মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা যায়, সে জন্য ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)’-তে চিঠি লিখবে রাজ্য সরকার। এনএমসি আপত্তি করলে ইউক্রেন ফেরত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের নিয়ে দিল্লি গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে মাঝপথে পড়া থামিয়ে দেশে ফিরে আসতে হয়েছে বহু পড়ুয়াকে। নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রবল উৎকণ্ঠায় তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন, বাড়তি টাকা খরচ না করে এ রাজ্যে থেকেই পড়া শেষ করতে পারেন পড়ুয়ারা। সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেবে সরকার। তার জন্য মিলবে ভাতা। মমতার আশ্বাস, কারও যাতে বছর নষ্ট না হয়, তা দেখা হবে।
বুধবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মোট ৩৯১ জন এ রাজ্যের পড়ুয়া ইউক্রেনে পড়াশোনা মাঝপথে থামিয়ে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দেশে ফিরে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, একে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কথাও ঘোষণা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইউক্রেনে যে পড়ুয়ারা মেডিক্যালের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পড়া মাঝপথে থামিয়ে বাড়ি ফিরেছেন তাঁদের জন্য অফলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারে সরকার। প্রথম বর্ষের কেউ নতুন করে শুরু করতে চাইলে বিশেষ ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
ইউক্রেনে পাঠরত পড়ুয়াদের যাতে এ রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজেই ভর্তি করিয়ে নেওয়া যায় তার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা যায়, সে জন্য ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন (এনএমসি)’-এ চিঠি লিখবে রাজ্য সরকার। এনএমসি এ বিষয়ে আপত্তি করলে ইউক্রেন ফেরত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের নিয়ে দিল্লি গিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, মেডিক্যালের পঞ্চম ও ষষ্ঠ বর্ষের পড়ুয়াদের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে মিলবে সরকারি ভাতা। ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের এ রাজ্যে পড়াশোনা করতে যাতে ফের টাকা খরচ করতে না হয়, সে প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, মেডিক্যাল কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে পড়ুয়াদের ভর্তি করার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি বলেন, ‘‘বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এক তৃতীয়াংশ কোটা থাকে রাজ্যের হাতে। সেই কোটায় ইউক্রেন ফেরতদের ভর্তি করা হবে। তবে এ জন্য পড়ুয়াদের বাড়তি কোনও টাকা দিতে হবে না। যে অতিরিক্ত খরচ হবে, তা রাজ্য সরকার ও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ অর্ধেক অর্ধেক করে দিয়ে দেবে। সে ক্ষেত্রে সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়ার খরচেই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে পাঠ শেষ করতে পারবেন পড়ুয়ারা।’’
এ দিন ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়াদের পাশাপাশি হাজির ছিলেন বিভিন্ন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পরিচালকরাও। সবার উপস্থিতিতেই মুখ্যমন্ত্রী পড়ুয়াদের জন্য একগুচ্ছ পদক্ষেপের ঘোষণা করেন। ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য কিছু উপহার এনেছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে তা প্রেক্ষাগৃহের বাইরেই আটকে দেওয়া হয়। এ কথা জানার পর মুখ্যমন্ত্রী নিরাপত্তারক্ষীদের উপহার ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘‘আমার জন্য তোমরা যেটা এনেছ, তা আমি রেখে দেব। যে দিন তোমাদের কাজ হয়ে যাবে, সে দিন আমি ওই উপহার গ্রহণ করব।’’
ইউক্রেনে ইঞ্জিনিয়ারিংও পড়তে গিয়েছিলেন অনেকে। তাঁরাও ফিরে এসেছেন। তাঁদের রাজ্যের কোনও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার ব্যবস্থা করে দেবে সরকার। তিন জন কাজ খুঁজতে গিয়েছিলেন ইউক্রেনে। তাঁদেরও কাজের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy