করোনা আতঙ্কে মাস্কে ঢাকা মুখ। নিজস্ব চিত্র
ঋতু পরিবর্তনের সময় জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ হয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছরে এ সব নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতে হত না। কিন্তু, এ বছর পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা। করোনাভাইরাসের উপসর্গ যে হেতু অনেকটা একই রকম, তাই সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি হলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন অনেকে। বাড়ছে হাসপাতালে ভিড়। দ্রুত পরীক্ষা করে রোগীরা জানতে চাইছেন, তাঁরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না?
কলকাতায় কেন্দ্রীয় সংস্থা নাইসেড (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস), বেলেঘাটা আইডি এবং এসএসকেএম হাসপাতালে করোনার পরীক্ষা হচ্ছে। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে বেসরকারি হাসপাতালে বা ল্যাবে করোনা পরীক্ষার প্রয়োজন পড়তে পারে আগামী দিনে। যদিও এ রাজ্যে তেমন পরিস্থিতি হয়নি বলে দাবি করছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর। সোয়াইন ফ্লু (এইচওয়ানএনওয়ান) পরীক্ষাও প্রথম দিকে সরকারি হাসপাতালে হত। পরে বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে তার পরীক্ষা শুরু হয়।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, করোনাভাইরাসের উপসর্গের বিষয়ে জানা গেলেও, এই রোগের প্রতিরোধ কী ভাবে করা সম্ভব তা এখনও স্পষ্ট নয়। টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যে যে ভাবে গোটা বিশ্বে করোনা থাবা বসিয়েছে, তাতে ‘অতিমারি’ ঘোষণা করা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি ল্যাবে এই ধরনের পরীক্ষার পরিকাঠামোর কথা মাথায় রেখে বেসরকারি সংস্থার হাতে ছাড়ার বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে কেন্দ্র। তবে পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে বেসরকারি ল্যাবরেটরির সঙ্গে যৌথ ভাবে করোনার মোকাবিলা করতে চায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
আরও পড়ুন: নেই ম্যাজিস্ট্রেটের সই, বাতিল দীনেশ বজাজের মনোনয়ন, রাজ্যসভায় মসৃণ বিকাশের পথ
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ৫২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে করোনাভাইরাসের টেস্ট চলছে। তবে এই বিপুল চাপের বিষয়টি মাথায় রেখে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ এবং ‘ডিপার্টমেন্ট অব হেল্ফ রিসার্চ’ বেসরকারি ল্যাবের হাতেও টেস্টটি ছাড়তে চায় বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। ন্যাশনাল বোর্ড অব ল্যাবরেটরিজ-এর অধীনে থাকা এমন ৫০ থেকে ৬০ বেসরকারি ল্যাবে এই ধরনের টেস্ট করার মতো পরিকাঠামো রয়েছে বলে মনে করছে তারা।
এই মুহূর্তে সরকারি ল্যাবে প্রতি দিন যে পরিমাণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া সন্দেহে রোগীর লালরসের নমুনা আসছে, তার মধ্যে খুবই কম সংখ্যক নুমনার পরীক্ষা সম্ভব হচ্ছে। সে কারণে দ্রুত জানা যাচ্ছে না ওই রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না। এ বার বেসরকারি ল্যাবে অথবা হাসপাতালে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা শুরু হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে। এ বিষয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের এখানে দু’জায়গায় টেস্ট হচ্ছে। আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি, অনুমতি না দেওয়ার কোনও কারণ নেই। এই মুহূর্তে যদিও তেমন পরিস্থিতি নেই।”
আরও পড়ুন: শুরু হল মুজিববর্ষ: একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কন্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি
রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ১১ হাজারের বেশি মানুষ গৃহ-পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। হাসপাতালে আইসোলেশ ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন ১০ জন। গত কয়েক দিন আগেও এতটা বেশি সংখ্যক গৃহ-পর্যবেক্ষণে থাকার বিষয়টি সামনে আসেনি। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, সাধারণ উপসর্গ হলেও অনেকে পরীক্ষা করাতে চাইছেন। কাজেই এত কম সংখ্যক টেস্টের জায়গা হওয়ায় অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy