Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সর্বশিক্ষায় বরাদ্দ নিয়ে টানাপড়েন কেন্দ্র ও রাজ্যের

বিকাশ ভবনের বক্তব্য, শিক্ষার অধিকার আইন মেনে এ রাজ্যে নিযুক্ত প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন খাতে বকেয়া টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। তিন বছরে বেতন খাতেই পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩৩৪০ কোটি টাকা। 

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:০৫
Share: Save:

কেন্দ্রের প্রকল্প, অথচ কেন্দ্রীয় সরকারই তার টাকা জোগাচ্ছে না— অভিযোগ রাজ্যের শিক্ষা দফতরের।

বিকাশ ভবনের বক্তব্য, শিক্ষার অধিকার আইন মেনে এ রাজ্যে নিযুক্ত প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন খাতে বকেয়া টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। তিন বছরে বেতন খাতেই পাওনা দাঁড়িয়েছে ৩৩৪০ কোটি টাকা।

কেন্দ্রের পাল্টা বক্তব্য, শিক্ষা খাতে কোন রাজ্য কত টাকা পাবে, তা বছরের গোড়ায় কেন্দ্র ও রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে চূড়ান্ত হয়। এর বাইরে টাকার প্রয়োজন হলে রাজ্যকেই জোগাড় করতে হবে। শিক্ষার অধিকার আইনে সে কথা বলা আছে। যদিও রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আমাদের বিচারে আমাদের দাবি নায্য। তাই এই বঞ্চনা নিয়ে আমরা সরব হবই।’’

আরও পড়ুন: সংবিধান দিবস পালন নিয়েও বিরোধের ইঙ্গিত

শিক্ষা দফতরের দাবি, ২০০৯ সালের শিক্ষার অধিকার আইনের শর্ত অনুযায়ী রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত ১:৩০ এবং ১:৩৫ থাকা বাধ্যতামূলক। সেই শর্ত মানতে গিয়ে ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত সর্বশিক্ষা অভিযানের অধীনে সরকার বাড়তি শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করেছে। সর্বশিক্ষা অভিযান প্রকল্পের ৬০ ভাগ টাকা দেয় রাজ্য। বাকিটা কেন্দ্র। কিন্তু বাড়তি শিক্ষক নিয়োগের পর বেতনের অংশ রাজ্যকে দেয়নি কেন্দ্র। তার পরিমাণ ৩৩৪০ কোটি টাকা। বিকাশ ভবনের এক কর্তার কথায়, ‘‘বেশ কয়েক বার এই দাবি জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে টাকা দিতে অনুরোধ করেছেন। তার পরেও দিল্লি নীরব।’’

অন্য দিকে, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এক কর্তার দাবি, ‘‘রাজ্যের পক্ষ থেকেই যথাযথ ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এর জন্য বাড়তি অর্থ দেওয়ার বিষয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।’’ কেন্দ্রের যুক্তি, সর্বশিক্ষা অভিযানের বাজেট বরাদ্দে কেন্দ্রীয় অংশ হিসেব কষেই রাজ্যকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০১৫-১৬ সালে ৮৪৬.৭৯ কোটি, ২০১৬-১৭ সালে ৮২১.৮৫ কোটি এবং ২০১৭-১৮ সালে ৮৯৬.৫৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে তিন বছরে রাজ্য পেয়েছে ২৫৬৫.২১ কোটি টাকা। এর বাইরে রাজ্যের কিছু প্রাপ্য নেই।

তা হলে আইন মেনে শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত কমিয়ে রাজ্য কি খেসারত দেবে? কেন্দ্র লিখিত ভাবে নবান্নকে জানিয়েছে, শিক্ষার অধিকার আইনের ৭(২) ধারায় বলা আছে, প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা খাতে বরাদ্দের মূলধনী ব্যয় এবং বছরকার (রেকারিং) খরচের হিসাব কষবে কেন্দ্র। সেই হিসেব মেনে কেন্দ্র তার দেয় টাকা রাজ্যকে দেবে। তার বাইরের খরচের দায়িত্ব রাজ্যকেই নিতে হবে।

শিক্ষা খাতে বাড়তি অর্থ চেয়ে সরব হয়েছে বিহার, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক বা ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলিও। কেন্দ্রের পাল্টা বক্তব্য, দিল্লির মুখাপেক্ষী হয়ে না থেকে রাজ্যগুলির উচিত নিজেদের বরাদ্দ বাড়ানো।

আর শিক্ষা দফতরের কর্তাদের একাংশ বলছেন, ‘‘রাজ্য বহু সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগ করার পরে তার দায় এখন নিতে চাইছে না কেন্দ্র। সেটা কেন্দ্রীয় বরাদ্দের অতিরিক্ত অর্থ বলে দেখাতে চাইছে। যা আমরা মানি না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Sarva Shiksha Abhiyan Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy