প্রতীকী ছবি। —ফাইল চিত্র
হাওড়ায় করোনার প্রকোপ ফের বাড়তে থাকায় এ বার ‘কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং’ শুরু করছে হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে হাওড়া পুরসভাও চালু করছে বিশেষ কোভিড কন্ট্রোল রুম। যে সব এলাকায় করোনার প্রকোপ বাড়ছে সেই সব এলাকায় জীবাণুনাশের কাজও শুরু হচ্ছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, করোনা এখনই শহরে মারাত্মক ভাবে না বাড়লেও, সংক্রমণের হার গত কয়েক মাসের তুলনায় ঊর্ধ্বমুখী। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই আগের মতই কোয়রান্টিন থেকে শুরু করে সমস্ত রকম সাবধানতা অবলম্বন করা হবে।
মাসখানেক আগেও হাওড়ায় করোনা পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুলেটিন থেকে জানা যাচ্ছিল। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছিল, করোনায় দৈনিক সংক্রমণের হাত তিন থেকে সাতের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। এমনকি, প্রতিদিন যে ৯০০-১২০০ জনের করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল, তার অধিকাংশ রিপোর্টই নেগেটিভ আসছিল।
সম্প্রতি রাজ্যের সর্বত্রই ফের বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। পুজোর মরসুম শেষ হওয়ার পরে প্রায় তিন মাস সংক্রমণের হার নিম্নমুখী ছিল। এখন তা ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করায় উদ্বেগ বেড়েছে প্রশাসনের অন্দরে। এই পরিস্থিতিতে হাওড়ায় করোনা পর্বের শুরুর দিকে যে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে বেশ কিছু ব্যবস্থা ফের কার্যকর করতে চলেছে জেলা প্রশাসন ও পুরসভা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত কেউ গত কয়েক দিনে কার কার সংস্পর্শে এসেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে কোয়রান্টিন করার প্রক্রিয়া ফের শুরু করা হচ্ছে। চিকিৎসার পরিভাষায় এই কাজকে বলা হয় ‘কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং’। এই কাজ আজ, সোমবার থেকেই পুরোদমে চালু করা হবে বলে জানা গিয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, এর পাশাপাশি হাওড়া পুরসভার করোনা সংক্রান্ত ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম ফের চালু করা হচ্ছে। এখান থেকে করোনা সংক্রান্ত পরামর্শের পাশাপাশি কোনও বাড়িতে কেউ আক্রান্ত হলে সেই খবর দেওয়া, এলাকায় জীবাণুনাশের কাজ করার আবেদন জানানো যাবে।
রবিবার হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘গত বছর করোনা পর্বের শুরুর সময় থেকে যে সব কাজ আমরা করতাম, সেগুলি ফের চালু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সব চেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ‘কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং’-এ। কেউ নতুন করে আক্রান্ত হলে তাঁর সংস্পর্শে আসা লোকজনকেও ১৪ দিন কোয়রান্টিনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হবে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস এই প্রক্রিয়া একেবারে বন্ধ রেখেছিল স্বাস্থ্য দফতর। কারণ হাওড়ায় করোনার দৈনিক সংক্রমণ একেবারেই কমে গিয়েছিল। আক্রান্তেরা বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়ে যাচ্ছিলেন। জেলার যে আটটি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালের তকমা দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে পাঁচটি হাসপাতাল থেকে করোনার শয্যা তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে দেখা যাচ্ছে, করোনার দৈনিক সংক্রমণ কলকাতা এবং উত্তর ২৪ পরগনার মতো হাওড়াতেও বাড়তে বাড়তে ৩০-এর কাছাকাছি ঘোরাফেরা করছে। রাজ্য সরকারের প্রকাশিত বুলেটিন থেকে জানা যাচ্ছে, ১৩ মার্চ হাওড়ায় নতুন সংক্রমণ ছিল ২৩ জনের। ১২ মার্চ সংখ্যাটা ছিল ২৬। তার আগের সপ্তাহে রোজ সংক্রমণের সংখ্যা ২০-৩০ এর মধ্যেই ছিল। এই পরিসংখ্যানই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রশাসনের।
এ দিন হাওড়া পুরসভার কমিশনার অভিষেক তিওয়ারি বলেন, ‘‘আমরা ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম চালু করছি। এলাকা জীবাণুনাশ-সহ অন্যান্য প্রয়োজনের ক্ষেত্রে আমাদের যেমন নির্দেশ দেবে স্বাস্থ্য দফতর, সেই মতো কাজ হবে।’’
গত বছর এই সময় থেকেই ভারতে করোনা বাড়তে থাকে। দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা করতে হয়। ফের নতুন করে সংক্রমণ ফিরে আসার ইঙ্গিত মেলায় প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও উদ্বেগ বাড়ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy