মালদহে ৯টি আসন দাবি কংগ্রেসের। ফাইল চিত্র
বাম এবং কংগ্রেসের জোট নিয়ে কলকাতায় আলোচনার বল গড়াতেই, নিজেদের গড় মালদহে ৯টি আসনের দাবি তুললেন জেলার কংগ্রেস নেতারা। ভাগে তার কম হলে মানা সম্ভব হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরী। তবে কংগ্রেসের সমীকরণ ধরে এগোলে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি-র দাবিকে উপেক্ষা করতে হবে সিপিএমকে। তাই জোটের অঙ্ক মেলাতে আপাতত ‘ধীরে চলো’ নীতিই অবলম্বন করছে ফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএম।
রবিবার বামেদের সঙ্গে বৈঠকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ১৩০ আসনে লড়ার দাবি জানিয়েছিল কংগ্রেস। কংগ্রেসের ১৩০ আসনের তালিকায় মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার বেশিরভাগ আসন রয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর সুরে সুর মিলিয়ে সোমবার মালদহের ১২টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৯টি দাবি করে বসেছেন ঈশা। তিনি তুলে ধরছেন ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আসন বণ্টনের ফর্মুলাকে।
মালদহের জোট রাজনীতির অতীত বলছে, ২০১৬ সালে জেলার ১২টি কেন্দ্রের মধ্যে সিপিএম কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে লড়াই করে জিতেছিল হবিবপুর ও গাজোল বিধানসভায়। ইংলিশবাজার কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থীকে যৌথভাবে সমর্থন করে জিতিয়ে এনেছিল কংগ্রেস ও সিপিএম। বাকি ৯টি বিধানসভা আসনে একা লড়ে কংগ্রেস। তার মধ্যে অবশ্য মালতীপুর এবং হরিশ্চন্দ্রপুর কেন্দ্রে যথাক্রমে বাম শরিক আরএসপি ও ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ লড়াই হয়েছিল কংগ্রেসের। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ওই দুই আসনেই অবশ্য হেরে যায় বাম শরিক দলগুলি। বাকি ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রেরও ৬টি জিতেছিল কংগ্রেস। বৈষ্ণবনগর কেন্দ্রে অবশ্য কংগ্রেস হেরে গিয়েছিল বিজেপি’র কাছে। এই ‘সাফল্য’কে মাথায় রেখেই ৯টি আসনের দাবি তুলেছেন ঈশা।
ঈশা’র মতে, ‘‘২০১৬ সালের ফলাফল থেকেই স্পষ্ট মালদহের মানুষ কংগ্রেসের ওপরেই মূলতঃ আস্থা রাখেন। আসন বণ্টনের ফর্মুলা নিয়ে দুই পক্ষের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব নিশ্চয়ই আলোচনা করবেন। কিন্তু জেলা কংগ্রেসের মতামতকেও নিশ্চয়ই গুরুত্ব দেওয়া হবে। মতামত চাইলে আমরা স্পষ্ট করে জানাব, ৯টি-র কম আসনে লড়াই করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’’ এই সূত্রে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরে ঈশার দাবি, ‘‘মালদহে বামেদের থেকে কংগ্রেস অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে যুক্তিসঙ্গতভাবেই আমাদের প্রার্থী থাকা দরকার।’’
আবার নিজেদের দাবি থেকে এক চুলও সরতে নারাজ ফরওয়ার্ড ব্লক এবং আরএসপি। ফরওয়ার্ড ব্লকের মালদহ জেলা সম্পাদক শ্রীমন্ত মিত্রের বক্তব্য, ‘‘গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য কংগ্রেস নেতৃত্ব প্রকাশ্যে দাবি করেছিল তাঁদের সঙ্গে জোট হয়েছে সিপিএমের। এতে অনেক সিপিএম কর্মী সমর্থকও ভুল বুঝেছিলেন। বারংবার সিপিএম নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছিলাম সেই ভুল ভাঙাতে। কিন্তু তাতে তাঁরা কান দেননি। আমরা অল্প ভোটে কংগ্রেসের কাছে হেরে যাই। এবার হরিশ্চন্দ্রপুর না হলে অন্য যে কোনও একটি আসন আমাদের দিতে হবে। এই দাবি না মানলে এককভাবে আমরা বেশ কয়েকটি আসনে লড়ে যাব।’’আরএসপি-র জেলা সম্পাদক সর্বানন্দ পাণ্ডেরও বক্তব্য, ‘‘হয় মালতীপুর নয়তো রতুয়া বা বৈষ্ণবনগরে আমাদের লড়াই করতে দিতে হবে।’’
এমন পরিস্থিতিতে মেপে পা ফেলতে চায় বামেদের বড় শরিক সিপিএম। সিপিএমের মালদহ জেলা সম্পাদক তথা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অম্বর মিত্র বলেন, ‘‘মাথায় রাখতে হবে, ২০১৬-র তুলনায় ২০২১ নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিত ভিন্ন। তাই পুরনো দিনের কথা না ভেবে নতুন করে ভাবনাচিন্তা করাটাই জরুরি। আসন বণ্টন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন দুই তরফের শীর্ষ নেতৃত্ব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy