রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্থায়ী উপাচার্য বাছবেন যিনি বা যাঁরা, তাঁদের নিজেদেরই ভাবমূর্তি স্বচ্ছ নয়— এমনই অভিযোগ আনল রাজ্যের উপাচার্যদের সংগঠন ‘দি এডুকেশনিস্টস ফোরাম’। একটি বিবৃতি প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, উপাচার্য বাছাই করার জন্য বাংলার রাজ্যপাল যে সার্চ কমিটির প্রস্তাব করেছেন, তার কয়েকজন সদস্যের পুরনো রেকর্ড চিন্তায় ফেলার মতো।
রবিবারই এ বিষয়ে ওই বিবৃতি প্রকাশ করেছে ফোরাম। তারা জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ওই সদস্যদের পুরনো রেকর্ড নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সে সব রিপোর্ট পড়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই জনমানসে সন্দেহ এবং ধন্দ তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যপাল কি এই সদস্যদের পুরনো রেকর্ড না দেখেই কমিটিতে রেখেছেন? সে ক্ষেত্রে সব জেনেও রাজ্যপাল কী ভাবে তাঁদের সার্চ কমিটিতে রাখলেন!
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ের সার্চ কমিটিতে যে পাঁচ জনের নাম প্রস্তাব করেছেন রাজ্যপাল, তাঁদের মধ্যে দু’জন বিভিন্ন সময়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন। এঁদের একজন, আইআইটি খড়্গপুরের অধিকর্তা ভিকে তিওয়ারি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আইআইটির ছাত্র ফয়জান আহমেদের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় তথ্য আড়াল করে র্যাগিংয়ের অভিযোগকে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি, তিনি করোনাকালে বিজেপির ছাত্র সংগঠন, এবিভিপির ফেসবুক পেজ থেকে অনলাইনে বক্তৃতাও করেছিলেন বলে অভিযোগ। এই তিওয়ারি আরও এক বার বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রামায়ণের পুষ্পক রথকে বিমানের আদি সংস্করণ বলে মন্তব্য করে।
ওই তালিকায় থাকা আরও এক জন বিতর্কিত সদস্য হলেন রাজস্থানের মহারাজা সূরজমল বৃজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রমেশ চন্দ্র। বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এই রমেশের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন এক অধ্যাপিকা। তখন অবশ্য তিনি ছিলেন, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সার্চ কমিটিতে এঁদের নিয়োগ নিয়েই তাই প্রশ্ন তুলেছে এডুকেশনিস্ট ফোরাম।
উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুসারে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ের জন্য প্রস্তাবিত সার্চ কমিটির পাঁচ সদস্যের নাম পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই তালিকা নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তার কারণ উপাচার্য বাছাইয়ের জন্য যে পাঁচ সদস্যকে বাছাই করেছেন রাজ্যপাল, তাঁদের মধ্যে চার জনই ভিন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কেবলমাত্র এক জন খড়্গপুর আইআইটির প্রধান। যে সংস্থার উপর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নয়, কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ। রবিবারের বিবৃতিতে এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এডুকেশনিস্ট ফোরাম। তারা জানতে চেয়েছে, রাজ্যের কোনও শিক্ষাবিদকে কি সার্চ কমিটিতে রাখার যোগ্য বলে মনে হয়নি রাজ্যপালের? এটা তো বাংলার শিক্ষার ঐতিহ্যের অবমাননা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy