Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

প্রতিবাদের ডাক রবির

খানিকটা ব্যাকফুটে গেলেও এই লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকতে চায় না বিজেপিও। তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক।

কোচবিহারে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

কোচবিহারে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:১১
Share: Save:

রাত থেকেই এলাকা থমথমে ছিল। সকাল হতেই একে একে তৃণমূল নেতারা ভিড় করতে শুরু করে পাতলাখাওয়া গ্রামে। দুপুর গড়িয়ে পড়তেই মজিরুদ্দিন সরকারের দেহ পৌঁছে যায় তাঁর বাড়িতে। সেই দেহের সামনে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ ফেটে পড়েন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিজেপি’র বিরুদ্ধে চূড়ান্ত লড়াইয়ের ডাক দেওয়া হয়। ব্লকে ব্লকে অঞ্চলে অঞ্চলে তৃণমূল কর্মীদের প্রতিবাদে সামিল হওয়ার আবেদন জানান তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

খানিকটা ব্যাকফুটে গেলেও এই লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকতে চায় না বিজেপিও। তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। তাঁর দাবি, ওই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন। সংকল্প যাত্রা তাঁরা কোনওভাবেই পিছু হঠবেন না বলেও জানিয়ে দেন তিনি। নিশীথ বলেন, “তৃণমূলের মৃতদেহ নিয়ে রাজনীতি আমরা বারে বারে দেখেছি। কোচবিহারে এর আগেও এমনটা হয়েছে। এবারেও সেটাই করতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। যেখানে সমস্ত প্রমাণ জানিয়ে দিচ্ছে ওই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছেন, সেখানে এমন অভিযোগ আনা থেকেই সব স্পষ্ট।”

তৃণমূলের অবশ্য পাল্টা দাবি, সাংসদ এবং বিজেপি’র কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভার উপস্থিতিতে একজন তৃণমূল নেতাকে পিটিয়ে খুন করার পর তা ঢেকে রাখতে চাইছে বিজেপি। রবীন্দ্রনাথ বলেন, “বিজেপি খুনের রাজনীতি করে। মানুষের উপরে অত্যাচারের রাজনীতি করে। সবার সামনেই মজিরুদ্দিনের উপরে হামলা হয়েছে। তাঁকে মারধর করা হয়েছে। বিজেপি’র বিরুদ্ধে মানুষ এ বার রুখে দাঁড়াবে।” পাতলাখাওয়ার উত্তর কালারুইয়ের কুঠির বাসিন্দা মজিরুদ্দিন (৫০) যুব তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি এবং দলের ওই অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিজেপির সংকল্প যাত্রা ওই এলাকায় পৌঁছলে দু’পক্ষের মধ্যে গণ্ডগোল শুরু হয়। তৃণমূলের অভিযোগ, বোমা ছুড়তে ছুঁড়তে বিজেপি কর্মীরা তৃণমূলের তিনটি পার্টি অফিস ভাঙচুর করে। একাধিক তৃণমূল কর্মীর দোকান ভাঙচুর করা হয়। সেই সময়ই প্রতিবাদ জানাতে গেলে বিজেপি কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হন মজিরুদ্দিন।

মৃতের দাদা আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমার ভাই দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল করে। তাঁর সঙ্গে প্রত্যেকটি মানুষের ভাল সম্পর্ক। তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যেই তাঁর উপরে হামলা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।” কোচবিহারে গত লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে তৃণমূল। কিছুদিন ধরে তারা ফের সংগঠিত হয়ে শক্তি বাড়াতে ময়দানে নেমেছে। এই সময় দলীয় কর্মীর মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “বিজেপি বোমা-আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংকল্প যাত্রা করছে। মজিরুদ্দিন পার্টি অফিস ভাঙা নিয়ে প্রতিবাদ করাতেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। মানুষ বিজেপিকে ছাড়বে না।”

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা দাবি করেন, মিছিল ওই এলাকায় গিয়েছে সাড়ে ৩টেয়। মজিরুদ্দিন সরকারকে ৩ টা ৫০ মিনিটে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। তিনি বলেন, “ওই জায়গা থেকে কোচবিহার শহরে পৌঁছতে কমপমক্ষে আধ ঘণ্টা লাগবে। সেখান থেকেই বুঝতে হবে কতটা মিথ্যাচার করছে তৃণমূল।” কোচবিহার জেলার এক পুলিশ কর্তা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে ৩০৪ ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের মধ্যে ৬ জনের নাম এফআইআরে রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Cooch Behar TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy