উত্তরকন্যায় চলছে বৈঠক।— নিজস্ব চিত্র।
নবান্নের পরে এ বার উত্তরকন্যা।
পাহাড় সমস্যা নিয়ে মঙ্গলবারেও কোনও রফা সূত্র মিলল না। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, এ দিনের বৈঠক ইতিবাচক। পাশাপাশি, পাহাড় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই সহমত হয়েছেন রাজ্য সরকার এবং মোর্চা নেতৃত্ব। এই লক্ষ্যে আগামী ১৬ অক্টোবর নবান্নে ফের বৈঠকে বসবে দু’পক্ষ।
এ দিন শিলিগুড়ির উত্তরকন্যার বৈঠকে রাজ্য সরকারের মূল উদ্দেশ্য ছিল বন্ধ তুলে পাহাড়ে শান্তি ফেরানো। অন্য দিকে, মোর্চা নেতৃত্বের লক্ষ্য ছিল, যে কোনও প্রকারে গোর্খাল্যান্ডের দাবি আদায়।
সর্বদল বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোর্খাল্যান্ড নিয়ে মোর্চার দাবি খারিজ করে দেননি বলেই খবর। তবে বিষয়টি নিয়ে এ দিন আলোচনাতেও যেতে চাননি। এ প্রসঙ্গে তাঁর স্পষ্ট মন্তব্য: ‘‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনা দরকার। জিটিএ থাকলে ভাল হত। সংবিধান দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে হবে।’’ ১৬ অক্টোবর পরবর্তী আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও এখনই বন্ধ তোলার বিষয়ে সরাসরি কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি মোর্চা প্রতিনিধিরা। বিষয়টি নিয়ে দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে বলে দায় সেরেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ধর্মগুরুর নির্দেশে বন্ধে অনড় গুরুঙ্গ
উত্তরকন্যা-য় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ১৭ দফা দাবি পেশ করেন বিনয় তামাঙ্গরা। এর মধ্যে যেমন রয়েছে লাগাতার হিংসায় নিহত-আহতদের জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি, তেমনই রয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলির উপর থেকে সম্প্রচার বন্ধের নির্দেশ তোলার কথাও। মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য নিহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিয়েছেন বলে খবর।
বৈঠকে ঢুকছেন মোর্চা বিধায়করা। (ডান দিকে) ডিকো, (বাঁ দিকে) অমর সিংহ রাই ও সরিতা রাই।—নিজস্ব চিত্র।
বৈঠকে পাহাড়ে শান্তি ফেরানোর পাশাপাশি সরকারি কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার আবেদনও করেন মুখ্যমন্ত্রী। পুজোর আগে কাজে যোগ দিলে কর্মীদের এক মাসের অগ্রিম বেতন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন মমতা। এ দিন বৈঠকে বিনয় তামাঙ্গরা দাবি জানান, যেন কোনও ভাবেই মোর্চা নেতা-সমর্থকেরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার না হন, সে বিষয়টা রাজ্য সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কর ছাড়ের দাবিও জানান তাঁরা। পাশাপাশি, পাহাড়ে তালিবানি শাসন চলবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈঠকে যোগ দিতে আসা মোর্চার ‘নতুন মুখ’ বিনয় তামাঙ্গ। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে পাহাড়ের স্কুলগুলিতে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। তাই প্রয়োজনে শীতকালীন ছুটি বাতিল করে স্কুল চালানোর প্রস্তাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, পাহাড়ে নাশকতার ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: রাজ্যই ভরসা, বলছেন বিনয়
এ দিনের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি, এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) এবং এডিজি (সিআইডি)। ছিলেন দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও গৌতম দেবও। পাহাড়ের প্রতিনিধি হিসেবে হাজির বিনয় তামাঙ্গ, অনীত থাপা, আর বি ভুজেল ও তাঁদের সহযোগীরা। যোগ দেন হরকাবাহাদুর ছেত্রীর জন আন্দোলন পার্টি ও মন ঘিসিঙ্গের জিএনএলএফ-ও। মোর্চার তিন বিধায়ক এবং তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রীও বৈঠকে ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy