন ও কলকাতা পুরসভা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, পুণ্যার্থীরা যাতে করোনার সংক্রমণ এড়িয়ে গঙ্গাসাগরের জল দিয়ে স্নান করার সুযোগ পান, সেই লক্ষ্যেই গড়া হয়েছে এই ধরনের ‘ই-স্নানাগার’। আপাতত বঙ্গবাসী ময়দানে ২০টি এমন স্নানাগার তৈরি করা হয়েছে। মহিলা ও পুরুষদের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তারা।

আরও পড়ুন: বিবেক মিছিল তথা দ্বৈরথে নেই শুভেন্দু, আছেন শুধু মাল্যদানে

আরও পড়ুন: শোভন ‘বৈশাখীর গ্ল্যাক্সো বেবি’, মিছিলের পরে বলল তৃণমূল

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে জলে ডুব দিয়ে স্নান করা এ বার বন্ধ। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উট্রাম ঘাট-সহ গঙ্গাসাগরের যাত্রাপথের বিভিন্ন বাফার জ়োনে কিয়স্কে গঙ্গাসাগরের জল রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি, বঙ্গবাসী ময়দানে গড়ে তোলা হয়েছে ওই স্নানাগার।

জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন, বিভিন্ন রাজ্য থেকে এখনও পর্যন্ত হাজার চারেক পুণ্যার্থী এখানে এসে পৌঁছেছেন। ওই পুণ্যার্থীদের সকলকেই আদালতের নির্দেশের ব্যাপারে জানানো হয়েছে। সে কথা শোনার পরে অধিকাংশ পুণ্যার্থীই ই-স্নান ব্যবস্থায় আগ্রহী হয়েছেন। সোমবার বিকেল পর্যন্ত হাজারখানেক পুণ্যার্থী ই-স্নানাগারে স্নান করেছেন।

বঙ্গবাসী ময়দানের ওই সমস্ত ই-স্নানাগারের দায়িত্বে রয়েছেন আলিপুর সদরের মহকুমাশাসক সামিউল আলম। মহকুমাশাসক জানান, ভিন্ রাজ্য থেকে আসা পুণ্যার্থীদের বাসগুলি ময়দানের এক পাশে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর পরে প্রথমে প্রত্যেক পুণ্যার্থীর দেহের তাপমাত্রা মেপে দেখা হচ্ছে। কারও ক্ষেত্রে কোনও রকম শারীরিক অসুস্থতা নজরে এলেই সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করানো হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতায় নেমে আদালতের নির্দেশের বিষয়টি জানার পরে পুণ্যার্থীদের অনেকেই গঙ্গাসাগরের ‘পবিত্র’ জল মাথায় ঢেলে স্নান করছেন। এবং বঙ্গবাসী ময়দান থেকেই ফের নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাচ্ছেন। গঙ্গাসাগরে যাওয়ার আর চেষ্টাই করছেন না তাঁরা। কিছু সংখ্যক পুণ্যার্থী অবশ্য ই-স্নান করার পরেও গঙ্গাসাগরের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। তাঁদের প্রত্যেককে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। পুণ্যার্থীদের রাখার ব্যবস্থাও এমন ভাবে করা হয়েছে, যাতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় থাকে। ভিন্ রাজ্য থেকে উট্রাম ঘাটে আসা অধিকাংশ পুণ্যার্থীই ই-স্নানে আগ্রহী হয়েছেন বলে দাবি প্রশাসনের কর্তাদের।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য থেকে আসা পুণ্যার্থীরা এখানকার ই-স্নানাগারে স্নান সেরেই যদি ফিরে যেতে রাজি থাকেন, তা হলে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে। সে ক্ষেত্রে গঙ্গাসাগর মেলাতেও ভিড় বেশি হবে না। এই কারণেই বঙ্গবাসী ময়দানে ওই বিশেষ স্নানাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, ‘‘গঙ্গাসাগরের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতেই ই-স্নানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাটির কলসিতে গঙ্গাসাগরের পবিত্র জল ভরে আনা হয়েছে। পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে পরপর বেশ কয়েকটি মঞ্চের সামনে পবিত্র জল ভর্তি ওই সমস্ত কলসি রাখা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের হাতে সেই কলসি তুলে দেওয়া হচ্ছে। স্নানের জায়গায় করোনা সংক্রান্ত সমস্ত রকম বিধি-নিষেধ মেনে চলারই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy