গত শনিবার ও রবিবার দু’দিন ধরে দু’হাজারের নীচেই রয়েছে রাজ্যের দৈনিক আক্রান্ত। সোমবার এক লাফে তা অনেকটা কমল। চিকিৎসকের মহলের বক্তব্য, চলতি বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছিল, একই ভাবে এ বারও ওঠা-নামার মধ্যে দিয়েই সংক্রমণ বাড়তে পারে রাজ্যে। বিশেষজ্ঞদের এই আশঙ্কা সত্যি করে এই ওঠা-নামার মধ্যে দিয়েই সংক্রমণ তিন হাজার ছুঁয়ে ফেলেছিল। এ বার তা কমতে কমতে দু’হাজারের নীচে নেমে এসেছে ঠিকই, কিন্তু এতে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করছেন চিকিৎসকেরা। এই উদ্বেগের কারণ, রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের উপরেই রয়েছে। সে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়ে অক্ষরে অক্ষরে কোভিডবিধি পালনের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। গত ২৪ ঘণ্টায় সাত জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত কোভিড বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০৯৪ জন। এখনও পর্যন্ত কোভিডে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৮৩ জন। রাজ্যে নতুন করে যত সংক্রমিত হয়েছেন, তার মধ্যে অধিকাংশই কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনার অধিবাসী। কলকাতা সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও হুগলিতেও সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ওই তিন জেলার কোভিড পরিস্থিতিও প্রশাসনের নজরে রয়েছে। সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া ও বীরভূমেও।

চলন্ত গড় কী, এবং কেন এটি ব্যবহার করা হয়, তা লেখার শেষে উল্লেখ করা হয়েছে।

রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ২১ হাজার ৩২৭ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ৮ হাজার ৬৪৫ জনের। দৈনিক সংক্রমণের হার বেড়ে হল ১২.৬৫ শতাংশ। প্রসঙ্গত, যত জন মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হল, তাঁদের মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ তাকেই পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বলা হয়। রাজ্যে বর্তমানে কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা কমে ২২ হাজার ৬৫৭।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৪ জুনের তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ১৬০। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ১৩৫। তার আগের দু’দিন ছিল ১২৩ এবং ১৪৮। পরের দু’দিনের সংখ্যা ছিল ১৯৪ এবং ২২৯। ১২ থেকে ১৬ জুন, এই পাঁচ দিনের গড় হল ১৬০, যা ১৪ জুনের চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৫ জুনের চলন্ত গড় হল ১৩ থেকে ১৭ জুনের আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)