মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিশির অধিকারী।
ইয়াসে কেন বিপর্যস্ত হল দিঘা? এর পিছনে কি পরিকল্পনার গাফিলতি? এমন প্রশ্ন তোলাই শুধু নয়, গাফিলতি নিয়ে তদন্ত হওয়া দরকার বলেও মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে তিনি বলেন, ‘‘সৈকতের রাস্তায় পাথর ঠিক মতো লাগানো হয়নি। এটা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। ফাউন্ডেশনটাই ভুল হয়েছে।’’ ‘এটা দিঘার চিফ ইঞ্জিনিয়ারকে দায়িত্ব নিতে হবে’ বললেও মমতা কি আসলে অধিকারী পরিবারের দিকেই আঙুল তুললেন? এমন প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ, দীর্ঘদিন দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী। বুধবার মমতা তাঁর আগের সরকারের সেচ দফতরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। বলেন, ‘‘একটি ব্রিজ তৈরির কাজ ফেলে রাখে সেচ দফতর।’’ উল্লেখ্য দ্বিতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারে দীর্ঘ সময় সেচমন্ত্রী ছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারী। এই দু’জনই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন। রাজীব পরাজিত হলেও শুভেন্দু নন্দীগ্রামে জিতে এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তবে কি অধিকারী পরিবারের পাশাপাশি শুভেন্দু, রাজীবও মমতার নিশানায়?
বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগদানের পরে শিশিরের সঙ্গেও তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হয়। তখনই শিশিরকে সরিয়ে কাঁথিতে অধিকারী পরিবারের বিরোধী হিসেবে পরিচিত তরুণ জানাকে দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান করা হয়। নতুন সরকার গঠনের পরে তরুণকে ভাইস চেয়ারম্যান করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অধিকারী পরিবারের বিরোধী হিসেবে চেনা জ্যোতির্ময় করকে করা হয় পর্ষদের চেয়ারম্যান। সেই সঙ্গে ইয়াস বিপর্যয়ের পরে দিঘাকে ফের সাজাতে দায়িত্ব দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
বুধবার আলাপনকে পাশে নিয়েই ইয়াস পরবর্তী বিপর্যয় সামলানো পুনর্গঠনের পরিকল্পনা করতে আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মমতা। পরে সাংবাদিক বৈঠকও করেন। সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘টাকা ঠিক মতো ব্যবহার করা উচিত। আমাদের টাকা অপচয় হচ্ছে। প্রতি বছর বাঁধ সারালেও কেন ভাঙছে? লাখ লাখ টাকা খরচ করে জলে যাচ্ছে। প্রতি বছরই বাঁধ তৈরির টাকা জলে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা আনা উচিত।’’ মমতা আলাদা করে উল্লেখ না করলেও এই প্রশ্ন সেচ দফতরের দিকেই ছিল। কারণ, বাঁধ নির্মাণ থেকে সারাই— সব কাজই হয় সেচ দফতরের মাধ্যমে। দিঘার বিপর্যয় প্রসঙ্গেও মমতা সেচ দফতের দিকে আঙুল তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘বছরের পর বছর ব্রিজ তৈরির কাজ আটকে কেন? সেচ দফতর, মৎস্যজীবীদের জন্য পরিকল্পনা দরকার।’’
দফতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুললেও মমতা বুধবার বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি অফিসাররা কেউ খারাপ নন।’’ একই সঙ্গে দিঘার উন্নয়ন পরিকল্পনা সম্পর্কে মমতা জানান, মেরিন ড্রাইভের মতো ৭ কিলোমিটার রাস্তা হবে সৈকতে। হকারদের দোকানগুলি আবাসন দফতর বা দিঘা উন্নয়ন পর্ষদ থেকে তৈরি করে দিতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সমুদ্র থেকে একটা নির্দিষ্ট জায়গা বাদ দিয়ে হোটেল তৈরি করতে হবে।’’
মমতার বক্তব্যে সেচ দফতরের কথা থাকলেও কারও নাম উল্লেখ করেননি। তবে এটা ঠিক যে, ২০১১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যের সেচমন্ত্রী ছিলেন রাজীব। শুভেন্দু ওই দফতরের মন্ত্রী হন ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। মাঝের সময়টা ওই দফতর ছিল বর্তমান সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর হাতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy