Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

প্লাজমা থেরাপি ব্যবহারে শরিক হচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আইএইচবিটি বিভাগের প্রধান প্রসূন ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে প্লাজমা প্রক্রিয়াকরণ হবে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫৪
Share: Save:

আক্রান্তের রক্তরসকে কাজে লাগিয়ে কোভিড মোকাবিলার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে রাজ্য যে আগ্রহী তা আগেই জানিয়েছিল নবান্ন। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি’ (আইআইসিবি)। সেই ট্রায়ালের অন্যতম অংশীদার হতে চলেছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইমিউনো হেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশন (আইএইচবিটি) বিভাগ। আইসিএমআর-এর অনুমতি পেলে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই আক্রান্তের শরীর থেকে সংগৃহীত প্লাজমার প্রক্রিয়াকরণ মেডিক্যাল কলেজে শুরু হবে বলে স্বাস্থ্য দফতরের খবর।

চিকিৎসকদের বক্তব্য, করোনায় আক্রান্ত সুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর দেহে এই রোগের মোকাবিলায় অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। সেই অ্যান্টিবডি রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম এমন মানবশরীরে পাঠালে কী ফল হয় তা দেখতেই এই গবেষণা। চিকিৎসার পরিভাষায়, এর নাম ‘প্লাজমা কনভালসেন্ট থেরাপি’। চিন এই থেরাপি প্রয়োগ করে সুফল পাওয়ার দাবি করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা-সহ কিছু দেশ এই প্রক্রিয়ায় পথ খোঁজা সম্ভব কি না, তা দেখছে। এ দেশে কেরল, দিল্লির পরে সেই গবেষণার কাজ বাংলাতেও শুরু হতে চলেছে।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আইএইচবিটি বিভাগের প্রধান প্রসূন ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে প্লাজমা প্রক্রিয়াকরণ হবে। দাতার থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করে তা অপর করোনা আক্রান্তের শরীরে দেওয়া হবে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। এই পর্বে গবেষণার দায়িত্বে রয়েছেন আইডি-র মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান বিশ্বনাথ শর্মা সরকার, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান বিভূতি সাহা এবং সংক্রামক রোগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর যোগীরাজ রায়। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রোগ প্রতিরোধের গতিবিধি পর্যালোচনা করবে আইআইসিবি।

আরও পড়ুন: করোনার উপসর্গ সল্টলেকের আরও এক বাসিন্দার

প্রসূন ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, যে আক্রান্তদের করোনা বিপদে ফেলতে পারেনি, তাঁদের প্লাজমা ‘ব্লাড ট্রান্সফিউশন’ পদ্ধতিতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি অন্য অসুখের জেরে গুরুতর অসুস্থ মানবদেহে পাঠানো হবে। তাঁর কথায়, ‘‘এই কাজের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং পরিকাঠামো আমাদের রয়েছে। কিছু যন্ত্রপাতি এবং ডিসপোজ়েবল ইউনিট পেলেই কাজ শুরু করা যাবে।’’

তবে দাতা এবং গ্রহীতা চিহ্নিত করার মাপকাঠি রয়েছে। গবেষণাটির প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এবং প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর তথা আইআইসিবি-র ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আর্থিক খরচ জোগাচ্ছে কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)। আক্রান্ত সুস্থ হওয়ার ২১-২৮ দিন পরে দাতার প্লাজমা সংগ্রহ হবে। প্রসূনবাবু জানিয়েছেন, ২৮ দিনের আগে প্লাজমা সংগ্রহ করতে হলে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আরটিপিসিআর-এ দাতার অন্তত দু’টি নমুনার রিপোর্ট নেগেটিভ হতে হবে।

দীপ্যমানের কথায়, ‘‘দাতার রক্ত থেকে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না তা দেখতে হবে। সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বিচার্য।’’ ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল রেজিস্ট্রি অব ইন্ডিয়া’য় গবেষণার প্রস্তাব নথিভুক্তের পরে আইসিএমআর-এর থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন চাওয়া হবে।

করোনা থেকে সেরে ওঠা হাবড়ার এক তরুণী-সহ আরও কয়েক জন গবেষণার শরিক হতে ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। এ দিন হাবড়ার তরুণী বলেন, ‘‘এই রোগের প্রতিষেধক এখনও তৈরি হয়নি। আমার দান করা প্লাজমায় যদি অনেকে সুস্থ হন, তার থেকে ভাল কিছু হতে পারে না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy