Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

৯৯ বছরে করোনাকে হারালেন আরতি

২৯ এপ্রিল কোভিড পজ়িটিভ আরতিকে কোচবিহার মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। আরতির বয়স এবং তাঁর ডায়াবেটিস থাকায় উদ্বেগে ছিলেন পরিবারের সবাই।

সুস্থ হয়ে বাড়ির পথে আরতি ভট্টাচার্য। শুক্রবার কোচবিহার মেডিক্যালের সামনে।

সুস্থ হয়ে বাড়ির পথে আরতি ভট্টাচার্য। শুক্রবার কোচবিহার মেডিক্যালের সামনে। নিজস্ব চিত্র।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২২ মে ২০২১ ০৫:৩৫
Share: Save:

তখনও তাঁর চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। তার মধ্যেই মৃদু হাসি ভেসে ওঠে মাস্ক ভেদ করে। হুইলচেয়ারে বসে হাত নেড়ে যেন কিছু বলতে চান। বোধহয়, যুদ্ধ জয়ের গল্পটা ভাগ করে নিতে চাইছিলেন সবার সঙ্গে। তাঁকে ঘিরে রয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী সকলেরই মুখে স্বস্তি। তিনি কোচবিহারের খাগরাবাড়ির আরতি ভট্টাচার্য। ৯৯ বছর বয়সে করোনাকে হারিয়ে ঘরে ফিরলেন শুক্রবার।

তাঁর ছেলে প্রবীরকুমার ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘খুবই আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছিল। মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী প্রত্যেকের আন্তরিক চেষ্টায় মাকে আবার বাড়িতে নিয়ে যেতে পারলাম।’’ কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার রাজীব প্রসাদ বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট চিকিৎসার মাধ্যমে তাঁকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর লড়াই করার মানসিকতা, আমাদের কাজ আরও সহজ করে দিয়েছে।’’ সুপার জানান, করোনা হলেই প্রবীণ নাগরিকদের ভয়ের কিছু নেই। উপযুক্ত চিকিৎসায় করোনা থেকে সেরে ওঠা সম্ভব। শুধু সবাইকে কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে।

২৯ এপ্রিল কোভিড পজ়িটিভ আরতিকে কোচবিহার মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়। আরতির বয়স এবং তাঁর ডায়াবেটিস থাকায় উদ্বেগে ছিলেন পরিবারের সবাই, এমনকি চিকিৎসকেরাও। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা তাঁরা নিয়েছিলেন প্রথম দিন থেকেই। কিন্তু প্রথমে আরতির অবস্থার অবনতিই হতে থাকে। কোভিড নিউমোনিয়া ছিলই। তৃতীয় দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও কমে যায়। তাতেও হাল ছাড়েননি চিকিৎসকরা। করোনার সঙ্গেই শুরু হয় হৃদরোগের চিকিৎসা। ভেন্টিলেনশন চালু করতে হয়। চিকিৎসকদের কথায়, এর পর ধীরে ধীরে ওষুধ কাজ করতে শুরু করে। ভেন্টিলেশন থেকে বার তো হলেনই, একসময়ে হৃদযন্ত্রের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে আসে। অক্সিজেনের মাত্রাও বাড়তে থাকে। ২২ দিন ধরে লড়াইয়ের পরে সুস্থ অবস্থায় এ দিন হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয় আরতিকে।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোটবেলা থেকেই আরতির মনের জোর বেশি। এই লড়াইয়েও তিনি নিজেকে শক্ত রেখেছিলেন। হাসপাতালের চিকিৎসক দিব্যেন্দু দাস বলেন, ‘‘ওঁর লড়াইয়ের মানসিকতাকে প্রণাম জানাই।’’ কোভিড ওয়ার্ডের নার্স তানিয়া দেব বলেন, ‘‘আমরা ওঁকে ঠাম্মি করে ডাকতাম। প্রথম দিকে সাড়া দিতেন না। পরে সাড়া দিতে
শুরু করেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy