Advertisement
E-Paper

উপসর্গহীনেরাই ‘সুপার স্প্রেডার’, সমীক্ষায় দাবি

ষ্ঠীর সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪১৫৭ জন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২০ ০৪:১৪
Share
Save

উপসর্গহীনেরা কী ভাবে সংক্রমণ ছড়ানোর মাত্রাকে বাড়িয়ে তোলে, তা স্পষ্ট করে দিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সেরো সমীক্ষা। কোভিড হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে উপসর্গহীন আক্রান্তের সংখ্যা জানতে যৌথ ভাবে সমীক্ষা করে মেডিক্যালের মেডিসিন এবং বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, সেই সমীক্ষাতে দেখা গিয়েছে, প্রত্যক্ষ ভাবে কোভিড ওয়ার্ডের পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত নন, এমন ৩০ শতাংশ গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সমীক্ষার ফল বেরনোর আগে সে বিষয়ে তাঁরা টেরও পাননি।

ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, রাজ্যে এক দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪১৫৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। কলকাতা (৮৭৪), হাওড়া (২৭৮), উত্তর ২৪ পরগনা (৮৬৪), দক্ষিণ ২৪ পরগনায় (২৫৯) সংক্রমণের ধারা অব্যাহত রয়েছে। মেডিক্যালের সেরো সমীক্ষার ফলাফলের প্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কোভিড হাসপাতালে সাধারণত স্বাস্থ্যকর্মীরা সচেতন থাকেন। এর পরও সমীক্ষায় যে ভাবে উপসর্গহীন আক্রান্তদের হদিস মিলেছে তাতে পুজো মণ্ডপের ভিড় কতখানি বিপজ্জনক হতে পারে তা সহজে অনুমেয়।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত ২৭ জুলাই থেকে ২৬ অগস্টের মধ্যে মেডিক্যালের ৪২৬ জন চিকিৎসক, ১৪৮ জন নার্সিং স্টাফ এবং হাসপাতালের অন্যান্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ১৪০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর রক্তপরীক্ষা করা হয়েছিল। সেরো সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারী চিকিৎসকদের মধ্যে উপসর্গহীন আক্রান্তের হদিস মিলেছে ৯.৬২ শতাংশ। নার্সিং স্টাফদের ক্ষেত্রে সেই পরিসংখ্যান ৫.৪১ শতাংশ এবং গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি কর্মীদের মধ্যে সংখ্যাটা ৩০ শতাংশ। উপসর্গহীনদের হাত ধরে কোভিড হাসপাতালে সংক্রমণের মাত্রা সুপার-স্প্রেডারের কাজ করতে পারে জানিয়ে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যকে চিঠি দিয়েছেন মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়।

সমীক্ষার প্রিন্সিপ্যাল ইনভেস্টিগেটর তথা রিউম্যাটোলজি ক্লিনিকের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক কৌশিক বসু জানান, স্বাস্থ্যবিধি ঠিক ভাবে মানলে যে সুফল মেলে তার ইঙ্গিতও সমীক্ষায় রয়েছে। তাঁর পর্যবেক্ষণ, নার্সরা অনেক বেশি শৃঙ্খলাপরায়ণ বলেই তাঁদের মধ্যে খুব কমজনেরই দেহে অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব মিলেছে। কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘কোভিড হাসপাতালে সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করেও উপসর্গহীন আক্রান্তদের হদিস মেলার অর্থ এখন যে কোনও ভিড় জায়গা হল হটস্পট।’’

চিকিৎসক-নার্সের বাইরে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ২৪ শতাংশ, অফিস করণিক ৩৮.৯ শতাংশ এবং ওয়ার্ড বয়-সাফাইকর্মীদের মধ্যে ৩০ শতাংশের অ্যান্টিবডি পজ়িটিভ এসেছে সেরো সমীক্ষায়। মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগের প্রফেসর অরুণাংশু তালুকদারের বক্তব্য, গ্রুপ সি-গ্রুপ ডি পর্যায়ের ওই কর্মীরা কোভিড ওয়ার্ডের প্রত্যক্ষ পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত নন। সমীক্ষার যা ফলাফল তাতে ওই শ্রেণির স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। অরুণাংশুবাবু বলেন, ‘‘পিপিই’র ব্যবহারে সতর্ক থাকার পাশাপাশি উপসর্গহীন আক্রান্তদের থেকেও যে সংক্রমণ ছড়াতে পরে তা নিয়েও সজাগ থাকতে হবে।’’

CoronaVirus Asymptomatic Super Spreader

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}