করোনা-ত্রাস: পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। ছবি: সংগৃহীত।
গোটা দেশেই করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ রাজ্যে যদিও এখনও পর্যন্ত কারও শরীরে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সন্ধান মেলেনি। তবু, করোনা-ত্রাসে অনেককেই ‘গৃহ-পর্যবেক্ষেণ’-এ রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, এ রাজ্যে রবিবার পর্যন্ত গৃহ-পর্যবেক্ষণে ছিলেন ৩ হাজার ৬৫৭ জন। কিন্তু সোমবার দুপুরের মধ্যেই সেই সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার ছুঁয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন বিকেলে নবান্নে বৈঠকও করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্বাস্থ্য এবং পরিবারকল্যাণ দফতর সূত্রে খবর, করোনা-আক্রান্ত দেশ থেকে আসা মোট ৫ হাজার ৮৫৬ জনের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের পর্যবেক্ষণেও রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে ২৪৬ জনকে সম্পূর্ণ বিপন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ৫ হাজার ৫৯৮ জনকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া এ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে করোনা-সন্দেহে মোট ৬৯ জন ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে হাসপাতালেরই পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে।
করোনা-আক্রান্তের সন্ধান না মিললেও, গোটা দুনিয়ার পরিস্থিতি দেখে এ রাজ্যেও করোনা-ত্রাস দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর বার বারই অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার আবেদন জানাচ্ছে। কেন্দ্র-রাজ্য যৌথ ভাবে এই ভাইরাসের মোকাবিলা করতে প্রস্তুতি নিয়েছে। চালানো হচ্ছে জনসচেতনতামূলক প্রচার। কেন্দ্রের সমস্ত নির্দেশিকা মেনে চলছে রাজ্য। পরিস্থিতি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানানো হচ্ছে কেন্দ্রকে।
আরও পড়ুন: করোনা-মঞ্চেও কাশ্মীর প্রসঙ্গ তুলল পাকিস্তান
এমনিতেই মরসুম বদলের এই সময়টায় জ্বর-সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ে। এ বছর ঘন ঘন আবহাওয়া বদলের কারণে তা আরও বেশি পরিমাণে দেখা দিচ্ছে। করোনা-আতঙ্কের জেরে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি হলেও রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছেন মানুষ। চাপ অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালেও। তবে স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, জ্বর-সর্দি-কাশির উপসর্গের পাশাপাশি যাঁরা সম্প্রতি বিদেশ থেকে এসেছেন, তাঁদেরই বেশই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। অন্যদের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ১৪ দিন গৃহ-পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কত জনকে গৃহ-পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তার তালিকাও আপডেট করা হচ্ছে প্রতি নিয়ত। ২৪ ঘণ্টার কল সেন্টার খোলা হয়েছে। করোনাভাইরাস নিয়ে যে কোনও রকম সাহায্যের জন্য ০৩৩২৩৪১ ২৬০০/ ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ নম্বরে ফোন করার কথা বলেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর।
আরও পড়ুন: করোনা আতঙ্কে শেয়ার বাজারে ফের ধস, মুখ থুবড়ে পড়ল সেনসেক্স, নিফটি
এ ছাড়াও করোনা-মোকাবিলায় রাজ্যের বিমানবন্দর এবং জলবন্দরগুলোতে নজরদারি চালাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। কলকাতা এবং বাগডোগরা বিমানবন্দরে এখনও পর্যন্ত ৭৩ হাজার ৫৭৮ জনের থার্মাল স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে। কলকাতা, হলদিয়া আর বজবজে যে সমস্ত পণ্যবাহী জাহাজ আসে, সেগুলোতে এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার ৯৮৯ জন জাহাজকর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। এ ছাড়া নেপাল এবং বাংলাদেশ সীমান্তে মোট ৭টি পয়েন্টে স্বাস্থ্য শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৫৮ জনের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়েছে। এই গোটা প্রক্রিয়ায় সন্দেহভাজনদের এখনও পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বা গৃহ-পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য জুড়ে ১৬৩টি ‘আইসোলেশন বেড’ তৈরি রাখা হয়েছে। রাজারহাটের ক্যানসার হাসপাতালের পাঁচ তলায় কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে। সেখানে এখনও পর্যন্ত ফ্রান্স-ফেরৎ ৬৪ বছরের এক বৃদ্ধ পর্যবেক্ষণে আছেন। তাঁকে আপাতত ১৪ দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy