কোচবিহারর সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
কোচবিহারের সভা থেকেও বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পদ্ম শিবিরের নেতা-নেত্রীরা ‘বহিরাগত, চম্বলের গুন্ডা’ বলে মন্তব্য করেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপির চাকরির প্রতিশ্রুতিকে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘পুরো ভাঁওতাবাজি’। এই প্রসঙ্গে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদীর চাকরি ও ১৫ লাখের প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন মমতা। তোপ দেগেছেন এনআরসি-এনপিআর ইস্যুতেও।
আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্যে চাকরির প্রতিশ্রুতি কার্ড বিলি করছে বিজেপি। তা নিয়ে আগেও তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বুধবার কোচবিহার রাসমেলা ময়দানের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তীব্র কটাক্ষে বিঁধলেন পদ্ম শিবিরকে। তিনি বলেন, ‘‘এখন আবার ফর্ম বিলি করে বেড়াচ্ছে। মনে আছে? ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে কী বলেছিল? বলেছিল ২ কোটি মানুষকে চাকরি দেবে? ৬ বছর তো ক্ষমতায় আছে, ক’টা চাকরি দিয়েছে? বলেছিল প্রত্যেককে ১৫ লক্ষ টাকা দেবে। এক টাকাও পেয়েছেন? কোথায় গেল এখন? এ বারও তাই হবে। ভোটের পরে আর দেখা পাওয়া যাবে না কারও।’’
লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের ৮টির একটি আসনও পায়নি তৃণমূল। সেই আক্ষেপও এ দিন শোনা গিয়েছে মমতার গলায়। তিনি বলেন, ‘‘লোকসভায় আপনারা হয়তো আমাকে ভোট দেননি। আমরা ভাল ফল করতে পারিনি। তা নিয়ে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। কিন্তু বিধানসভা ভোটে আপনাদের কাছে একটা চাওয়া আছে। আপনারা শুধু পাশে থাকবেন।’’
বহিরাগত ইস্যুতে বিজেপিকে বরাবরই তোপ দেগে চলেছেন তৃণমূল নেতারা। বুধবার কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানের সভা থেকে সেই ইস্যুতে রীতিমতো খড়্গহস্ত হলেন দলনেত্রী। বিজেপির নেতাদের নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘ওরা বাইরে থেকে এসেছে। বহিরাগত গুন্ডা, চম্বলের ডাকাত। আপনাদের সব লুটে নিয়ে চলে যাবে। ভোটের পরে আর কাউকে দেখা যাবে না।’’
আরও পড়ুন: ওঁরা বহিরাগত, চম্বলের ডাকাত! কোচবিহারে বিজেপিকে তোপ মমতার
বিজেপির বিরুদ্ধে দল ভাঙানোর অভিযোগে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল ভাঙাতে তৃণমূলের নেতাদের ভয় দেখানো হচ্ছে অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘‘ওরা বলছে, কোথায় থাকবেন, জেলে না ঘরে? যাঁরা ভয় পাচ্ছেন, তাঁরা চলে যাচ্ছেন। কিন্তু আমি কাউকে ভয় পাই না।’’ সুব্রত বক্সীকে বিজেপির কোনও এক নেতা ফোন করেছিলেন বলে অভিযোগ তুলে মমতার প্রশ্ন, ‘‘কত বড় সাহস? আমার দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকে পর্যন্ত ফোন করে দিচ্ছে? কোনও লজ্জা পর্যন্ত নেই এঁদের।’’ সাধারণ মানুষকে উদ্দেশ্য করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে টাকা নিয়ে আসবে। ভুলেও ওই টাকা নেবেন না। ওই টাকায় ক’দিন চলবে? ভোটের পর কিন্তু আর কেউ টাকা নিয়ে আসবে না। আমিই থাকব। আমি সারাবছর থাকি, ভোটের পরেও থাকব।
আরও পড়ুন: পোস্টারে, ফেসবুকে শীল-সুনীল কি শুভেন্দু-পথের পথিক, দ্রুত বাড়ছে জল্পনা
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি থেকে হেলিকপ্টারে কোচবিহার বিমানবন্দরে নেমে দলের জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই দলের নেতাদের গোষ্ঠীকোন্দল রুখতে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। বুধবারের মঞ্চ থেকে ফের সেই বার্তা দিয়ছেন। জেলার নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে একজোট হয়ে কাজ করুন। ঐক্যবদ্ধ থাকুন। মনে রাখবেন, ঐক্যই আমাদের জেতাতে পারে।’’ বিজেপির বিরুদ্ধে মেরুকরণের অভিযোগ তুলে মমতা বলেন, ‘‘আমরা ভোটের জন্য ভাগাভাগি করি না। আমরা সবাইকে ভালবাসি’’কোচবিহারের এই সভার পর নিউ জলপাইগুড়িতে উত্তরকন্যার গেস্ট হাউসে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে কলকাতার বিমান ধরার কথা তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy