উদ্যোগ: এ ভাবেই সুদৃশ্য পাটের ব্যাগে বিক্রি হবে বন্দিদের তৈরি কুকি। নিজস্ব চিত্র
কুকিতে কামড় দেন অনেকেই। কিন্তু তার কারিগরেরা বরাবরই থাকেন অন্তরালে। এ ক্ষেত্রে কুকির নির্মাতাদের জীবন আক্ষরিক অর্থেই কাটছে অন্তরালে। তাঁরা আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারের বন্দি। তাঁদের হাতে তৈরি কুকিতে কামড় দেওয়ার সুযোগ মিলবে কয়েক দিনের মধ্যেই।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলে নানা নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন জেলের বন্দিরা। সেই তালিকায় এ বার যোগ হতে চলেছে কুকিও। সেগুলি তৈরি করেছেন আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারের দশ বন্দি। কুকি তৈরির জন্য মাস দু’য়েক ধরে ওই বন্দিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। বিভিন্ন কারাগারে বন্দিদের উৎপাদিত সামগ্রী তৈরি এবং বিপণন নিয়ে কাজ করে থাকে ওই সংস্থা। তাদের হাত ধরে আলিপুরের দশ মহিলা বন্দি কুকি তৈরির প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত হন। তাঁদের পাশাপাশি আরও সাত বন্দিকে ওই প্রশিক্ষণের
আওতায় আনা হয়েছে। কারণ, মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে চলে যান বন্দিরা। কুকির উৎপাদন যাতে মাঝপথে থমকে না যায়, সে কারণে ‘রিজার্ভ বেঞ্চ’-এর মতো আরও সাত জনের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। গত দু’মাস ধরে সপ্তাহে তিন-চার দিন করে জেলে এই বন্দিদের কুকি তৈরির কর্মশালার ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ দেন ‘বেকার’ অনিতা দত্ত।
ইতিমধ্যেই কুকি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। তা প্যাকেটজাত করে বিপণনের প্রক্রিয়াও শুরু হবে। কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই কুকি বাজারে আসবে। কারা দফতরের কর্তাদের কাছে বিষয়টির আনুষ্ঠানিক প্রকাশের জন্য আবেদনও করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। দফতর থেকে পণ্যটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের তারিখ মিললেই কুকি বাজারে আসবে। তার পরে এই পণ্যটি অনলাইনের পাশাপাশি খোলা বাজারেও পাবে আমজনতা। যার ব্যবস্থা করবে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। কুকি বিক্রির পরে সেখান থেকে উপার্জিত অর্থ নিয়মানুসারে কারা দফতরের কাছে পৌঁছে দেবে তারা। দীপাবলির উপহারের ঝুড়িতেও এই কুকি জায়গা পেলে অবাক হওয়ার থাকবে না বলে কারা দফতর সূত্রে খবর। পাশাপাশি, কুকির স্বাদ চেখে দেখবেন নামী হোটেল বা ক্যাফেটেরিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্তেরা। তাঁদের প্রতিক্রিয়া জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করবে কারা দফতরের সঙ্গে থাকা ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি।
প্যাকেজিং-এর ক্ষেত্রেও প্লাস্টিক বর্জনের নীতির কথা মাথায় রাখা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব পাট বা সুতির কাপড়ের থলিতে কুকি প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। সেই থলিও তৈরি করেছেন দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিরা। সেখানে পাটজাত সামগ্রী নিয়ে কাজ করছেন ৪০ জন বন্দি।
কেন এই ধরনের উদ্যোগ? ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ম্যানেজিং ট্রাস্টি চৈতালি দাসের বক্তব্য, ‘‘ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং সঠিক দিশা দেখাতে পারলে মানুষের মধ্যে বড়সড় পরিবর্তন আসতে পারে। বন্দিরাও তার ব্যতিক্রম নন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy