বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র
রাজ্যসভার পঞ্চম আসনে জোট-প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে ঘর সামলানোর দিকেই এখন বেশি নজর দিচ্ছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব। দু’দলের যৌথ প্রার্থী হিসেবে এ বার রাজ্যসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিকাশবাবুর নাম ঘোষণা করেছেন। তার সঙ্গে সঙ্গেই ঘর গুছোনোর কাজে নেমে পড়েছে জোট শিবির।
বাংলা থেকে শূন্য হওয়া পাঁচটির আসনের মধ্যে চারটিতে এখনও পর্যন্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে তৃণমূল। বিরোধী বাম ও কংগ্রেসের প্রার্থী থাকছে একটি আসনে। তৃণমূল পঞ্চম আসনে প্রার্থী দিলে তবে ভোটাভুটির প্রয়োজন হবে। নিজেদের চার প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করার পরে শুধু হাতে থাকা অতিরিক্ত ভোটের জোরে পঞ্চম আসন বার করা শাসক দলের পক্ষে কঠিন। অন্তত অঙ্কের হিসেব তা-ই বলছে। সে ক্ষেত্রে বাম ও কংগ্রেস শিবির থেকে ভোট ভাঙাতে হবে শাসক দলকে। যে ঘটনা ঘটেছিল ২০১৪ সালের রাজ্যসভা ভোটে। সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখেই এ বার বিধায়কদের নিয়ে সতর্ক থাকছেন বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আসন সমঝোতা করে ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে লড়েছিল বাম ও কংগ্রেস। বিধানসভার কিছু উপনির্বাচনেও জোট বেঁধে লড়াই হয়েছে। কিন্তু রাজ্যসভা বা সংসদের কোনও নির্বাচনের জন্য দু’পক্ষের জোট এই প্রথম। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে ফের কথা বলে ইয়েচুরি সোমবার বিকাশবাবুর নাম চূড়ান্ত করেন। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের সবুজ সঙ্কেতের কথা সোমবার সন্ধ্যাতেই সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়ে দেন ইয়েচুরি। বাংলার ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা গৌরব গগৈ বাম প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানান।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে এ দিন ছুটির মধ্যেও বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের দফতরে আলোচনায় বসেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, বিরোধী দল কংগ্রেসের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী, প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অমিতাভ চক্রবর্তীরা। ঠিক হয়েছে, বিকাশবাবুর প্রার্থী-পদের প্রস্তাবক হিসেবে মান্নান, সুজনবাবু, মনোজবাবুরা যৌথ ভাবে সই করবেন। জোট হওয়ার অনেক আগে থেকেই আইনজীবী বিকাশবাবুর সঙ্গে জোট বেঁধে সারদা-সহ একাধিক মামলায় কংগ্রেস নেতা মান্নান তৃণমূল শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন। মান্নান এ দিন বলেন, ‘‘তৃণমূলে যাওয়া বিধায়কদের বিরুদ্ধে স্পিকারের কাছে আমাদের অভিযোগের জবাবে তাঁরা বারবার লিখিত ভাবেও দাবি করেছেন, তাঁরা দল ছাড়েননি। যদি তাঁরা দলেই থেকে থাকেন, তা হলে আশা করব, নীতি ও আদর্শ মেনে আমাদের প্রার্থীকেই তাঁরা এখন সমর্থন করবেন।’’
ভোট হলে রাজ্যসভার এক এক জন প্রার্থীর জন্য প্রয়োজন ৪৯টি করে ভোট। পরিষদীয় তথ্য অনুযায়ী, দলত্যাগীদের বাদ দিয়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের মিলিত বিধায়ক-সংখ্যা এখন ৫১। তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত বিধায়ক ২০৭ জন। শাসক দল পঞ্চম আসনে প্রার্থী দিলে চার প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করে যে অতিরিক্ত ভোট তাদের হাতে থাকবে, তা বাম ও কংগ্রেসের মিলিত ভোটের চেয়ে অনেকটাই কম। বাম ও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন, এমন বিধায়কের সংখ্যা ১৭। আবার অন্য দল ছেড়ে বিজেপির পতাকা হাতে নিয়েছেন ১০ বিধায়ক। এই সব দলত্যাগী তৃণমূলকে ভোট দিলেও তাদের পঞ্চম প্রার্থীর জয় নিশ্চিত— এমন কথা বলা যায় না। এই পরিস্থিতিতে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে চায় তৃণমূল শিবির। শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘পরিস্থিতি বিচার করে দলনেত্রী উপযুক্ত সময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy