ফলে জটিলতা-বিভ্রান্তির কোনও সুরাহা হয়নি। এই ছুটির মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা থাকায় কী ভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পরীক্ষার দিনগুলিতে নজরদারির কাজ চালাবেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠছে।
প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ বলছে, ছুটি। আর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ বলছে, ছুটি নেওয়া যাবে না। রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরের অধীন দু’টি বিভাগের এমন পরস্পরবিরোধী অবস্থান এবং ছুটি ও পরীক্ষা নিয়ে দু’রকম বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষা শিবিরে ব্যাপক জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। স্বভাবতই শিক্ষককুল বিষম বিভ্রান্ত।
প্রতি বছরের মতো পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদ এ বারেও রমজানের জন্য ছুটি ঘোষণা করেছে। আজ, ১৮ এপ্রিল, সোমবার থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ওই ছুটি অংশত গ্রীষ্মাবকাশ এবং বাকিটা রমজানের ছুটি হিসেবে চিহ্নিত। কিন্তু রাজ্যের ৬১৪টি হাই মাদ্রাসার মধ্যে বেশ কয়েকটিতেই উচ্চ মাধ্যমিক পাঠ্যক্রম পড়ানো হয়। বিভিন্ন স্কুলের মতো সেই সব হাই মাদ্রাসাতেও এখন ‘হোম সেন্টারে’ অর্থাৎ নিজের নিজের মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে। অথচ মাদ্রাসা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী কয়েক দিন পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও ছুটি থাকার কথা। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়ে দিয়েছে, ওই সব দিনে পরীক্ষা হবেই।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র এবং বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের জন্য বেশ কয়েক দিন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বন্ধ ছিল। গত ১৬ এপ্রিল, শনিবার আবার শুরু হয়েছে সেই পরীক্ষা। ইতিমধ্যে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, খুব বিশেষ কারণ ছাড়া পরীক্ষার দিনগুলিতে কোনও শিক্ষক ছুটি নিতে পারবেন না। হাই মাদ্রাসের শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রমজানের ছুটির মধ্যে তাঁদের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নজরদারির কাজ করার কথা ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৬ এবং ২৭ এপ্রিল।
হাই মাদ্রাসার শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দু’টি বিভাগের দু’টি নোটিসে বিভ্রান্ত তাঁরা। মাদ্রাসা পর্ষদ ছুটি ঘোষণা করলেও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ ছুটি নেওয়া যাবে না বলে জানানোয় সব চেয়ে আতান্তরে পড়েছেন প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের অভিযোগ, শিক্ষকেরা তাঁদের প্রশ্ন করছেন, তাঁরা কোন বিজ্ঞপ্তি মানবেন? কেনই ছুটি পাবেন না তাঁরা?
হাওড়া জেলার খাজনাবাহালা হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘দীর্ঘস্থায়ী কোভিডের দরুন এমনিতেই কম ক্লাস হয়েছে। আমরা কোনও অগ্রিম বা পরে বাড়তি ছুটি দিচ্ছি না। তবে মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের উচিত ছিল, ওই দিনগুলিতে শিক্ষকদের ছুটি বাতিলের একটি নোটিস দিয়ে অন্য সময় বিকল্প ছুটির ব্যবস্থা করা।’’ ওই প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, পর্ষদ ও সংসদের দু’টি ভিন্ন নির্দেশিকায় অবাঞ্ছিত জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। দুই শিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই এই জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি আবু তাহের কামরুদ্দিনের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও জবাব দেননি। আর উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ জানিয়ে দিয়েছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা যথারীতি রুটিন মেনেই হবে।
ফলে জটিলতা-বিভ্রান্তির কোনও সুরাহা হয়নি। এই ছুটির মধ্যে উচ্চ মাধ্যমিকের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা থাকায় কী ভাবে শিক্ষক-শিক্ষিকারা পরীক্ষার দিনগুলিতে নজরদারির কাজ চালাবেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy